সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা। আজ এই বিশেষ দিনে সকলের সাথে শেয়ার করবো বিশেষ একটি রেসিপি।
'বিদুর-কা-শাগ'
খাবারের নামটা খুব অদ্ভুত শোনাচ্ছে? জেনে রাখুন, এই খাবারের পেছনে রয়েছে হাজার হাজার বছর আগের ইতিহাস। একদম মহাভারতের পাতা থেকে উঠে এসেছে এই রান্না। এই শাকান্নটি রাঁধতে ব্যবহার করা হয় পাকা কলার খোসা এবং আখের গুড়ের মত উপকরণ যা কেউ কখনো ভাবেনি আগে। প্রাচীন এই রেসিপিটি সবার সাথে শেয়ার করবো তবে তার আগে জানাচ্ছি এই রান্নার পেছনের গল্প।
কুরু রাজসভার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিদুর। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় শান্তি প্রস্তাবের উদ্দেশ্যে শ্রীকৃষ্ণ কুরুতে গেলে বিদুরের গৃহে আতিথেয়তা গ্রহণ করেন তিনি। বিদুরের স্ত্রী সুলভা শ্রীকৃষ্ণকে পেয়ে এতটাই মুগ্ধ হয়ে যান যে আপ্যায়নের সময় শ্রীকৃষ্ণকে থালায় কলার খোসা ছাড়িয়ে কলা দেওয়ার বদলে ভুলক্রমে কলার খোসা দিয়ে দেন এবং কলা ফেলে দেন। শ্রীকৃষ্ণ সেই কলার খোসা গ্রহনও করেন এবং সুলভাকে অনুরোধ করেন এই কলার খোসা দিয়েই উনাকে শাকান্ন রেঁধে দিতে। সুলভা এই কলার খোসার সাথে নিজের বাগানে আর যে শাক সবজি পেলেন তা দিয়েই রান্না করে ফেললেন অসাধারণ এক শাকান্ন যা পরবর্তীতে 'বিদুর-কা-শাগ' নামে পরিচিতি পায়।
এবার আসি রেসিপিতে। বিদুর-কা-শাগ রাঁধতে লাগবে লাল শাক, ঢেঁকি শাক, বরবটি, পাকা কলার খোসা, জিরা, থেঁতলে নেওয়া গোলমরিচ, হিঙ, হলুদ গুঁড়া, কাঁচামরিচ, আখের গুড়, ঘি এবং লবণ।
এবার বলছি রন্ধনপ্রণালী। প্রথমে শাক, বরবটি এবং কলার খোসা কুঁচি করে নিন। পাত্রে ঘি গরম করে জিরা, গোল মরিচ এবং হিঙ ফোঁড়ন দিয়ে একে বরবটি, লাল শাক এবং ঢেঁকি শাক দিয়ে নাড়ুন। এবার এতে হলুদ গুঁড়া, লবণ এবং কাঁচামরিচ দিয়ে হালকা নেড়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। শাক এবং সবজি সেদ্ধ হয়ে আসলে এতে কলার খোসা কুঁচি এবং আখের গুড় দিয়ে আবার ভালোভাবে নাড়ুন। সব কিছু ভালোভাবে এক সাথে মিশে গেলে চুলা বন্ধ করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:২৩