somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কলেজ জীবন যেরকম আশা করেছিলাম, সেটা ঠিক সে রকম হল না ! [ব্যাকবেঞ্চার vs ফ্রন্টবেঞ্চার: অধ্যায়-২]

১৮ ই মে, ২০১৪ সকাল ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্ব

হাহ~ বড় করে এক দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।

কি করা আছে আমার দীর্ঘ শ্বাস ফেলা ছাড়া। গালে হাত দিয়ে যথাসম্ভব ক্লাসে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি। বেশীক্ষন মনোযোগ দিতে পারলাম না,মাথা বন করে ঘুরে উঠল। স্যার হোয়াইট বোর্ডের উপর কি যে হাবিজাবি জিনিষ বোঝাচ্ছেন। আমার নজর বোর্ডের উপর নয়, এর উপরে ঘড়ির দিকে। আর দশটা মিনিট, তারপর ঘন্টার আওয়াজ, আর আমি স্বাধীন!

কি এমন হয়েছে আমি নিজেকে বন্দীর মত ভাবছি। আছে, কারন আছে। তিনদিন হয়ে গেছে। এই তিনদিন আমি কলেজের সব ক্লাস করেছি, করেছি মানে করতে বাধ্য হয়েছি। লায়লা আপুর হাতে প্যাদানি খাবার পর অন্তত কিছুদিন আমাকে ঠান্ডা থাকতে হবে যাতে সে আপির কাছে কিছু না বলে।

তাই আমি এখন বন্দী, মানে কলেজে বন্দী। আর ক্যাপ্টেন নানীর ব্যাপারটাও দেখতে হবে, মেয়েটা বেশী স্ট্রিক্ট। নিয়ম-কানুনের একটু এদিক-ওদিক পা দেয় না। এই পর্যন্ত তাকে আমি কখনও সেকেন্ড বেঞ্চে বসতে দেখি নাই, সবসময় প্রথম বেঞ্চে বসে সে । আমার ধারনা ক্লাসের কারো সাথে তার সম্পর্কটা বেশী ভাল নয়। অনেক মেয়েই দেখি তাকে এড়িয়ে চলে, একমাত্র নুশরাত বাদে। সে দেখি সবসময় ক্যাপ্টেন নানীর পাশে বসে তার সাথে কথা বলে। হুম আরেকজন আছে সে নির্জন, তার জমজ ভাই। নির্জনকে দেখলে আমারা সাইবর্গের কথা মনে পড়ে যায়। চেহারায় কোন ভাজ পড়ে না তার, মানে তাকে কখনও হাসতে দেখি নাই কান্না করাতো দুরের কথা। তবে সে যখন ক্যাপ্টেন নানীর সাথে কথা বলে তখন তার চেহারার মধ্যে একধরনের স্নেহ ফুটে উঠে, যেমন ফুটে উঠে যখন কোন বড়ভাই তার ছোটবোনের দিকে তাকায়।

হুর্, এখন কি সব চিন্তা করছি আমি। ঘড়ির দিকে তাকালাম আমি।

হাইইইই~ মাত্র পাচ মিনিট গেছে, আরো পাচ মিনিট বাকী আছে। সময় শেষ হয় না কেন। জীবনে মনে হয় না কখনও কাসার ঘন্টার আওয়াজ শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। কিছু করার নেই, একমনে আমি বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছি, কিছু না চিন্তা করার চেষ্টা করছি।

হঠাৎ ঢং ঢং আওয়াজে হুশ ফিরল।

আহ শান্তি! আজকে বৃহস্পতিবার তাই চারটা পিরিয়ড করার পর ছুটি। ব্যাগ-ট্যাগ গুছিয়ে বের হতে যাব। তখনই পিঠের টোকা পড়ল, ঘুরে দেখলাম দেখলাম নুশরাত দাঁড়িয়ে আছে। ইদানিং আমার পিঠে টোকা মারার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে, এটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামালাম না। আমার কথা কিল না পড়লেই হচ্ছে।

“কি ব্যাপার।”

“সুমনা বলেছে শনিবার যাতে ল্যাব ক্লাস কর।”

সরাসরি আসল প্রসঙ্গ। হাই-হ্যালো এসবের মধ্যে গেল না। ভাল জিনিষ, কিন্তু খুশি হতে পারলাম না।

“হুম, তাতে তার কি, আমি ক্লাস করি কি আর নাই করি। আর তার দূত হতে বলেছে কে তোমাকে ?”

“আমিও সেটা বলেছিলাম, কিন্তু সুমনা বলেছে, তোমার সাথে কথা বলার চেয়ে একটা বাদরের কথা বলা অনেক বেটার।”

ওরেএএএ~ ক্যাপ্টেন নানীরে !

“আমার কাছে কিন্তু ভাল লাগছে ব্যাপরটা।” নুশরাত বলল।

“কোন ব্যাপারটা ?”

“তোমাদের দুজনের লাগালাগি ব্যাপারটা, পুরোই তেল আর বেগুন।”

“ব্যাপারটা নিয়ে না ঘামালেই খুশি হব।” এই বলে হাটা শুরু করলাম।

“আরে আগে এটাতো শুনে যাও, আমিও তোমাদের গ্রুপে।”

কথাটা আমার কেন যেন মধুবর্ষন করল। যাক ক্ষতে একটা মলমের প্রলেপ পড়ল। কিভাবে যে আমি ক্যাপ্টেন নানীর সাথে ল্যাব ক্লাস করব সেটা ভাবতেই আমার মথা নষ্ট হতে যাচ্ছিল। যাক একটা সান্তনা পেলাম।

বের হবার সময় দেখতে পেলাম সুমনা মানে ক্যাপ্টেন নানীর ,দাঁড়িয়ে আছে। নুশরাত ওর কাছে যেতেই হাটা শুরু করল সে। হঠাৎ কোথা থেকে নির্জন হাজির হল ওদের পিছন পিছন। এতক্ষন ছিল কই? দেখলাম না তো। একেবারে শুন্যে থেকে হাজির হল।আসলেই ছেলেটা সাইবর্গ নাকি জ্বীন। ভাবতেই শরীর কেপে উঠল। আর বুঝিনা কেন মেয়েরা এই ছেলের পিছনে ঘুরে, মেয়েদের রুচি কি দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে নাকি। এই রোবট টাইপের ছেলের প্রতি আগ্রহ দেখায়। তাহলে আমিও একদিন সাইবর্গের মত আচরন করা শুরু করব।

