এ শহরে জীবন যেন বাজারে কেনা সস্তা ও সহজলভ্য পণ্য। ঘর হতে বের হলেই নিজেকে জানান দিই, এটাই বুঝি শেষ যাত্রা! আজ দুপুরে খবরটা শুনেই চমকে উঠলাম। পরে বিস্তারিত শুনে বুঝলাম আমরা কতটা অনিরাপদ রাজধানী ঢাকায়।দুই বাসের মাঝে পড়ে রাজীবের কাটা হাতটা এখনো তাজা স্মৃতি। প্রতিদিনই সড়ক দূর্ঘটনার খবর পাই মিডিয়ার কল্যাণে।
আজ রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩ জন। নিহত দুজন আবদুল করিম ও দিয়া খানম ওরফে মিম শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যানুযায়ী, গত ছয় মাসে দেশে ২৮৬০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা ৩ হাজারেরও বেশি এবং আহতের সংখ্যা ৮৫২০ জন। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক! প্রতিদিনই আমরা ঘর হতে বের হই জীবনটা হাতের মুঠোয় পুরে। কি দোষ ছিলো প্রানোচ্ছল তরুণ-তরুণী মিম ও করিমের? এ শহরে বাস করাটাই কি তাদের অপরাধ? যাতায়াত ব্যবস্থায় চরম অব্যাবস্থাপনা। লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালকদের দেৌরাত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমরা সাধারণ মানুষ যেন তাদের কাছে জিম্মী। ফলশ্রুতিতে এমন দূর্ঘটনা ও অকালে মৃত্যুকে আলিঙ্গন।
ধিক্কার জানাই এ শহরের অধিকর্তাদের। যারা জননিরাপত্তাকে তুচ্ছ ভেবে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে চলে। কাজের কাজ কিছু নেই, মুখে বড় কথা বলে।
সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতদের জন্য শোক ও আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি। নিহতদের পরিবার ও আপনজনদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আজ তাদের জায়গায় আমিও হতে পারতাম ভূক্তভোগী!
রাষ্ট্র কি পারবে শোক জানাতে? বাসচালক নামক দৈত্যদের বিচার নিশ্চিত করতে???
আর কত, আর প্রাণ সড়কে ঝড়ে পড়বে অকালে? আর কত মায়ের বুক খালি হবে? সড়কে মৃতু্যর মিছিল থামাতে হবে। আসুন, ভাই, বন্ধু, সহযাত্রী, পথচারী। প্রতিবাদ করুন, প্রয়োজনে ব্যাবস্থা নিন।
রাষ্ট্রের অধিকর্তারা অন্ধ! তারা বেতন কামায় আমার আপনার গা ঘাঁমানো টাকায়। বিনিময়ে সেবা, জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের কথা আমাদের। তার নমুনা কি এটাই? ঘর হতে বেরোলেই শবযাত্রা!!! ধিক্কার।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৫৪