ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস শনিবার (৭ অক্টোবর) ৫ হাজারের মতো রকেট ছুঁড়েছে ইসরায়েল অভিমুখে। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ইসরায়েলি নিহত। হামাসের যোদ্ধারা প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে গাজা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েলের বেশকিছু সেনাসদস্য ও বেসামরিক লোককে তুলে নিয়ে গেছে।
হামাস যখন ইসরায়েলে হামলা চালাল, নিহতদের মধ্যে অনেক বেসামরিক লোকজনও ছিল। নারী-শিশু বাদ যায়নি। যাহোক, ইসরায়েল যেহেতু দখলদার, তাদের লোকজন মরলে নিশ্চয়ই আলহামদুলিল্লাহ পড়া যায়? লোকজনের উল্লাস চোখে পড়ার মতো। আলহামদুলিল্লাহ'র জোয়ার বয়ে গেল।
হামলার কয়েকঘণ্টা পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বললেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে। পাল্টা আক্রমণ শুরু করল ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত। সকালে আলহামদুলিল্লাহ বলা লোকজন এখন ইন্নালিল্লাহ পড়ছে। এরা কি ভেবেছিল ইসরায়েল চুপ করে বসে থাকবে?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফিলিস্তিন ব্রিটিশদের অধীনে ছিল। বৃটেন-আমেরিকার সহায়তায় ইসরায়েল রাষ্ট্রটা গঠিত হয়। যতই বলা হোক, এরা দখলদার। তাতে কাজ কতটুকু হয়? ইসরায়েল একটা বাস্তবতা। এটা মেনে চলতে পারলেই মঙ্গল। ইহুদিরা তো আকাশ থেকে পড়েনি। তাদের জন্মভূমি তো ছিল এই আরব ভূখণ্ডেই। খুব সম্ভব কোরানে বর্ণিত ইহুদিদের পবিত্রভূমি এখানেই।
ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করে কিংবা রকেট ছুঁড়ে তাদের পরাভূত সম্ভব না। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল গঠিত হওয়ার পর একযোগে হামলা চালায় মিশর-সিরিয়াসহ ৬ আরব দেশ। ওদের একটা লোমও ছিঁড়তে পারেনি। উল্টো আরও ভূমি হারিয়েছে ফিলিস্তিন। ১৯৬৭ সালে আবারও হামলা চালানো হয়। তাতে আবারও ভূমি হারিয়েছে ফিলিস্তিন। দিনেদিনে ওরা আরও শক্তিশালী হয়েছে। ওদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে আখেরে ক্ষতি ফিলিস্তিনিদেরই। এই যে হামলা করল হামাস, তার খেসারত তো তারা দেবে না। দেবে নিরীহ ফিলিস্তিনিরাই। তাহলে কেন এ উস্কানি?
লড়াই চলে সমানে সমানে। ফিলিস্তিন শক্তিমত্তায় ইসরায়েল থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে। এ অবস্থায় হামলা মানে বাঘের সামনে এসে বাঘকে বিরক্ত করা। শক্তিমত্তা যেহেতু নেই, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসা উচিত। আর আলহামদুলিল্লাহ বলা পার্টিদেরও বোঝা উচিত সব জায়গায় সব দোয়া-দরুদ খাটে না। সকালে আলহামদুলিল্লাহ বিকেলে ইন্না-লিল্লাহ- এগুলো দোয়ার বরখেলাপ। বাস্তবতা বুঝতে হবে।