১৬
ছাইফুল (ফোনে): আরে আশকা তুমি যে কি বল না(প্যানতাতে প্যানতাতে), তুমি বলছো আর আমি আসবো না! হ্যা? আরে কোন চিন্তা করো না, আমি আসতেছি। হ্যা?... শুনিনা তো...কি কতক্ষণ লাগবে? ট্রেন তো আটটায়, ওখে, আমি ৬টার মধ্যে পৌছে যাবো।
বলে ফোন রেখে পিছনে তাকিয়ে দেখে কোমড়ে হাত দিয়ে সরু চোখে রমজান তাকিয়ে আছে, সে দৃষ্টি শান্ত....স্থির...
ছাইফুল: না মানে...কি হয়েছে শোন দোস্ত...তুই বিশ্বাস করবি না
রমজান: কি করে পারলি! কি করলে পারলি, তুই দোস্ত! না তুই আমার দোস্ত না ছাইফুল, আমি তোর জন্য কি করিনি বল! আর তুই!! বলে সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
ছাইফুল: তুই আমার জন্য কিছুই করিস নি, সারাজী্বন শুধু আমার চেহারার খোটা দিয়েছিস!
রমজান: আমি সত্যি কথাই বলেছি এবং বলবো, তুই সত্যটাকে স্বীকার না করতে পারলে আমার কি করার আছে?!
ছাইফুল: শোন রমজান, তাহলে তুই আমার সত্যিটা শোন। এ পৃথিবীতে কোন কিছুই আপনাআপনি চলে আসে না, তাকে জয় করে নিতে হয়। আর যেখানে আশকা সেখানে সেটাকে তুই ২/৪টা প্রেমপত্র লিখে আশা করিস কিভাবে??!! বল!
রমজান: ঠিকই তো বলি, কাছিমের মত চেহারা তোর!
ছাইফুল: কি বললি! আমার জাত ভাইকে অপমান!(খাইয়ালামু) বলে রমজানের উপর ঝাপিয়ে পড়ল।
ছাইফুল রমজানকে মনের মত মারল। রমজান যদিও ফাইটে ভালো (ছিনতাইকারী পিটানোতে অভিজ্ঞ এবং একটা খুনও হতে দেখেছে সে, কম কথা!)কিন্তু যতবারই মারতে যায় ছাইফুল কাছিমের মত নিজেকে গুটিয়ে ফেলে, রমজানের হাত পা দেয়াল টেবিল চেয়ারের উপর যেয়ে পড়ে, আর ফলাফল আহত রমজান।
১৭
বাদর চৌধুরী এখনও আশকাকে দ্যাখে নি, এরকম কখনই হয় নি, সে প্রতিবার বিয়ের আগে তার হবু বউয়ের সাথে সিনেমা দেখতে যায়। এবারের এই মেয়ে অনেক সুন্দরী, সে তাকে পিংগুলির মা বিমার বিয়ের সময় দেখেছিল। অনেক সুন্দর লেগেছিল, যেদিন বাদর জেনেছে জাম্বু তার বিয়ে আশকার সাথে ঠিক করেছে, সেইদিন রাতে তো আশকার সাথে একটা গানও স্বপ্নে দেখলো....যদি বউ সাজো গো, বড় সুন্দর লাগবে গো....
আশকাকে নিয়ে যখন বাদর গভীরভাবে ভাবছিল তখন ছালুর ক্যাচক্যাচানিতে তার ঘোর কাটল।
ছালু: ও ছার, ছার। দ্যাখেন তো আইতে পারলো না বিয়ার খরচপাতি নিয়া পেজগি বাধাইতাছে।
বাদর: ব্যাডা মনডা যে কেমুন লাগে!
কাজী সাহেব (মিরাজ ভাই): আমি অতসত বোজার লোক না! আমি আগে বহুত লোক দেকছি...শেষ সময় আমার টাকা দেয়ার সময় টান পড়ে।
ছালু: আবার কতা কইস তুই, এওই আমারে চেনোস! আগে বিয়া তো পড়াবি!
ছালুর কথায় কর্ণপাত না করে কাজী সাহেব তার টাকা নিয়ে ভ্যানভ্যান করতে থাকলো।
বাদরের ধৈর্য অনেক বেশি, সে এতক্ষণ ধৈর্য ধরে কাজী সাহেবের কথা শোনার পর ছালুকে আস্তে করে বলল, এইডারে বাইন্দে ওই ঘরে ফালায় থো, বিয়া পড়ানোর সময় আনবি।
ছালু: আইচ্ছা, ছার।
১৮
জাম্বু উতফুল্ল হয়ে বলল, দ্যাক বিমা আমি বিয়ার বাজার কইরা আনছি। তোর ননদটা হইল রাজ কপাইল্যা। যা ওরে এই ঘর থিকা বাইর কইরা আন এইহানে।
বিমা নাড়িয়াকে ঘর খুলতে বলল। ঘর খুলে নাড়িয়া ক্রন্দনরত চিকনামিয়াকে দেখে ভূত মনে ওরে আল্লা বলে চিতকার করে জ্ঞান হারালো।
চিতকার শুনে জাম্বু এসে অজ্ঞান নাড়িয়াকে এক লাথি মারে, লাথি খেয়ে নাড়িয়া উঠে বলে, এই দ্যাহেন আশকা বাবী(ভাবী) ভূত হইয়া গ্যাচে, বলে সে দৌড় মারল।
জাম্বু: ওই বাদর, ওই ছালু , ও বিমা কই গেলি???
সবাই হাজির শুধু বিমা বাদে, বিমা হালুয়া তৈরি করছিল, কোথাও গেলে, নাড়াচাড়া না করলে, হালুয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে তাই সে গেল না।
জাম্বু: ছিমড়ি ভাগছে, আমি আগেই কইছিলাম।
ওরা মনে করল চিকনমিয়া আশকাকে পালাতে সাহায্য করেছে।
বাদর চোখ ইশারা করে ছালুকে চিকনমিয়াকে মারার জন্য, ছালু চিকনার কাছে যেয়ে যেই ওর গায়ে হাত দিয়েছে, চিকনা চিতকার করে উঠল, ওরে মাআ, মারেএ, বাবাগো...
ছালু ক্ষেপে যেয়ে বলল, ওই হারামী তোরে কিচু কইছি? ভেলকি দ্যাহাও! না!!?
চিকনাকে একটা কানে চড় মারল ছালু রেগে।
চিকনা মাটিতে শুয়ে, ওরে খোদাতালা বলে চিতকার করতে থাকলো এবং মুহূর্তের মধ্যে চোখমুখ এমনভাবে উল্টিয়ে দিল যেন সে মারা যাচ্ছে।
ওরা ভয় পেয়ে চিকনাকে সবাই মিলে বস্তায় ভরে ড্রেনে ফেলায় দিল।