somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অাসিফ হাসান
ভালোবাসি ঘুরে বেড়াতে। লিখতে ভালোলাগে।ভালোলাগে ভিডিওধারণ করতে ও ছবি তুলতে।নিজের প্রতি আমার বিশ্বাস অবিশ্বাস করার মতন!ভবের হাটে নিজেকে কেষ্ট-বিষ্টু সস্বীকৃতি দিয়েছি। প্রতিদিন নিজের ভেতর নতুন আমিকে উপভোগ করি। খুশশুকরিয়া।

ভোর সকালে চটি জুতো বিরম্বনা !!

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সকাল বেলার বাতাস নাকি নূরানী বাতাস!তো সেই বাতাস গায়ে লাগাতে আর মাঝে মাঝে হা করে একটু একটু গিলতে সকালে হাটতে বের হয়েছিলো আসিফ।যে চটিজুড়ো আসিফ পড়ে বেড়ায় সেটা এবার তাকে বেশ ভালো সার্ভিস দিসে।গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ছেড়া একটি ৫০০ টাকার নোট কোন ভাবে বিক্রেতাকে ধরিয়ে দিয়ে ১২০ টাকা দাম দিয়ে কিনেছিলো কুরবানীর ঈদের আগে।তারপর অবশ্য দুই বন্ধু দূইবার পেছন থেকে পাড়া দিয়ে প্রথম বার বাম পায়ের এবং দ্বিতীয় বার ডান পায়ের চটিটা ছিড়ে ফেলেছিলো।১০ টাকা খরচ পড়েছিলো সেলাই করাতে গিয়ে।দ্বিতীয় বার যে ছিড়েছিলো সেলাইয়ের খরচ টা তার কাছ থেকেই আদায় করেছিলো আসিফ !দিন রাত ভালোই হাটছিলো চটিজোড়া পায়ে দিয়ে।সম্ভবত এই চটিজোড়া পায়ে দিয়ে খুব অল্প দিনে বেশী পথ হেটেছে সে।ফাকা বিকেল বেলাগুলোতে সোরওয়ার্দী উদ্যান রমনা পার্ক শাহবাগ সায়েন্স ল্যাব নিউ মার্কেট কমলাপুর বাসাবো বলতে গেলে এত বেশী সার্ভিস দিচ্ছিলো যে হাটতে হাটতে জুতোর তলা ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়তে শূরু করেছিলো।তার পড়েও আসিফ নতুন চটি কেনে না।বাসা থেকে চটি কেনার জন্য টাকা নিয়ে ইতিমধ্যে একবার সে খরচ ও করে ফেলেছে!যাই হোক আসিফের আজ ইচ্ছে হলো চটিজোড়া পড়ে সকাল বেলা রমনা পার্কে যাবে হাটতে।যেই ভাবা সেই কাজ সকাল ৬ টায় হাটা শূরু করলো সে আসলেই শহর হলেও সকাল বেলার বাতাসে কোন বিষ মনে হয় থাকে না।এটাকে বিশুদ্ধ বায়ু বলা যায় আর আস্তে আস্তে বেলা যত বাড়ে বায়ু পরিনত হয় বিশুদ্ধ বিষে।আসিফ হাটছে একা হাটছে না সাথে অনেক মানুষ শত শত মানুষ কেউ হাটছে কেউ দৌড়াচ্ছে।সবার পায়ে কেটস্,কেউ পড়েছে সাদা কেউ কালো আবারো কেউ রঙিন জুতো পড়ে হাটছে।
অন্যান্য দিনে আসিফ ঐ দিকটাতে হাটতে গেলে বেইলী রোড টাকে এড়িয়ে অন্য কোন চিপা চাপা গলি দিয়ে রমনায় যায় কারন তার ধারনা বেইলী রোডে সবাই প্রেম ভালোবাসা করতে যায় মাঝে মাঝে একটু বেশী অন্তরঙ্গ কাজ কাম ও করে!রাস্তাঘাটে এসব অন্তরঙ্গ কাজকাম তার জঘন্য লাগে ।সে মনে করে যদি সেও এ রাস্তা হাটার জন্য হলেও ব্যবহার করে তাহলেও ছেলে পেলেরা মনে করবে সে ঐ একি প্রেম ভালোবাসা কামকাজ করতে এই জোয়গায় আইসে।আসলে সে একটা অদ্ভুত জিনিস ও খেয়াল করসে আসলে রোডটার নাম নাটক রোড আর কাজ কাম ও সব আজকালকার নাটকের কাহিনীর মতোই!
কিন্তু এই সকাল বেলা সে এই রাস্তাটাকে আপন করে হাটা শুরু করলো অনেক মানুষ হাটছে আসিফ ও হাটছে।আজকে বেইলী রোডটা একটু বেশী মায়াবী মায়াবী মনে হচ্ছে।রাস্তার দুইপাশের নামী দামী শপিং সেন্টার,খাবারের দোকান গুলো বন্ধ।রাস্তার দুইধারে দাড়িয়ে বসে থাকা কোন সুন্দরী রমনী কিংবা বাইকার স্মার্ট ছেলেদের ও দেখা যাচ্ছে না।সবাই হাটছে একটু সামনে এগোতেই ‍ভিকারুন্নেসা স্কুলোর সামনে দিয়ে যাওয়া রাস্তাটা অনেক উৎসবমুখর লাগছে রাসতার দুপাশেই জটলা পাকানো ভিড় লেগে আছে বিকেল বেলায় যেভাবে লেগে থাকে তার চেয়েও বেশী!এখানে তুলনামূলক ভাবে বেশী মানুষ।রাস্তার দুইপাশে বসে আছে অনেক মানুষ তারা হাটার জন্য আসে নি এখানে তারা এখনে বসে খাকতে এসেছে এখানে।সবজি ওয়ালা,মাছ ওয়ালা,ফল ওয়ালা,পিঠা ওয়ালা সহ নানান রকমের নানান পেশার মানুষ তাদের জিবীকা ‍নিয়ে রাস্তার দুই পাশে বসে আছে।হাটতে আসা মানুষ গুলোর অনেকেই তাদের থেকে মালপত্র কিনছে।নাটক স্মরনীর আসল নাটক মন্চস্হ হচ্ছে !আর আসল নাটক স্মরনী দেখতে হলে আপনাকে সকাল বেলা আসতে হবে এখানে!
