২২ তারিখ আমাদের জন্য খুব লাকি একটা তারিখ। প্রথম কারণ হল ২০০১ সালের অক্টোবর মাসের ২২ তারিখে আমাদের সম্পর্কের শুরু হয়েছিলো। সেলিমের ঢাকা ইউনিভারসিটির ভাইভা পরীক্ষা ছিল ২০১০ এর আগস্ট মাসের ২২ তারিখে। এভাবে আরও অনেক ছোট ছোট সুখবর পাই বা সুখকর ঘটনা বেশীরভাগ ২২ তারিখেই ঘটেছে। সবচেয়ে লেটেস্ট ২২ তারিখ সংক্রান্ত সুখবর হল আজ আমরা আমাদের অনেক দিনের আকাঙ্ক্ষিত ইউনিভারসিটির বাসার চাবি হাতে পেলাম।
আজ আমাদের সম্পর্কের এক যুগ পূর্ণ হল। ভালো খারাপ মিলিয়ে কেটে গেলো এই এক যুগ। সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক ব্যাপার হল অনেক ঝামেলাপূর্ণ সময়ের মধ্যে থেকেও আমরা একে অপরের প্রতি কখনো আস্থা হারাইনি বা দুজনের প্রতি দুজনের ভালবাসা কখনো কম হয়নি। আল্লাহ আমাদেরকে এভাবে আরও কয়েক যুগ একসাথে হাসিমুখে কাটানোর তৌফিক দিন এই কামনা করি। জানিনা আমার এই দোয়া আল্লাহ শুনবেন কিনা। যে বিপদ আমাদের উপর গেলো, এই বিপদ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পরও প্রতি মুহূর্তে শুধু ভয় হয়, ওকে অকালে হারিয়ে ফেলবোনাতো আমি? আমার একটা দিনও আমি ওকে ছাড়া ভাবতে পারিনা। আমার মেয়েটার সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ওর বাবাইয়া। আজ সকালে ওর কাণ্ড দেখে আমি আবারো অবাক হলাম। ঘুম ভেঙ্গে তার প্রথম ডায়ালগ বাবাইয়া কই? আমি যখন বললাম অফিসে গিয়েছে সে আমার কথা বিশ্বাস করলোনা। বলে না বাবাইয়া আছে ঐ রুমে, বলে বেডরুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমে খুঁজতে চলে গেলো বাবাকে। যখন খুঁজে পেলনা তখন রুমে এসে নিজে নিজে বলা শুরু করলো বাবাইয়া তুমি কই, কুক দাও আমাকে (তার বিশ্বাস তার বাবাইয়া লুকোচুরি খেলছে তার সাথে)। এমন একটা বাবা ভক্ত মেয়ের কপাল থেকে কি আল্লাহ বাবার আদর মুছে দেবেন খুব অল্প দিনে? এসব নিয়ে ভাবলে আমার মাথা ঠিক থাকেনা, কেমন যেন পাগল পাগল লাগে। যাক একই কথা মনে হয় প্রতি পোস্টেই বলা হয়ে যাচ্ছে বারবার। এসব নিয়ে আর কথা না বাড়াই।
কিছুদিন আগে কি যেন নিয়ে মান অভিমান হয়েছিলো দুজনের। সেদিন রাতে ঘুম আসছিলনা। তখন মনে মনে কিছু শব্দের বুনন বুনেছিলাম, তাই শেয়ার করছি। দয়া করে কেউ ভুলেও কবিতা ভাববেন না যেন। এগুলো এক ধরনের অর্থহীন প্রলাপ হিসেবে বিবেচনা করবেন।
কখনো চাইনি জীবনটা রূপকথার কোন গল্প হোক,
শুধু চেয়েছি মধুময় কিছু মুহূর্তের মাঝেই তা কেটে যাক।
কখনো চাইনি জীবন ভেসে যাক বিলাসিতার কোন আতিসহ্যে,
শুধু চেয়েছি অভাব আমার ঘরের পথ না চিনুক।
কখনো চাইনি তুমি আমায় নিয়ে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াও,
শুধু চেয়েছি চলতি পথে চোখে পড়া বুনো ফুলের রূপ মাধুর্য আমার সাথে উপভোগ কর।
কখনো চাইনি সোনা রুপার মণিহারে তুমি আমায় সাজাও
শুধু চেয়েছি একটি তাজা শিউলি বা বেলির মালায় আমায় কেমন লাগে তা দেখে নাও।
কখনো চাইনি বিশেষ দিনগুলো নানা আয়োজনে ভরে তোল,
শুধু চেয়েছি সে দিনের শুরুতে তুমি আমার কপালে এঁকে দাও ভালবাসার চিহ্ন।
কখনো চাইনি ভালবাসার আদিখ্যেতা করে আমায় ভুলিয়ে রাখ,
শুধু চেয়েছি ভরা পূর্ণিমার রাতে ভালোবেসে আমার হাত দুটি ধর।
কখনো চাইনি আমার রূপে গুণে পঞ্চমুখ হয়ে থাক,
শুধু চেয়েছি আমার ভেতরকার স্নিগ্ধ সুন্দর আমাকে চিনে নাও।
কখনো চাইনি আমার জন্য তোমার কোন ইচ্ছা অনিচ্ছা বিসর্জন যাক,
শুধু চেয়েছি কখনো কখনো আমার ইচ্ছেটা নিয়েও একটু ভাব।
কখনো চাইনি তুমি আমায় সবসময় অনেক ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখো,
শুধু চেয়েছি সারাটি জীবন হাসিমুখে আমার পাশে থাকো।
*** সবাই অনেক ভালো থাকুন, ভালোবাসায় ভরপুর থাকুন এই দোয়া করি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