হায় হায় , কলেজ শুরু হবার আগে আমি এইসব কি চিন্তা করছি। দূরে দূরে যাক এইসব চিন্তাভাবনা। আমার টার্গেট কলেজের ক্লাস মিস দেয়া তারপর পুরো কলেজ পালানোর ব্যাবস্থা করা।

আমার সামনে দিয়ে দুইজন ছেলে দেখলাম কোথায় প্রাইভেট পড়বে সেটা নিয়ে আলোচনা করছে। আরে আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম আমার প্রাইভেট কোচিং এর কথা। বিশেষ করে ম্যাথ আর রসায়ন নিয়ে। দেখি এই কয়েক দিনের মধ্যে ম্যানেজ করতে হবে। বিশেষ করে রসায়নে আমিতো একেবারে গোল্লা মার্কা ছাত্র।

যাকগে এসব নিয়ে চিন্তা না করাই ভাল।

সজলের খোজে আমি এদিক-ওদিক তাকালাম, পেলাম না। । সকালেও তো তার চেহারা দেখলাম। আমি যখন থেকে সব ক্লাস নিয়মিত করা শুরু করেছি, তখন থেকেই সজলের দেখা নাই। আমি আগে যখন ক্লাস মিস দিতাম সে তখন সব ক্লাস করত এখন সে উধাও! নাই!

কি আর করা। আমি কলেজের গেটের বাইরে আসার মনে হল বাসায় আজকে কোনো বাজার নাই। হুম, বাজার করা দরকার। আপি চাকরির কারনে সময় পায়না বাজার –সদাই করার। মাত্র তো বছর খানেক হল সে চাকরিতে জয়েন করেছে। আগে পার্ট-টাইম ছিল এখন ফুল টাইম হয়েছে। আমাকে অবশ্য রান্না-বান্নার জায়গাটাও দেখতে হয় । অবাক হবার কিছু নেই,এখানে রান্না-বান্না আমাকেই করতে হয়, তা না হলে না খেয়ে মরতে হবে আমাকে। আপির রান্নার হাত খুবই বাজে। আমাদের ফ্যামিলির সবার রান্নার হাত ভাল এমনকি আমার বাবারও। মাঝখান দিয়ে আপির খারাপ অবস্থা। আপি এমনি এক মানুষ যে কিনা পানি গরম করতে গিয়েও সেটাতে আগুন ধরিয়ে ফেলে। এইসব কথা উল্লেখ করলে আপির মুখ কালো হয়ে যায় এবং এই বলে যে, ফ্যামিলিতে দুই একজন এক্সেপশনাল থাকতে হয়।

বাজারের সামনে আসতেই আমার মনে একটা চনমনে ভাব এসে গেল। অনেকেই বাজার করাকে বিরক্তিকর মনে করে আবার অনেকেই ভালবাসে। যারা ভালবাসে তাদের ভালবাসার কারন ওখান হতে কিছু পরিমান টাকা মারা যায়। যদিও আমার ভালবাসা অন্যখানে, দোকানদারে সাথে দর কষাকষি তারপর ভাল সবজি খুজে বের করা এই সব আরকি। তাই আমি খুশি মনে বাজারে ঢুকলাম।

হুফ~ দরজার সামনে এসে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। ইদানিং গরম খুব বেশী পড়েছে। শার্টের হাতা দিতে মুখের ঘাম পরিষ্কার করলাম। দরজা খুলতে যাব তখনই অপ্রত্যাশিত ব্যাপার দেখলাম।

“ক্যাপ্টেন নানী!” আমি মুখ ফসকে বলে ফেললাম।

সে নিচে নামছিল। আমাকে দেখে সে নিজেও থতমত খেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমার মুখ থেকে ওই শব্দ শোনার পর তার মুখ লাল হয়ে গেল, অবশ্যই রাগে।

আশ্চর্যজনক ভাবে সে চেচিয়ে না উঠে বিড়ালের মত হিস হিস করে বলে উঠল, “ঐ নাম মুখে আনলে চাপা ঠিকই একদিন ভেঙ্গে দিব আমি।”

মেয়েটার দেখছি পুরো বিড়ালের মত স্বভাব। যেভাবে হিস হিস করল সেটা একমাত্র বিড়ালরাই করেতে পারে। দেখলাম কলজের ড্রেস এখনো পড়া তার মানে বাসায় যায়নি, সরাসরি এখানে এসেছে।

“তা আমার পিছু নিয়েছ কেন?” আমি খোচা দিয়ে জিজ্ঞেশ করলাম।

“আমার মামার বাসা এখানে, তোমার মত শুয়োপোকার পিছু নিতে যাব কেন আমি ।”

হুম মামার বাসা এখানে, উপরতলা থেকে যখন এসছে তাহলে নির্ঘাত মঞ্জু সাহেবের ভাগ্নি হবে। কিন্তু একবার বাদর আরেকবার শুয়োপোকা! মেয়েটা মনে করে কি নিজেকে। আর সাইবর্গটা গেছে কই।

“মঞ্জু সাহেব তোমার মামা হন।” আমি মাথা ঝাকিয়ে বললাম। দরজার তালা খোলা হয়ে গেছে।
“তুমি জানলে কি করে ?” চোখ দুটো সরু করে জিজ্ঞেশ করল।

“সরি বাসায় অনেক কাজ আছে ।” এই বলে আমার ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে পড়লাম। “পরে দেখা হবে” এই বলে তার হতভম্ব মুখের উপর দরজা আটকিয়ে দিলাম।

দরজা আটকনোর পর সত্যি কথা আমার অনেক খারাপ লাগল। মনে হল দরজা খুলে সরি বলি।

যাই সরি বলি ওকে, আসলেই এই কয়েকদিন ওরা সাথে খারাপ ব্যাবহার করছি। দরজা খুলে দেখলাম সে নেই, নিচে নেমে গেল নাকি। আমি নিচে নেমে রাস্তার দিকে এসে পড়লাম। মেয়েটার ছায়াও দেখলাম না।

বড় করে এক দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। তারপর বাসায় ফিরে আসলাম।

