somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা করে কাকে কি দিলেন

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আমরা জানি তিনি বাংলাদেশের একজন সাবেক সেনা প্রধান এছাড়াও তিনি এককালীন প্রধান সামরিক প্রশাসক এবং একজন রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টি নামক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে জাতীয় পার্টি উপদলের নেতা। তিনি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসন হতে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৮৩ সালে তিনি নির্বাচিত সরকারের অধীনে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন কালে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং সামরিক শাসন জারীর মাধ্যমে দেশ শাসন করেছেন। দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনপ্রবর্তনের উদ্দেশ্য ঘোষণা করে তিনি ১৯৮৬ সালে সংসদীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। সেই নির্বাচনে তিনি স্বপ্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ভোটপ্রার্থী হিসাবে অংশ গ্রহণ করেন এবং পরে পাঁচ বৎসরের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে গণবিক্ষোভের চাপে এবং সেনাবাহিনীর সমর্থনের অভাবে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ১৯৮১ সালের ৩০শে মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হবার পর এরশাদের রাজনৈতিক অভিলাষ প্রকাশ হয়ে পড়ে। ২৪শে মার্চ ১৯৮২ সালে এরশাদ রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। ১১ই ডিসেম্বর ১৯৮৩ সাল নাগাদ তিনি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে দেশ শাসন করেন। সেই দিন তিনি দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ.এফ.এম আহসানুদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে নিজের অধিকারে নেন। এরশাদ দেশে উপজেলা পদ্ধতি চালু করেন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই দলের মনোনয়ন নিয়ে ১৯৮৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যদিও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সেই নির্বাচন বয়কট করেছিল। সাধারণ নির্বাচনে তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে। বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে রাষ্ট্রপতি ১৯৮৭ সালের ৭ই ডিসেম্বর সংসদ বাতিল করেন। ১৯৮৮ সালের সাধারণ নির্বাচন সকল দল বয়কট করে। এরশাদের স্বৈরাচারের বিরূদ্ধে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে সকল বিরোধী দল সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর এরশাদকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেন।

সাম্প্রতিক সময় তার সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে। আসুন দেখি তার সম্পতির অংশ কে কি পেলঃ
বড় ছেলে আল মাহিগীর শাদ এরশাদ, শাহতা জারাব এরিক, পালিত কন্যা জেবিন (লন্ডনে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন) ও ভাই-ভাতিজার মধ্যেও এই সম্পদ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।অন্যদিকে কিছু সম্পদ এরশাদের কয়েকজন পালিত কন্যা এবং কিছু সম্পত্তি পার্টির অফিস ও এতিমদের জন্যও ট্রাস্টে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

এরশাদ যখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যান তার আগেই এই ভাগ-বণ্টন সম্পন্ন করা হয়। জাপা সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
ভাগ বাটোয়ারায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ। মনোনয়নপত্র জমাদানের পরপরই তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তারপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। সিঙ্গাপুর থেকে এসেই তিনি ঢাকার সিএমএইচএ ভর্তি হন। ওই সময় সম্পত্তি ভাগ ভাটোয়ারার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে এরশাদের ইচ্ছায় তার সম্পত্তি ভাগাভাগি করা হয়। সম্পত্তি বণ্টনের পরপরই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবার সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।

এক সুত্র জানা যায় এরশাদের বিপুল পরিমান ভুসম্পত্তি এবং রংপুরের মিঠাপুকুরে পদাগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। আগে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসা থাকলেও এখন সেগুলো নেই। গুলশান দুই এর বাড়িটি রওশন এরশাদকে দিয়েছেন এরশাদ বহু আগেই।আর বারিধারার ১০ নম্বর দূতাবাস রোডের প্রেসিডেন্ট পার্ক যেখানে তিনি নিজে বসবাস করতেন সেটি তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদের একমাত্র ছেলে এরিক এরশাদের নামে দেয়া হয়েছে।পালিত পুত্র আরমানকে দেয়া হয়েছে গুলশানের অপর একটি ফ্ল্যাট। রংপুরের সম্পত্তি পেয়েছেন তার ভাই জিএম কাদের এবং ভাতিজা আতিক শাহরিয়ার। তিনি রংপুরের জাতীয় পার্টি অফিস দলকে দান করেছেন। কয়েক বছর আগে চলচিত্র পরিচালক শফি বিক্রমপুরির কাছ থেকে কেনা ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয়টি এরশাদের ব্যক্তিগত নামে ছিল। এটি তিনি পার্টিকে দান করেছেন। দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান এরশাদের গুলশান বনানী এলাকায় বিভিন্ন মার্কেটে দোকান রয়েছে। দোকান রয়েছে বনানীর মৈত্রী মার্কেটে। সেগুলো সস্তান, ভাই, ভাতিজিদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দিয়েছেন। এই ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দলের পরিবারের কেউ সরাসরি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তারা পরিচয় গোপন রেখে বলেছেন এরশাদের নগদ টাকাসহ সম্পত্তি কী কী আছে তা পরিষ্কারভাবে দলীয় নেতাকর্মীরা জানেন না।

সুত্রে আরো জানা যায়, গুলশান,বনানীতে কয়টি দোকান রয়েছে তার হিসাব কারো কাছে নেই। এরশাদের অসুস্থতা বাড়তে থাকলে তিনি এরিক এরশাদকে দেখাশোনা এবং তার সম্পত্তি দেখাশুনার জন্য একজন ব্যারিস্টারকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে উল্লেখ করা প্রয়োজন ২০০৭ সালে রওশনের সঙ্গে বিরোধে দল ভেঙ্গে রওশন নিজেই দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। ওই সময় এরশাদ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেন ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে। তখনো এরিক এরশাদের দায় দায়িত্ব ব্যারিষ্টার আনিসেও উপর ন্যাস্ত করা হয়েছিল।জানা গেছে, বেগম রওশন এরশাদ বর্তমানে অসুস্থ। তার নামে থাকা সম্পত্তিগুলো তার পুত্র শাদ এরশাদ ও পালিত কন্যা জেবিনের নামে উইল করে দিয়েছেন বলে সুত্রের দাবি। তবে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে কেউ বলেননি। তবে সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের অনেক সম্পত্তি তার দলের কিছু নেতা কুক্ষিগত করেছেন বলে জানা যায়। জাতীয় পার্টির ভেঙ্গে নাজিউর রহমান মঞ্জু যখন পৃথক দল গঠন করে বিএনপির সঙ্গে জোটে অবস্থান নেন, তখন এরশাদের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল বলে সুত্র জানায়। ওই সময় তেজগাঁয়ে একটি প্রকাশনী সংস্থার নামে বিপুল পরিমান জমি ওই সময় নাজিউর নিয়ে নেন। জানতে চাইলে জাপার একাধিক নেতা জানান, এই ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে অনেকদিন থেকে। সবচেয়ে বড় খবর হলো এরশাদ সারাদেশের অনেকগুলো পরিবারকে চালিয়েছেন, কিছু অসহায় ইতিমকে নিয়মিত মাসোহারা দিতেন। তাদের এখন থেকে ট্রাষ্ট থেকে অর্থ দেয়া হবে।

সূত্রঃ ইন্টারনেট বিভিন্ন পত্র পত্রিকা। বিশেষ কৃতজ্ঞতা ইনকিলাব ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×