প্রথমেই আপনার কাছে যেটি জানতে চাই সেটি হচ্ছে, আজকে যদি ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলাকায় কারো লাশ পাওয়া যায় তার মানে কি দাঁড়ায় যে খুনটি ঢাকা ইউনিভার্সিটির কোন শিক্ষক বা ছাত্র করেছে? কিংবা একটি সিকিউরড হাসপাতাল এরিয়ার মধ্যে যদি কোন খুন হয় তার মানেই কি খুনের জন্যে ডাক্তার দায়ী।
পত্রিকা মারফত জানলাম ক্যান্টনমেন্টের যে জায়গায় তনুর লাশ পাওয়া গিয়েছে সে জায়গাতে কোন প্রাচীর ছিল না। আরো জেনেছি, প্রাচীর বিহীন এ জায়গায়টিতে লোক যাতায়াত হরহামেশায় হয়।
একটি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী কি একা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে? নাকি এটি সঙ্ঘবদ্ধ একটি হত্যাকাণ্ড? হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য কি ছিল? শুধুই ধর্ষণ? নাকি এর পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে খুনীর বা খুনী চক্রের?
আচ্ছা, ব্যাপারটা এমন হতে পারে না যে, খুনী চক্র খুবই চতুর? নিজের খুনের দায় এড়ানোর জন্যে খুন করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রাচীর বিহীন স্থানে লাশ রেখে গেছে... এটা খুনীর পূর্বপরিকল্পনার অংশ? নিজের খুনের অপরাধ সেনাবাহিনীর উপরে চাপিয়ে বেঁচে চাওয়ার চেষ্টা কিংবা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার কোন নতুন ষড়যন্ত্র?
এবার চলুন তনুর ফেসবুক আইডিটি ঘুরে আসি। তনুর ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট রয়েছে যেটি তিনি পোস্ট করেছিলেন ১৮ তারিখ। সে পোস্টে তিনি লিখেছিলেন-
"1st time..
so happy - traveling to Sylhet, Bangladesh." [March 18 at 12:43am ]
অর্থাৎ তনু ১৮ তারিখ সিলেটে গিয়েছিলেন। সেই পোস্টে একজন কমেন্ট করেছে, এত রাতে? [March 18 at 1:43am] সেই কমেন্টের রিপ্লায়ে আরেকজন লিখেছেন-
"হুম, রাতেই যায়" [ March 18 at 9:12am]
"কুমিল্লা ছাইড়া পালাইতেছে মামা বুঝো না কেলা?" [March 18 at 9:13am]
ঠিক কি কারণে সিলেট গিয়েছিলেন তনু? এর আগে ১৬ তারিখে তিনি আরেকটি পোস্ট করেছিলেন- "আমার মতে সেই সব মানুষের সাথে মিশা উচিৎ যারা সব সময় তোমার ভালো চায়....." এই পোস্ট দিয়ে কি তিনি কোন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কারো সম্পর্কে? যাইহোক, তনু সিলেট থেকে ফিরে এসেছিলেন ২০ তারিখে এবং ২১ তারিখে তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সিলেটে কি অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন তনু?
পরিশেষে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশবাহিনী সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই হত্যার তদন্তে নিয়োজিত। সাথে আছে নারী আন্দোলন এর সংগঠন JFWB (justice for women, Bangladesh) এর কর্মিরা। এই হত্যা রহস্য উৎঘাটন আপনার আমার জন্য যত না জরুরী তার চেয়ে বেশী জরুরী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। কারণ লাশ পাওয়া গেছে তাদের সীমানায়। তাদের নিজেদের কলঙ্কমুক্ত করতে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করাটা তাদের জন্যে খুবই জরুরী। র্যাব ও সেনাবাহিনী বলেছে সময়মত তারা তাদের বক্তব্য দেবেন। আমরা চাই এই হত্যার সত্য রহস্য উৎঘাটিত হোক, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তাই তারা সময় নিচ্ছে নিক। তাড়াহুড়ো তে আমাদের বোন তনু ফিরে আসবে না কিন্তু বাংলাদেশ যেন আবার জর্জ মিয়া নাটকের পুনঃপ্রচার না দেখে সেই দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর কোন তনু যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হয়। প্রয়োজন মত (কালক্ষেপন যেন না হয়) সময় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসল অপরাধীদের গ্রেফতার করে দ্রুততম সময়ে এমন শাস্তি প্রদান করুক যেন আর কোন পিশাচ এই ধরনের কোন অপরাধ করার চিন্তা করতেও চৌদ্দবার জন্ম নেয়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৪৪