পৃথিবীটাকে আমরা আমাদের নারকীয় কাজ কর্ম দ্বারা ক্রমশ নরকে পরিণত করছি। একে অন্যকে ঠকাই। চলে ঠকানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ যায় না কেউ। ডাক্তার ঠকায় রোগিকে, শিক্ষক ঠকাই শিক্ষার্থীকে, বিক্রেতা ঠকাই ক্রেতাকে, স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে। সন্তান বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে ঠকাচ্ছি। সরকার ঠকাচ্ছে জনগণকে। পৃথিবী জূড়ে চলছে ঠকানোর প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় কেউ হারতে চায় না। এই ঠাকানোর শেষ নেই কোন।
মিথ্যা বলি প্রতিনিয়ত। মার সাথে মিথ্যা বলি। বাবার সাথে মিথ্যা বলি। শিক্ষকের সাথে মিথ্যা বলি। মিথ্যা বলি ভাইয়ের সাথে, বোনের সাথে। সবার সাথে।
বাবা মা জানে তাঁদের সন্তানটি রাত জেগে পড়ালেখা করছে। অথচ আমরা যে পাবজি খেলি আর পর্ণ দেখি মা বাবা তা জানে না।
বাসে উঠতে গেলে যৌবনা মেয়েটির গা ঘেঁষে দাঁড়াই। পার্কে গিয়ে প্রেমিকার নরম স্তনযোগলে হাত দিই, তার ঠোট চুষি। প্রেমিকাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলে ভাব দেখিয়ে ওয়েটারকে পাঁচশো টাকা বকশিশ দিই। আর বাড়িতে আমাকে প্যাডেল ঘুরিয়ে যে রিকশাওয়ালা চাচা নিয়ে এলো তাঁকে দশ টাকা কম দিই বা কম দিতে তর্ক করি।
.
যে যত কিছু করি। কেউ না দেখলেও একজন সব দেখছে। তার কাছে এর জবাবা একদিন দিতে হবে। কি জবাব দিব? সঞ্চয়ে পুণ্যের কোন অস্তিত্ব নেই। যা কিছু আছে তা পাপের তুলনায় নগণ্য। পাপ কিঞ্চিত পুণ্যকেও পুণ্য হতে দেয়নি।
এগুলো যখন ভাবনায় আসে তখন আমাদের বিবেকের আগুনে পুড়তে হয়। এই আগুন থেকে কারো রক্ষা নেই। বিবেকের আগুনে পুড়লেও অভ্যাসের দাস হয়ে যাবার কারণে পাপ কর্ম করতেই থাকি। শয়তানের জালে আমরা এভাবেই আটকা পড়ে আছি। চাইলেই মুক্ত হওয়া যায় না উপরওয়ালার সাহায্য ব্যতীত। আমরা পথভ্রষ্ট। পথ দেখানোর মালিক উপরওয়ালা। আমরা দিল খুলে তার কাছে পানা চাই। রহমত এর মাস, মাগফিরাতের মাস, নাজাতের মাস রমজান মাসকে আমরা কাজে লাগাতে চেষ্টা করি।
একটা কবিতা বা গজল লেখার চেষ্টা করলাম। কবিতার অতশত নিয়ম জানিনা। ছন্দ মিলাতেই জানি কেবল।
.
দিকহারা অন্ধ পথিক আমি
পথ দেখাবে কে?
সে সাধ্যই বা আছে কার?
কুচক্রীর জালে আটকা আমি
মুক্ত করবে কে?
সে সাধ্যই বা আছে কার?
অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি আমি
আলোয় আনবে কে?
সে সাধ্যই বা আছে কার?
বৈঠা নাই, মাঝি নাই এমন নৌকায়
ধড়ফড় করছি একা আমি মাঝ দরিয়ায়
বল কে বাঁচাবে আমায়?
বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও এই গোনাহগার বান্দারে
বাঁচাও মোরে হে প্রভু
যদিও আমি পাপীতাপী তবু
তুমি ছাড়া কে পারে বাঁচাতে নিখিল জগৎ সংসারে?
দাও দাও দাও তোমার দয়ার কুদরতি হাত বাঁড়িয়ে
দিকহারাকে পথ দেখাও সীরাতুলে মুস্তাকিম
তুমি যে দয়ার সাগর, দয়ালু অসীম
কুচক্রী জাল হতে মুক্ত কর মোরে কুচক্রীকে তাড়িয়ে
জ্বালাও জ্বালাও জ্বালাও তোমার নূরের আলো
পড়ে থাকরে চাই না আর অন্ধকার জগতে
আলোতে টেনেও নাও মোরে তোমার ঐ রহমতে
আর অন্ধকার দূর করে দাও, মুছে দাও মনের কালো
।
তারিখ: ২৩-০৫-২০১৯
[ভুল ত্রুটি মার্জনীয়]
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৯ রাত ১:২৫