বাজার করে আনা সব জিনিষপত্র ফ্রীজে রেখে দিলাম। শুধু একটা ডিম বের করলাম। আজকে বেশী কিছু খাব না দুপুরে। কালকে রাতে কিছু ভাত আর ডাল ছিল ফ্রীজে সেগুলো গরম করব আর ডিম ভাজি। রান্নাঘরে আসার সময় নিজের মোবাইল ফোনের কথা মনে পড়ল। রুমে গিয়ে মোবাইল চেক করতেই দেখলাম আপার নাম, মিসড কল লিষ্টে। ঊনপঞ্চাশবার চেষ্টা করেছেন।

কিসের জন্য ফোন দিল? আপিকে ফোন দিলেইতো হত। সে কি জানেনা আমার কলেজ থাকে এই সময়ে।

মোবাইলটা কেপে উঠল, মোবাইলের রিংটোন আমার পছন্দ না। তাই সবসময় ভাইব্রারেট মোডে রাখি।

ফোন রিসিভ করতেই,

“মরেছিস নাকি? এতবার ফোন দিচ্ছি, ধরস না কেন ?” আপা চেচিয়ে বলল।

সত্যি আপা গলার আওয়াজ বয়সের সাথে সাথে বেড়ে যাচ্ছে। মোবাইলের মাধমেও চেচানিটা শুনলেও আমার কান চিনচিন করতে লাগল।

“কি কারনে ফোন দিয়েছ ? জাননা আমার এই টাইমে কলেজ থাকে?” আমি বললাম।

“কলেজে মোবাইল নিয়ে যাসনা কেন?”

আরে মামার বাড়ির আবদার নাকি, কলেজে মোবাইল নিয়ে যাব।
“কলেজে মোবাইল নেয়া নিষেধ। তা কি কারনে ফোন দিয়েছ ।”
“আরে একজন দেখছি কি কারনে ফোন দিয়েছ কারনে ফোন দিয়েছ বলতে বলতে পাগল করে দিচ্ছে।”

পাগলতো করবে আমাকে তো তুমি।

“তা রুনার সমস্যা কি ওকে ফোন দিলে সে ফোন ধরে না কেন ?” আপা জিজ্ঞেশ করল।

“সেটা তুমি জিজ্ঞেশ কর, আমি জানি নাকি।”

“আরে বেক্কল সে ধরলে তো।”

“তা ফোন… ”

“মেয়ের ছবি দেখেছিস ?”

“তা এই কারনে ফোন দিয়েছ নাকি ?… না।”

“না এই কারনে না… কি দেখিসনাই, সাতদিন আগে আমি অনেক কষ্টে রুনা কে মেইল পাঠালাম।”

“তুমি নিজে পাঠিয়েছ ?”

“হ্যা ।” আপা গর্বিত স্বরে বলল, “তোর দুলাভাইয়ের ল্যাপটপে।”

“বেচারা ল্যাপটপ আর বেচারা দুলা…”

“ফাজলামি করবি না বলেছি।” আপা হুঙ্কার দিয়ে উঠল।

“সরি, আচ্ছা আ্পিকে বলে দেখে নিব আমি। তা আর কোন কথা, নাকি মেয়েটাকে দেখেছি কিনা সেটা জানার জন্য খালি ফোন দিয়েছ।”

“ না, তোকে অনেক দিন হয় দেখিনা, তোর কথা মনে হল তাই ফোন দিয়েছিলাম। রুনাকে দিয়েছিলাম সে ফোন ধরছে না।”

“আপি এখন অনেক বিজি, বলতে গেলে নতুন জবতো।” আমি বললাম।
“রাত করে আসে নাকি ?” তীক্ষ্ণ গলায় জিজ্ঞেশ করল।
“না এত রাত করে না, এই সাতটা আটটা বাজে আসে।”
“তা বাজার-সদাই তারপর রান্না-বান্না কে করে, তুই নাকি?”

“হ্যা আমিই করি, আপি করলে আর এই দুনিয়াতে থাকা লাগবে না।”

“তা দুপুরের খাবার খেয়েছিস নাকি?” আপা একটার পর একটা প্রশ্ন করতেই লাগল।
“না রান্না করতে যাব তখনই তো তোমার ফোন আসল।”
“ও আচ্ছা, তা তো কলেজ কেমন যাচ্ছে ?”

আপা আসলে একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে, আগে এই কারনে বিরক্ত হতাম এখন আর হই না। কারন ফ্যামিলির বড় মেয়ে সে, তাই সবার প্রতি তার আলাদা এক দরদ আছে। কারো ক্ষেত্রেই সেটা কম না তার। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে দূরে থাকার কারনে তার কাছে মনে হচ্ছে উনি ঠিকমত আমাদের খোজখবর নিতে পারছেন না। আর আমার বিয়ে আসলে একটা অজুহাত তার, গাধাকে যেমন মুলো ঝোলায় আমাকেও তিনি সেই একইরকম মুলো ঝুলিয়ে রেখেছে। চিটাগাং গেলেই আমাকে কোক করে চেপে ধরবেন। কোন মেয়ে-টেয়ে উনি কিছুই দেখেনি। হয়তোবা কোন মেয়ের ফোটো দেখে তার ভাল লেগেছে, সেটাই পাঠিয়ে দিয়েছে। মাঝে মাঝে আমার বোনেরা এমন কজা করে না যেটাকে অনেকেই বাড়াবাড়ি বা পাগলামি মনে হবে।

আপার কোন ইচ্ছা নাই এত তাড়াতাড়ি আমাকে বিয়ে দেওয়ার। কোন বোনই বা চাইবে তার একমাত্র আদরের ভাই অন্যেক মেয়ের সাথে চলে যাক। নিজেদের দাবীতে হাত বসিয়ে দিক।

“এইতো মাত্রতো শুরু হল আরো কয়েকদিন যাক তারপর বলব।”

“শোন আর যাই করিস ওখানের কোন মেয়েকে পছন্দ করিস না।” আপা বলল।

সে সত্যি সিরিয়াস নাকি !
“আগে আপিরটা দেখ তারপর আমারটা খোজ, বুড়ি হয়ে যাচ্ছে তো মেয়েটা।” আমি একটু ঝাঝের সাথে বললাম।
“রুনা মনে হয় বাসায় নেই ?”

