দাদাবাড়ীর কাছে হওয়ায় মাঝে মাঝেই যেতাম সুন্দরবনে। বালক বেলায় দাপিয়ে বেড়াতাম খালে, নদীতে। কখনো সাতঁরানো, কখনো মাছ ধরা আবার কখনো বা নৌকা চালানো। জীবনের বেশ খানিকটা সময় চলে গেছে সুন্দরবনের স্বরনখোলা রেঞ্জে।
সেই স্বরনখোলা রেঞ্জে গিয়েছিলাম গত ডিসেম্বরে। সাইক্লোন সিডরের পর। চেনা মুখগুলো অবাক হয়ে দেখছিলো আমাকে। সবার চোখে সাহায্যের আকুতি। জিজ্ঞাসা, কি করছো আমাদের জন্য? সঙ্গের বিদেশৗ ফটোগ্রাফার সাটার টিপে চলেছিলো অনবরত। ওর কাছে সেই দৃশ্য বড়ই অপরিচিত, বড়ই অচেনা।
জীবন যুদ্ধে বেঁচে যাওয়া সেই চোখগুলো এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় আমাকে। একজন সাংবাদিক হিসেবে কিইবা করার ছিলো আমার। চোখে সামনে যা দেখেছি লিখে চলেছি। পরিচিতদের অনুরোধ করেছি ওদেরকে সাহায্যের জন্য। নিজে যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি। স্মৃতিতে জমে থাকা ছোটবেলার ল্যান্ডস্কেপগুলোর সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করেছিলাম সিডর পরবর্তী স্বরনখোলাকে। কিন্তু ব্যর্থ আমি, কিছুর সঙ্গেই মিলছিলো না কিছু ...
সিডর পেরিয়েছে প্রায় পাঁচমাস। এবার অ্যাসাইনমেন্ট নার্গিস। গত দেড় সপ্তাহ ধরে কাজ করছি মিয়ানমার নিয়ে। মাঝে মাঝেই চোখে জল এসে যায় লিখতে গিয়ে। অনুভব করতে পারি দুর্গতদের কষ্ট, বেদনা আর বাঁচার আকুতি। কিন্তু কিইবা করার আছে আমার? ছক বাধাঁ সাংবাদিকতায় বন্দী আমি। লিখে চলেছি নার্গিস নিয়ে, প্রতি দিন নতুন নতুন আঙ্গিকে, আগের দিনের চেয়ে ভালো করার প্রত্যয়ে। মনে ক্ষীন আশা, যদি আমার লেখা কিছুটা সাহায্য করে ওদের, কিছুটা ...
প্রকৃতি এখন বেশ বিরুপ বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের জন্য। যেকোন সময় আঘাত হানতে পারে সিডর বা নার্গিসরা। আর যখনই আঘাত হানবে তখনই এগিয়ে আসবে পশ্চিমা বিশ্ব। খাদ্যের জন্য হাহাকার উঠবে দুর্গতদের মাঝে। মারা পড়বে হাজারে হাজার। এই বাস্তবতা কি পরিবর্তনের কোন উপায় নেই? ক্লাইমেট চেইঞ্জ নিয়ে এতো যে হৈচৈ, সেটার কি কোন সমাধান নেই? নাকি সর্বক্ষন মৃত্যুর মুখে থাকবে ওরা, আমরা, সবাই ...
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০০৮ রাত ৯:২৬