হাটতে হাটতে দেখতে দেখতে আসিফ রমনা পার্কের গেইটের কাছাকাছি সাবধানে রাস্তা পাড় হয়ে পার্কে ঢুকার আগে একটু ভেবে চিন্তে নিচ্ছে সে !!এর আগে সকাল বেলা সে রমনায় আসে নি।পার্কে যারা ব্যায়াম করে তাদের অঙ্গ ভঙ্গি আসিফের ভালোই লাগে এর আগে বিকেল বেলা হালকা পাতলা দেখেছে সে!পার্কে সব বয়সী লোক বিভিন্ন কায়দা আর অঙ্গ ভঙ্গি করে ব্যায়াম করে যদিও ব্যায়াম সকল মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।কেউ ব্যায়াম করতে আসে ভুড়ি কমাতে,কেউ আসে যৌবন ধরে রাখতে।কিন্তু ব্যায়ামের নানান মুদ্রা দেখে আসিফ মুগ্ধ হয়ে মনে মনে হাসে!এগুলো একপ্রকার তামাশা মানুষকে সুস্হ রাখে যে তামাশা।এটা তার ভালো লাগে।মূলকথা আসিফ রমনা পার্কে এসেছে তামাশা উপভোগ করতে!
তো এখন আসিফি প্রায় গেইটের সামনে চলে এসেছে সবাই কেটস জুতো পড়া শুধু আসিফের পায়েই চটি চোখ আড় করে খুজেও চটি পড়া কাওকে আশে পাশে দেখলো না সে।মানিুষের চাপটা একটু বেশী গেইটের সামনে,পার্কের ভেতরেও অনেক মানুষ ব্যায়াম করছে হাটছে দৌড়াচ্ছে।হটাৎ আসিফের মনে একটা ধাক্কা দিলো যদি চটি ছিড়ে যায় তাহলে কি হবে ?যেই ভাবনা সেই কাজ পেছন থেকে অল্প বুড়ো এক আংকেল পেছন থেকে আসিফের ডান পয়ের চটিতে কেটসের পাড়া দিয়ে ধাক্কা দিয়ে কিছু বোঝে উঠবার আগেই পার্কের গেইট দিয়ে ঢুকে পড়লো।আসিফ আর হাটতে পাড়ছে না ডান পা টা নাড়াতে পাড়ছে না।আশে পাশে কোন জুতো সেলাই খানা তো অবশ্যই নাই ! অনেক কষ্ট হচ্ছিলো হাটতে।পার্কের ভেতরে আর প্রবেশ করতে পারলো না।গেইটের সামনে একটা জুতোর দোকান খুজে পেলো কিন্তু সেখানে কোন চটি জুতো ছিলো না!সব কেটস !আশে পাশে কোন রিসকাও নেই !পকেটে যে খুব টাকা আছে তাও না !
হটাৎ খেয়াল হলো পাশেই কাকরাইল মসজিদ।ঢাকা কলেজে যাওয়ার সময় সকাল বেলা দেখতো মসজিদের সামনে দোকান বসে।ভাবলো হয়তোবা ঐ খানে চটি জুতো পাওয়া যাবে।
১২০ টাকা সাথে সেলাই খরচ যোগ করে ১৩০ টাকার চটি আর কতদিন?চটিরও তো একটা জীবন আছে !
রাস্তার পাশে এক কড়ই গাছের তলায় চটি জোড়া পা থেকে খুলে ফেলে দিলো আসিফ।অনেক কষ্ট হচ্ছিলো তার।চটিজোড়া পেছনে ফেলে হাটতে লাগলো কাকরাইল মসজিদের দিকে। তামাশা দেখতে গিয়ে নিজেই তামার জীববস্তুতে পরিনত হয়ে গেলো আসিফ !
আসিফের মনে হতে লাগলো তার জুতোহীন খালি পায়ের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে !!সবাই না তাকিয়ে থাকলেও অনেকেই যে লক্ষ্য করছে ব্যাপার টা সেটা কিন্তু বাস্তবিক ভাবে সত্য !
মসজিদের সামনের রাস্তায় একেবারে শেষের দিকে আসিফ দেখতে পেল জুতোর দোকান !সব গুলো জুতোই তার পছন্দ হয়ে গেলো !!কালোর ভেতরে নীল রঙের ডিজাইন করা মাত্র ১০০ টাকায় একজুড়ো রাবারের জুতো কিনে ফেললো সে !!দোকানী আসিফের পায়ে জুতো না দেখে বেশী দামাদামী করোর সুযোগ দিলো না !দামাদামীর সুযোগ
পেলে ৮০ টাকাতেই পেয়ে যেত !!অবশেষে ১০০ টাকার নতুন জুতো পড়ে আবারো হাটা শুরু করলো আসিফ এবারে তার গন্তব্য বাসায় !!
আসিফ হাটছে আর ভাবছে,
সকালের নাটক স্মরনীতে জীবনের নাটক মন্চস্হ হয় !!
সাথে আরো ভাবছে-
বাসায় গিয়ে সে জুতো জোড়ার ছবি তুলে ফেইসবুকে আপ্লোড করবে !!
-আসিফ হাসান
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×