“বললাম না অফিসে গেছে।”
“এই জন্য তুই এই কথাটা বলতে পারলি, শুনলে তোর চামড়া সে তুলে নিত। ঠিক আছে রাখি।” এই বলে কেটে দিল।

আমি তিক্ততার সাথে ফোনটা পকেটস্থ করলাম। তারপর মনে হল আমিতো এখনো কলেজের কাপড় পড়ে আছি। পকেট থেকে মোবাইল বের করে নিজের কাপড় চেঞ্জ করতে গেলাম। এরপর গোসল তারপর রান্না-বান্না।

…….

ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে একটা মেয়ে বসে আছে। তাকে হয়তো সুন্দরী বলা যাবেনা, কারন এই দেশে ভাষায় সুন্দরী হবার জন্য তোমাকে ফর্সা হতে হবে। আয়নার সামনে বসা এই মেয়েকে এত ফর্সাও বলা যাবে না আবার অনেকে বলে শ্যামলা সেটাও বলা যাবে না। তার চেহারর মধ্যে এক ধরনের শিশুসুলভ ভাব আছে, যার কারনে তার চেহারায় এক ধরনের পবিত্র ভাব ফুটে উঠেছে। সে তার চুলে খুলে ছড়িয়ে রেখেছে এই খোলা চুল তার কোমড় অব্দি পর্যন্ত চলে গেছে। এই কারনে তার চেহারায় একটা পুতুলের মত ভাব চলে আসছে।সে এই চুল খুবই যত্নের সাথে আচড়াচ্ছে। সে এই চুলকে অনেক ভালবাসে। সে মনে করে এই চুল তার দেহের সবচেয়ে সেরা অঙ্গ।

তার সামনে মোবাইলের দিকে নজর বারবার চলে যাচ্ছে। বোঝা যায় কারো ফোনের অপেক্ষা করছে সে। মোবাইলে স্ক্রীনে দেখল, সাড়ে নয়টা বাজে। খিদেয় পেটটা গুড়গুড় করে উঠল তার, সেই দুপুরে হালকা কিছু খেয়েছে সে, এরপর থেকে সে না খাওয়া। দশটার আগে তার খাবার মিলবেনা। সবার কাছে সে উপেক্ষিত হলেও সেই দুইজনের কাছে উপেক্ষিত না। না, ভুল হয়ে গেছে তিনজন, হ্যা একটা মেয়ে। অন্যান্য মেয়ের কাছে সে ঈর্ষার বস্তু। হবেইবা না কেনো। তার এই বাচ্চাদের মত নিষ্পাপ চেহারার কারনে অনেক ছেলের কাছে প্রস্তাব পেয়েছে। দেখা গিয়েছে তার এক ফ্রেন্ড এক ছেলেকে পছন্দ করত, সেই ছেলে যদি তাকে প্রস্তাব দেয় তাহলে দোষ কার ?

তার নিজের ?

কিন্তু তার বন্ধু ভুল বুঝল। জীবনের প্রথম বন্ধু যখন তাকে ভুল বুঝে চলে গেল। তার মনের ভিতরে থাকা বিশাল পাথরের বোঝার ওজন যেন আরো বেড়ে গেল। তার কাছে মনে হতে লাগল সে এই পৃথিবীতে একা। কেউ তাকে চায় না। কেউ না।

রুক্ষ এই পৃথিবীতে সে একা থাকার সিদ্ধান্ত নিল। ছিলই একা। শুরু করল নিয়ম-মাফিক চলা ফেরা। সে ক্লাসে ক্যাপ্টেন হল, সে নিয়মের এক পা এদিক-ওদিক হয়না। কারন তার কাছে মনে হত এই নিয়ম-কানুন তার জীবনের সব। তুমি যদি নিয়ম-কানুন মেনে চল তাহলে সবাই না হোক কিছু মানুষের কাছে তো উপেক্ষিত হবে না।

হলও তাই, সহপাঠীর কাছে সে উপেক্ষিত হল, কিন্তু স্যার-ম্যাডামদের কাছে সে হল এক ভাল ছাত্রীর মডেল। সেই সাথে তার রেজাল্টও ভাল হতে লাগল। কিন্তু সে যত সামনে যেতে লাগল, সে সবার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে লাগল। তার পৃথিবী আস্তে আস্তে ধূসর হয়ে যেতে লাগল…

দরজা নক করার শব্দে তার হুশ ফিরল। সে নিজের মাথা ঝাকাতে লাগল। কি সব আজেবাজে চিন্তা করছে সে।

“দরজা খোলা আছে।” বলল সে।

খাবার হাতে নিয়ে ঢুকল তার ভাই।

“ভাইয়া তোমাকে খাবার নিয়ে আসতে কে বলেছে ? আমি নিজেই নিয়ে খেতাম ।”

“আরে বাদ দে, একসাথে খাই আজকে।” ছেলেটা খাবার গোছাতে গোছাতে বলল।
মেয়েটা তার তার ভাইয়ে দিকে তাকাল, তার চেহারার মধ্যে এক ধরনের নরম ভাব চলে এসছে এখন। সে খেয়াল করেছে তার ভাই যখন তার সামনে আসে তখন তার চেহারার মধ্যে এক ধরনের নরম ভাব চলে আসে। অন্যান্য সময় চেহারাটা একদম রোবটের মত করে রাখে।

“সবার সাথে খাও না কেন ?”

