ক্লাশের বইয়ের বাইরে আমার প্রথম পড়া বই সেবা প্রকাশনীর তিন গোয়েন্দা সিরিজের ভূতুরে সুরঙ্গ। সেটা পড়ি ক্লাশ থ্রিতে পড়বার সময়। এরপর শুধু সেবার ছোট সাইজের বইগুলোতে রাত্রীদিন নিমগ্ন থেকেছি।
.........
বড় বাইন্ডিং এর বই প্রথম পড়েছি ক্লাশ সেভেনে পড়ার সময়। সেই বইটির নাম অনন্ত নক্ষত্র বীথি, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, লেখক -হুমায়ূন আহমেদ। বইটি পড়ার পর আমি স্তম্ভিত হয়ে বসে থাকি। গল্পের নায়কের অনন্তকালের জন্য চক্রে আটকা পড়া এবং সেইসাথে সমস্ত পৃথিবীরও, বিষয়টির জটিলতা বার বছরের বালক আমাকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তোলে। এরকম বই আরও পড়ার জন্য আমি তৃষ্ণার্ত হই।
.........
এরপর পড়লাম হিমু। এত ভাল লাগল যে আমি নিজেকে হিমু হিসেবে কল্পনা করা শুরু করলাম। তারপর একে একে ময়ুরাক্ষী, দরজার ওপাশে, এবং হিমু, হিমুর দ্বিতীয় প্রহর, হিমুর রুপালী রাত্রি, দুই দুয়ারী ইত্যাদি।
..........
হঠাৎ পড়লাম নন্দিত নরকে। যখন জানলাম এটি হুমায়ূন আহমেদের লেখা প্রথম উপন্যাস তখন আমার বিস্ময়ের সীমা রইল না। এরপর পড়লাম নির্বাসন, শঙ্খনীল কারাগার, শ্যামল ছায়া, বহুব্রীহি ইত্যাদি। সাম্প্রতিক পড়লাম দেয়াল, মাতাল হাওয়া, লীলাবতীর মৃত্যু। বলা বাহুল্য হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখকদের একজন।
.........
হুমায়ূন আহমেদের অসম্ভব রকমের পাঠকপ্রিয়তা অনেকের কাছে তীব্র ইর্ষার বিষয় এবং তাঁকে অশ্লীলভাবে অস্বীকার করার প্রবনতা অনেকের থাকলেও বাংলার পাঠককুলের কাছে তিনি চিরস্মরনীয় থাকবেন।
.........
আজ তার মৃত্যুদিবস। এদিনে তাঁর জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে রইল অশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি।