somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের ভালোবাসা

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সন্ধ্যা গড়িয়ে আসছে। একটু পরই চারদিকে অন্ধকার শুরু হবে। নিশাত ধলেশ্বরী পাড় ঘেষে বসে আছে, আর ভাবছে কখন যে মাঝি নৌকা নিয়ে আসবে। নিশাত ধলেশ্বরীর পার্শবর্তী একটি গ্রামের ছেলে। প্রতিদিন নৌকা পেরিয়ে বিদ্যালয় যায় ওপারের একটি গ্রামে। তার গ্রামে কোন বিদ্যালয় নেই। আজ অনেক দেরী করে ছুটি শেষে বাড়ি যাচ্ছে না। কারণ আজ মাঠে ফুটবল খেলেছে নিশাত, বেশ ভালো খেলতে না পারলেও খেলা জিতে এসেছে। কিন্তু এই আনন্দের মাঝে তার চিন্তা আজ মার বকুনি খেতে হবে, বাবার মার খেতে হবে যে। মাঝি ঘাটে এসে পৌছালো, নিশাত বলে উঠত, কি হে! কাকু, আজ এতো দেরী করলেন ক্যান? মাঝি বলল, বলিস নে, আর নৌকা ফুটে গেছে। এই বলে মাঝি তার নৌকার পানি ফেলতে লাগলো। নিশাত নৌকায় এসে বলল। আর গুনগুন করে কি জেনো বলতে লাগলো। তার আগেই মাঝি বলল, কিরে নিশাত আজ, এতো দেরী করে আসলি যে, আর বলো না কাকু! পড়ার অনেক চাপ, বেশী করে ক্লাস করে এসেছি। মৃদু হেসে মাঝি বলল, আমারে বোকা বানাস না, আমি না হলেও কিন্তু ফাইভে পাস করছি। নিশাত বলল, এ তুমি বুজবে না। আগের যুগ আর নাই এখন। একটু ভাবগম্বীয় ভাবে মাঝি বলল, বাবা, এখন পড়ালেখার অবহেলা করিছ না। দেখ ভালো কইরা পড়ি নাই বলেই আমার আজ এ দশা। এরই মাঝে বকবক করতে গ্রামের ঘাটে এসে নৌকা পৌছালো। নিশাত লাফ দিয়ে নৌকা থেকে নেমে দৌড় দিলো বাড়ির দিকে। পথে বন্ধু আরমানের সাথে দেখা। আরমান রাগান্বিত হয়ে বলল, কিরে সারাদিন কই ছিলি, তোর মা কতবার আমাগো বাড়ি এসে তোর খোজ নিয়ে গেলো। নিশাত দৌড়ে হাপিয়ে গেছে। শান্ত হয়ে বলল, আর বলিস না। আজকে পূর্বপাড়াকে গো হারান হারাইছি। একেবারেই তিনটা গোল দিয়ে হারাইছি। আরমান উৎফুল্ল মনে বলল, কিরে গোল কি সব তুই দিলি। নিশাত বলল, আরে না, সব কয়টা ঐ যে লোকমান ভাইরে চিনোস না, ওয় দিছি। আরমান বলল, বাদ দেয়, তোর মা আজকে তোরে ভালো কইরা খেলাইবো নে। বাড়ি যা। নিশাত আর কিছু না বলেই বাড়ি দৌড় দিলো। বাড়ির পিছনে এসেই থমকে গেলো নিশাত। কি বলবে মা’র কাছে। যদি শোনে ছুটি শেষে বাড়ি না এসে খেলেছি, তাহলে মা তো ইচ্ছেমত বকবে, মারছে। নিশাতের অনেক ভয় হচ্ছে। তাই বাড়ির পিছনে দাড়িয়ে পড়ল। এদিকে বাড়ির পিছনের রাস্তা দিয়ে নিশাতের চাচী আম্মা বাড়ি যাচ্ছিল। নিশাত একটু আড়াল হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার আগেই নিশাতের চাচীআম্মা দেখে ফেলল, আর বলল, কিরে নিশাত ঝোপের আড়ালে কি করিছ? নিশাত মনে ভয় নিয়ে বলতে লাগল, না চাচী আম্মা কিছু না। তুমি কোথায় থেকে এলে? চাচীআম্মা বলল, আর বলিস না, ওই বৃষ্টিকে নিয়ে তো প্রতিদিনই ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কি যে হলো মেয়েটার।


তুই এখনো স্কুল জামা পড়ে আছিস কেনো রে? নিশাত বলল, না এমনিতেই। তুমি বাড়ি যাও। চাচীআম্মা বলল, না না তুই মনে হয় আজ স্কুলে যাছ নাই! চল বাড়ি চল। নিশাত বলল, না তুমি যাও, আমি পড়ে আসছি। এ বলে চাচী চলে গেলো। এদিকে নিশাতের মা অনেক খোঁজ খবর নিয়েও নিশাতের খবর না পেয়ে একলা ঘরে বসে চোঁখের পানি ফেলছে। চাচীআম্মা বাড়ি এসে দেখে নিশাতের মা নিরবে ঘরে বসে বসে কাদঁছে। চাচীআম্মা নিশাতের মার কান্না দেখে বলছে, কি গো কাদঁেছা কেনো? নিশাতের মা বলল, ছেলেটা যে এখনো বাড়ি ফিরলো না গো। সেই সকালে গেছে? কোথায় গেলো, কি খেলো কে যানে? নিশাতের চাচীআম্মা বলল, কই আমি তো ওকে দেখে আসলুম, পিছনের রাস্তায় ঝোপের ধারে। আমাকে দেখে লুকানোর চেষ্টা করছে। এ কথা শুনে এক দৌড়ে নিশাতের মা বাড়ির পিছনে দৌড় দিলো। গিয়েই নিশাতের গালে দুই দুইটা থাপ্পর বসালো। আর বুকে ঝরিয়ে কেদে দিলো। নিশাত ও কেদেঁ দিলো। নিশাতের মা একটু কান্না থামিয়ে দিয়ে বলল, সারাদিন কই ছিলি? জানিস তোর জন্য কত টেনশনে থাকি আমি। সারাদিন কি খেলি বাবা? কোথায় ছিলি বল? এতো ঘামিয়ে গেছোত কিভাবে? নিশাত কোনদিন মার সাথে মিথ্যা কথা বলতে পারে না। তাই আজই বললো না। মার একগাধা প্রশ্নের উত্তর দিতে বলল, মা ছুটি শেষে ফুটবল খেলেছিলাম। নিশাতের মা আবার বলল, বলে যেতে পারতি বাবা! তুই বাড়ি না আসলে যে আমার খুব টেনশন হয়



.......
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৪৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×