“ভাল লাগে না, আর খালি ক্যাচর ক্যাচর করে। পিচ্চি বুড়া সব ।”

মেয়েটা ফিক করে হেসে ফেলে। বোনের মুখে হাসি দেখেও ভাইয়ের মুখে হালকা হাসি ফুটে।

“নে খাওয়া শুরু কর।” এই বলে নিজের প্লেট থেকে ভাত মুখে তুলে নেয়।

মেয়েটাও ভাত খাওয়া শুরু করে।

“ঐ ছেলেকি পড়ে কি আর কোন সমস্যা করেছে ।”

“না, আর সমস্যা করে নাই ।”
“করার কথা না, যদি করে তাহলে বলিস। ব্যাবস্থা করে দিব ।”
“তোমার কি মনে হয় সে আমাকে ডিস্টার্ব করবে ?”
“ছেলেটাকে ভদ্র মনে হয়েছে, করার সম্ভাবনা কম। না গুতালে সে কিছুই করবে না, এই টাইপের ছেলে সে।”

“তাই নাকি ?” ভ্রু কুচকে মেয়েটি বলল, ভ্রু কুচকালেও তার চেহারাইয় এক ধরনের ঠাট্টা ভাব ছিল। এটা ঠিক তার ভাই কিভাবে যেন মানুষের ভিতরের রুপ দেখতে পায়। মেয়েটা এটা সম্পর্কে একদম শিউর।

“তবে মনে হয় না সে এত সহজে হাল ছাড়বে ।” মেয়াটা বলল।
“ দেখা যাক, তোকে কি যেন বলে ডাকে সে ।” ভাই মুখে আরেক লোকমা ভাত নিতে নিতে বলল। “হুম মনে পড়েছে, ‘ক্যাপ্টেন নানী’ ।”

“কে বলেছে ?” মুখ কালো করে জিজ্ঞেশ করল সে।
“তোর বান্ধবী ।”

মেয়টা মুখ আরো কালো করে মনে মনে বলল, পস্তাতে হবে ওকে, সত্যিই পস্তাতে হবে, ঐ শুয়োপোকা রুপী বাদরটাকে।

*

আরো কিছু দূরে একটা মেয়ে ফোনে কথা বলছে,

“না কলেজ লাইফটা মনে হয় ভালই কাটাবে”

“- – -”

“হ্যা সত্যি।”

“- – -”
তারপর মেয়েটা কলেজের কয়েকটা দিনের কাহিনী বলতে লাগল।

“- – -”

“বলেছি না, মাত্রতো শুরু।”
মেয়েটা তার ঐ ছেলে বন্ধুর কথা মনে মনে ভাবল, দেখি তুমি কেমন খেল দেখাও।

*

টুলের উপর গালে হাত দিয়ে বসে আছি। আমার ডান পাশে সজল আর বাম পাশে ‘সাইবর্গ’ নির্জন। অপর পাশে আমাদের গ্রুপের দুই মহিলা সদস্য বসে আছে। বর্তমানে আমরা পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাবে আছি। ল্যাবে সুদর্শনমত স্যার আমাদের লেকচার দিচ্ছেন। কি লেকচার দিচ্ছে সেটা তিনিই জানেন। একটা কথাও কানে দিয়ে ঢুকছে না। অন্যসময় হলে এক কান দিয়ে ঢুকত আর আরেক কান দিয়ে বের হয়ে যেত। তবে কপাল এক দিক দিয়ে ভাল বলা যায় আমরা সবার পিছনের দিকে আছি। আমাদের পাশে আরেকটা টেবিলে আছে ‘অল লেডিস গ্রুপ’।

অবশ্য ক্যাপ্টেন নানী খুশি না পিছনের দিকে বসার জন্য, কিন্তু এখন সে মনোযোদ দিয়ে স্যার কি বলছে সেটা শুনছে। প্রথম প্রথম গাইগুই করলেও নুশরাতের কথায় সে আর কিছু বলল না।

আর নুশরাতকে দেখে মনে হয় সে মজায় আছে। একটু পরপর মুখ টিপে হাসছে। আর খাতায় কি যেন লিখছে। আমার অবশ্য কৌতুহল হচ্ছিল কি কারনে সে এত মজা পাচ্ছে। কিন্তু আমি এও নিশ্চিত যে সে আমার এই কৌতূহলটা মেটাবে না। আমি বামে তাকালাম দেখলাম নির্জন সবসময়ের মত তার ‘সাইবর্গ’ ভাবটা ধরে রেখেছে। আর সজলের দিকে তাকালাম, সে পাশের টেবিলের মেয়েদের দিকে বারবার তাকাচ্ছে।

ওর পেটে একটা খোচা মেরে বললাম, “কিরে তোর না গার্লফ্রেন্ড আছে, তারপরেও পাশের টেবিলের মেয়েদের দিকে নজর দিচ্ছিস ।”

“আজিব ব্যাপার গার্লফ্রেন্ড হইছে দেখে কি অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে পারব না এটা কোনো কথা হল। ”

“আমাকে এই কথা না বলে তোর গার্লফ্রেন্ডকে বলিস।”

সজল আর কোনো কথা বলল না। সোজা স্যারের দিকে তাকাল, এমন ভাব করল যেন স্যারের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে। হঠাৎ করেই মনে হল কেউ আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমার নাক বরাবর তাকাতেই দেখলাম ক্যাপ্টেন নানী আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর নিজের ঠোটের দিকে নিজের আঙ্গুল দিয়ে বোঝাল চুপ করে থাকতে। কি আর করা চুপ করে রইলাম, আর স্যারের দিকে তাকালাম। আমিও সজলের মত ভাব করতে লাগলাম স্যারের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছি।

একটু পরেই স্যারের লেকচার শেষ হল।

“প্রত্যেক গ্রুপ মেম্বার থেকে একজ করে আস, ইন্সট্রুমেন্ট নেয়ার জন্য।” স্যার এই বলে নিজের পেছনের আলমারির দিকে ঘুরলেন। আমি ভাবলাম ক্যাপ্টেন নানী মনে আনতে যাবে, তাই তার দিকে ঘুরতেই দেখি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি বললাম, “আমাকেই যেতে হবে ?”

সবাই মাথা না ঝাকাল, না একজন খালি ঝাকায়নি, সে নির্জন।

কি করার মনে মনে গজ গজ করতে স্যারের সামনে গেলাম। দেখলাম সব কিছু সাজানো আছে।

স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “একটা স্লাইড ক্যালিপার্স, একটা ভার্নিয়ার স্কেল আর এই তিনটা রড নিয়ে যাও ।”

রড বলতে কনিষ্ঠ আঙ্গুলের সমান তিনটা লোহার রডের দিকে ইঙ্গিত করলেন। আমি সব গুলো নিয়ে আমার টেবিলের সামনে আসতে যাব তখনই একটা মেয়ে আমার সামনে এসে দাড়াল, বলল, “ল্যাবের পর আমার সাথে দেখা করবে। জরুরী কথা আছে।”

মেয়েটার দিকে তাকালাম। সে আমাদের পাশের টেবিলে ‘অল লেডিস’ গ্রুপের একজন। আমি কিছু বললাম না শুধু মাথা ঝাকিয়ে চলে আসলাম।

ইন্সট্রুমেন্ট গুলি টেবিলে রাখতেই সজল আমার পেটে কনুই দিয়ে গুতো মেরে ফিসফিস করে জিজ্ঞেশ করল, “কিরে, রুপা তোকে কি বলল ?”

“বলল, ল্যাবের পর দেখা করতে।” আমিও জবাব দিলাম।

“কিসে জন্য ?”

“আমি কি জানি… আমিতো…”

আমার কথা শেষ হল না, দেখলাম ক্যাপ্টেন নানী আবার আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।

ওই মেয়ে আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকাবে না, তোমার ওই ভ্রু কুচকানোকে আমি পরোয়া করি না। আমিও তার দিকে একই ভাবে তাকিয়ে রইলাম, হঠাৎ করেই চোখে পড়ল বেপারটা এবং আমি ঠাস করেই জিজ্ঞেশ করে বসলাম, “তুমি কি জিরো পাওয়ারের গ্লাস পড়ে আছ ?”

এটা শুনেই ক্যাপ্টেন নানী অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল। নির্জনও মনে হয় থতমত খেল, সেটা আমার চোখের ভুল হতে পারে। সজল নির্বিকার রইল, আর নুশরাত বোকার মত তাকিয়ে থাকল।

“তুমি সেটা বুঝলে কিভাবে ?”

“ইন্সটিঙ্ক।” আমার উত্তর।

সজল এবার বলে উঠল, “এটা রানার একটা বৈশিষ্ট সে কিভাবে যে সব কিছু বলে দিতে পারে, অনেকটা শার্লক হোমসের মত ।”

আমি শার্লক হোমস না।

“সে আমার গার্লফ্রেন্ড আছে সেটা বলে দিয়েছিল, এমনকি নুশরাত যে বিবাহিত সেটাও সে বলে দিয়েছে।”

আমার কাছে মনে হল এই টেবিলে একটা বোম ফুটল। নুশরাত আমার দিকে গোল গোল চোখ করে তাকিয়ে থাকল। ক্যাপ্টেন নানীর চেহারা এবার ‘সাইবর্গ’ এর মত হয়ে গেল। সে কি চিন্তা করছে, সেটা সে নিজেই জানে। সজল ওদের দুইজনের চেহার দেখে নিজে থতমত খেয়ে গেল

“ওই পিছনের ডান পাশের গ্রুপ, কথা না বলে কাজ করা শুরু কর।”

স্যারের কথায় বাকি চারজনের হুশ ফিরল, আর তাড়াহুড়ো করে কাজ করা শুরু করল।

ঘন্টা দেড়েক পর বিরক্তিকর এই ল্যাব ক্লাস শেষ হল।

হুফ~ শান্তি, এরপর অফ পিরিয়ড তারপর টিফিন ব্রেক। যাক ল্যাবের পর যদি এমন শান্তি পাওয়া যায় তাহলে তো ভাল।

নুশরাত আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “ইন্সট্রুমেন্টগুলি গোছাও, আর তোমার শিট দাও আমরা গিয়ে সাইন করিয়ে আনছি।”

আজিব ব্যাপার টেবিলের সব কিছু আমাকেই কেন পরিষ্কার করতে হবে, আমি চাকর নাকি। কিন্তু স্যারের সামনে যেভাবে শিট সাইন করার জন্য ভীড় করছে তার চেয়ে টেবিল পরিষ্কার করা অনেক ভাল। আমি কিছু বললাম না। মাথা ঝাকালাম।

“ওই সজল, রানাকে সাহায্য কর।”

“এই কয়টা কাজ, এটাতো রানা একাই করতে পারে।” সজল প্রতিবাদ করল।

সজল ছেলেটাই আসলে বেঈমান!

আমি হলে লাফ দিয়ে সাহায্য করতাম (মনে হয়)। নুশরাতকে দেখে মনে হয়না সজলের কথাটা তার কানে গিয়েছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “রানা ল্যাব ক্লাসের পর আমার সাথে দেখা করবে। কথা আছে ।”

আমিতো জানি কিসের কথা। তারপর মনে হল আরে একটা মেয়েও তো আমাকে ডাক দিয়েছে।

হঠাৎ পেটে গুতো খেতেই হুশ ফিরল। গুতোর মালিক সজলের দিকে কড়া চোখে তাকালাম।

“রুপা তোকে কি বলেছে তখন ?”

“বললতো ল্যাব ক্লাসের পর দেখা করতে।”

“কিসের জন্য বলেছে ?”

“আমি কি জানি।”

“মনে হয় তোকে অফার করবে রে ।” সজল একটা ফিচেল মার্কা হাসি দিয়ে বলল। “চালিয়ে যা মেয়েটার চেহারা খারাপ না”

তার কথার জবাব দিলাম না। অফার-টফার ফাও কথা মেয়েটা আমাকে প্রপোজ করবে না, সেটা তাকে দেখেই আমি বুঝে গিয়েছি। সেটা নিয়া আমাথা না ঘামানোই আমি ভাল মনে করলাম। টেবিল গুছিয়ে ইন্সট্রুমেন্টগুলি নিয়ে স্যারের কাছে গেলাম।

লাইব্রেরিতে বসে আছি। বসে আছি বলা ঠিক হবে না বলতে গেলে আত্মগোপন করে আছি। নুশরাত আর রুপা দুজনই আমাকে খুজছে। রুপার সাথে কথা বলা যেত, কিন্তু সে যেভাবে সিরিয়াস চেহারা করে আমাকে দেখা করতে বলল তাহলে সেখানে নিশ্চয়ই কোনো সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে কথা বলবে। আর নুশরাত আমাকে কি প্রশ্ন করবে সেটাতো আমি ভাল করেই জানি। কিন্তু সেটার বর্ননা দিতে গেলে আমার জান কাবার হয়ে যাবে।

ক্ষিদেয় পেটটা গুড়গুড় করে উঠল। মনে পড়ল আজকে সকালে মাত্র দুই পিস পাউরুটি খেয়েছি। আর কিছু না। ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গিয়েছিল। আর আপির আজকে অফিস ছিলনা, তাই সে আমাকে আগে ভাগে ডাকেনি। যাকগে সে কথা, কিন্তু এখনতো প্রচুর ক্ষিদে পেয়েছে। কি করব?

লাইব্রেরী থেকে বের হয়ে গেলাম। পেটে খিল মেরে বসে থাকা আর সম্ভব না। আমি ক্যান্টিনের দিকে হাটা শুরু করলাম। ভাগ্যভাল ক্যান্টিনের দিকে কেউ নেই। দুঃখিত ভুল বলেছি ভাগ্যখারাপ আমার ক্যান্টিনের দিকে নুশরাত দাঁড়িয়ে ছিল। ওকে দেখে আমি থমকে গেলাম।

এখনো সে অনেক দূরে আছে। যদি দৌড় দিই তাহলে আমাকে ধরতে পারবেনা। দৌড় দিতে যাব তখনই সজলের গায়ে ধাক্কা খেলাম।

“ওই সজল রানাকে ধরে রাখ।” নুশরাত চেচিয়ে বলল।

“জ্বি ম্যাডাম।” এই বলে সজল আমাকে ক্যাক করে চেপে ধরল।

‘ম্যাডাম’ !

“সজল ভাই আমারে ছেড়ে দে। ” আমি বললাম।

“তোকে ছেড়ে দিলে, নুশরাত আমাকে বুঝি ছেড়ে দিবে? তোকে কখন থেকে খুজছে সে।”

“ভাই সিঙ্গারা খাওয়াবো।”

“সরি ভাই, নুশরাত মেয়েটা মারাত্মক।”

“তাই বলে তুই আমাকে তার কাছে ছেড়ে দিবি, তুই না…”

“চাদ! পেয়েছি তোমাকে।” দেখলাম নুশরাত হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তবে হাসিটা আন্তরিক না



…….

গালে হাত দিয়ে বসে আছি। ক্লাস রুমে তেমন কেউ নেই, সবাই টিফিনে ব্যাস্ত। অল্প কয়েকজন আছে তারা গল্প গুজব করছে, তারা কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না। এরজন্য আমার নিজের ভিতর কোনো হা হুতাশ নাই,কারন আমি সবার চোখে মনি হয়ে থাকতে চাই না। কিন্তু কি করব কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। এইতো বেশীক্ষন হয়নি মনে হয়, দশ পনের মিনিট হবে মনে হয়, নুশরাত আমাকে শাসানি দিল।

নুশরাত আমাকে কলার ধরে হুমকি দিল। যে মেয়েকে আমি মনে করেছিলাম সবচেয়ে নিরীহ হরিণ শিশুর মত, সেই মেয়ে কিনা আমাকে কলার ধরে হুমকি দিল। আর কতগুলো পিচ্চি ছেলে-মেয়ে দেখে ফেলল ব্যাপারটা।

কি ব্যাপার ? প্রশ্ন জাগছে?

প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক ।

ইচ্ছে না করলেও পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরছি। যদিও ঘটনাটা বলার ইচ্ছা আমার একদম নাই!



নুশরাত আমার কলার চেপে ধরে আছে। আমি পুরো হতভম্ভ। এটা কি সেই মেয়ে, যে কিনা সবার সাথে মিষ্টি হেসে কথা বলে। যাকে দেখলে একটা নিরীহ হরিণ শিশুর কথা মনে পড়ে যায়।

“তুমি আমার বিয়ের কথা জানলে কিভাবে ?”

কঠিন প্রশ্ন, এর জবাব অনেক বড়, এত কথা বলার ইচ্ছা আমার নাই। চুপ করে রইলাম।

“কি কথা বলছ না কেন ?” আমার কলার ঝাকিয়ে বলল। ঝাকানির চোটে দেয়ালের দিকে আমার মাথা ঠুকে গেল।

বাপরে বাপ! এই মেয়ের শরীরে এত জোর আসল কিভাবে।

মাথার পিছনে পিছনে হাত বুলাতে বুলাতে বললাম, “ঠিক আছে আগে কলার ছাড় তারপর বলছি।”

“না, আগে বলতে হবে তারপর ।”

“হাতে আংটি আর নাকের ফুল।”

“আমিতো ঐগুলো প্রতিদিন পড়িনা ।”

“প্রথম দিন পড়ে ছিলে। আর ওই দিনই আমি সজলকে বলেছি।”

নুশরাত সজলের দিকে তাকাতেই সজল মাথা ঝাকাল।

“ব্যাস এই…”

“হুম এই।”

নুওশরাতকে দেখে মনে হয় না সে এত সহজে মানবে এই কথা। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সে আমার কলার ছেড়ে দিল।

“ব্যাস এই, নাকি আরো ব্যাপার আছে ?”

“আরো ব্যাপার আছে, তবে এত কিছু না বলাই বেটার।” আমি বললাম।

“হুম”, এই বলে আমার কলার আবার ধরল,“সুমনা কে ক্যাপ্টেন নানী বলে ডাকবে না।”

“ডাকব না কেন?” আমি জিজ্ঞেশ করলাম।

“আমি যেটা বলেছি সেটাই করতে হবে।” নুশরাত দাত কিড়মিড়িয়ে বলল।

“যদি বলি।”

“খবর হবে।”

“তোমাকে ওর হয়ে তাবেদারি করতে কে বলেছে ?”

“শোন ওর সাথে খারাপ ব্যাবহার করলে তোমার খবর হবে।”

খবর হবে, খবর হবে। কথাটা শুনতে শুনতে মাথা ধরে গেল। আর সুমনার কথা মনে হতেই মাথা আরো গরম হল।

“ও যদি আমার সাথে বাড়াবড়ি করে তাহলে আমিও ছেড়ে কথা বলব না”, আমি বললাম।

“সে তোমার ভালোর জন্য বলছে।”

“আমার ভাল তাকে দেখতে কে বলেছে, তার হয়ে খাই নাকি আমি নাকি তার হয়ে পড়ি।”

“ভদ্রভাবে কথা বল।”

“আগে নিজে ভদ্র ব্যাবহার কর, করিডোরের সামনে একটা ছেলের কলার ধরে হুমকি দিচ্ছ।”

নুশরাত কলার ছেড়ে দিল। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “সুমনাকে ক্যাপ্টেন নানী বলে ডাকবে না, আমি চাই না কলেজের কেউ ওকে এই নামে ডাকুক। তাই তোমাকে বলছি ওকে এই নামে না ডাকতে। ”

“ ঠিক আছে আমি ডাকব না তাকে এই নামে, কিন্তু তাকে বলল সে যেন সব কিছু নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি না করে। আমি হয়তো সহ্য করে যাব, কিন্তু অন্য কেউ সহ্য করতে পারবে না।”

“চেষ্টা করব।” এই বলে নুশরাত চলে গেল।

আমি করিডোরের দিকে তাকাতেই দেখলাম কয়েকটা মেয়ে-ছেলে আমার দিকে ফিচেল হাসি মারছে। তারা মনে হয় টিফিন কিনতে এসেছিল। কলেজ আর স্কুলের জন্য ক্যান্টিন একটাই । এরা মনে হয় সব দেখে ফেলেছে। একটা মেয়ে আমার কলার ধরে হুমকি দিয়ে গেল, আর ওরা মনে হয় দেখেছে, না হলে এইরকম ফিচেল মার্কা হাসি দিত না।।খিদে নষ্ট হয়ে গেল। নিজের ক্লাসের দিকে চলে আসলাম।

এই হল ঘটনা।

হঠাৎ করাই রুপা আমরা সামনে আসল।

“রানা তোমার সাথে আমার কথা আছে।”

“মাথা গরম আছে এখন পারব না, পড়ে কথা হবে।”

“জরুরী কথা।”

“তাহলে এখানে বল।”

“বাইরে গেলে হয় না।”

“না।” আমি এই বলে তার দিকে তাকালাম।

রুপা আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখল কি জানে। সে নিশ্চুপ হয়ে চলে গেল।



আমি চুপচাপ বসে আছি। হাতের কাছে একটা বইয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। কিন্তু বই হাতে পেলাম না, চোখ বন্ধ করে আমি ডেস্কে মাথাটা বিছিয়ে দিলাম।

কার উপর রাগ সেটা আমি বলতে পারছি না, কিন্তু এটা নিশ্চিত যে জুনিয়র কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে একটা মেয়ের আমাকে হেনেস্থা করল এটাই আমার রাগের কারন। কিন্তু কোন ব্যাক্তির উপর আমি রেগে আছি সেটা আমি বলতে পারছি না, মানে আবিষ্কার করতে পারছি না। এইটা আমার রাগকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।

“তোমাকে সামনের দিকে বসতে হবে।”

চোখ খুললাম আমি। দেখলাম সুমনা দাঁড়িয়ে আছে। ডান হাত দিতে নিজের চশমা ঠিক করতে লাগল।

“আমি দেখছি পিছনে বসে তুমি ঠিকমত ক্লাসে মনোযোগ দাও না, আমি চাই তুমি সামনের দিকে বসবে”

আমি জিজ্ঞেশ করলাম, “তুমি আমার খাও না পড়।”

“মানে ?”

“তুমি আমার খাও না পড়।” আমি বললাম।

“কি বলতে চাও সরাসরি বল।”

“আমার হয়ে চামচামি করতে কে বলছে তোমাকে।”

“মানে?” চোখ সরু করে আমার দিকে তাকাল।

“মানে আর কি, ক্লাশ ক্যাপ্টেন হবার পর ধরাকে সরা জ্ঞান করছ। নিজের যা মনে হচ্ছে তাই করছ। যেখানে স্যার ম্যাডামরা পর্যন্ত কিছু বলছে না সেখানে তুমি আগে ভাগে লাফিয়ে লাফিয়ে অ্যাটেন্ডেন্স লিষ্ট বানাতে গেছ, তা লাভ কি হয়েছে কিছুই না। মাঝখান দিয়ে মার খেতে হল আমাকে। নিজের সন্তুষ্টি অর্জন করেছ তুমি। তারপরও আমি কিছু বলি নাই

এরপর আবার এসেছ এখন আমাকে সামনে বসাতে, নিজের মনে হল আমি ঠিক মত ক্লাস করি না তাই আমার মনোযোগ বাড়ানোর জন্য সামনে বসতে। আরে মা, আমি আমার ক্লাস করব, যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে করব তাতে তোমার কি, তোমার তো কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। কেন অন্যের ব্যাপারে নাক গলাতে যাও।

কোন কিছু করার আগে ভেবে চিন্তে নিও, মনে হল আর করে বসলাম এটা ঠিক না। অন্যেরা কি ভাবে সেটা নিয়ে আগে চিন্তা কর তারপর কাজ কর। সবসমত খালি নিজের চিন্তা আগে কর। এতটা স্বার্থপর না হলেও পার তুমি।”

এই বলে চুপ করে গেলাম। আর কথা মাথায় আসছিল না। চারিদিকে তাকালাম, সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এই নিয়ে মনে হয় দ্বিতীয়বার কেন্দ্রবিন্দুতে আসলাম আমরা।

সুমনা আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখের মধ্যে আগুন।

মেয়েটা কি নিজের ভুল কি ধরতে পারবে না নাকি? আসলেই মেয়েটা স্বার্থপর নাকি

“তুমি কি জান ?” সুমনা মাথা নিচু করে ফিসফিস করে বলল।

তা কথা আমি ছাড়া আর কেউ মনে হয় শুনল না। বোকার মত তাকিয়ে রইলাম। আলোচনা কোথায় যাচ্ছে এটা।

“কিছুই জান না তুমি, কিছুই না…”

এরপরের কথা আমি শুনতে পেলাম না। তবে আমি নিশ্চিত শেষ কথা বলার সময় তার গলাটা কেপে উঠেছিল।

সুমনা ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে গেল। সবাই তার চলে যাওয়া দেখতে লাগল। আমি হতভম্বের মত নুশরাতের দিকে তাকালাম, সেও হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে ছিল। কি ঘটেছে তা মনে হয় সে বুঝে উঠতে পারেনি। সুমনা ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে যাবার পর ক্লাসরুমে গুঞ্জন আবার শুরু হল। তবে সেটাতে আগের মত জোর নেই।

নুশরাত আমার দিকে একবার তাকিয়ে সুমনার পিছু পিছু গেল।

আমি হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে রইলাম।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×