তীক্ষ্মধার কাটারির আঘাতে শক্ত খোলস থেকে বেরিয়ে আসছে সরস কচি তালের শাঁস। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে গলাটা একটু ভেজাতে পথচারীরা ভিড় করছেন তালের শাঁস বিক্রেতার কাছে।
খুলনা মহানগরীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাটসহ রাস্তার মোড়ে, ফুটপাতে কিংবা হাট-বাজারে এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে।
সুস্বাদু তালের শাঁস খেয়ে দিনমজুর থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা প্রশান্তির পরশ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্লান্তি দূর করছেন। আবার কেউ কেউ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য তালের শাঁস নিয়ে ঘরে ফিরছেন।
আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালের শাঁস পাকাতে কিংবা দীর্ঘ সময় তরতাজা রাখার জন্য এসবের প্রয়োজন হয় না। ফলে ভেজালমুক্ত তালের শাঁসের কদর বেশি বলে জানান বিক্রেতারা।
তারা বলেন, একটি তালের পাইকারি দাম ৪ টাকা। খুচরা পর্যায়ে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর শামসুর রহমান রোডে তালের শাঁস বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গরম এখন চরমে। যে কারণে তালের শাঁসের চাহিদাও বেশি। সব ফল পাকাতে কিংবা সংরক্ষণ করতে বিষাক্ত ক্যামিকেল ব্যবহার করা হলেও তালের শাঁসে তার দরকার হয় না।
তিনি জানান, বাগেরহাটের লকপুর থেকে ১শ’ টি তাল কিনেছেন ৪শ’ টাকা দিয়ে। প্রতিটি তাল বিক্রি করছেন ৫-৭ টাকা দরে। একটি তালে দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে। কখনও বড় আকৃতির তালে ৪টি শাঁসও পাওয়া যায়।
গ্রাম থেকে তাল কিনে এনে শহরে বিক্রি করে কয়েক শ’ ব্যবসায়ী জীবিকা নির্বাহ করছেন বলেও জানান নুরুল ইসলাম।
মির্জাপুর রোডে হাঁসুয়া (তালের শাঁস কাটার যন্ত্র) দিয়ে তাল কাটতে কাটতে তালশাঁস বিক্রেতা নজরুল সরদার বলেন, গরমও বাড়ছে, তালের শাঁসের কদরও বাড়ছে। যে কারণে আনার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এবারে তালের ফলন কম হওয়ায় তালের শাঁসের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চড়া মূল্যে এ মৌসুমি ফল বিক্রি করতে হচ্ছে।
তালশাঁস কিনতে আসা আব্দুল্লাহ নামের এক ক্রেতা বলেন, মধুমাসে নানা ধরনের ফল বাজারে উঠছে। যা কিনতে ভয় হয়। সব ফলেই বিষ দেওয়া। কেবল ভালো আছে তালের শাঁস।
প্রতি বছরই বাচ্চাদের জন্য বিষমুক্ত এ তালের শাঁস কেনেন বলেও জানান তিনি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান বলেন, বাজারজাতকৃত বিভিন্ন পানীয় ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার না খেয়ে তালের শাঁস খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারী। দেশি ফলের মধ্যে এটি ভেজালমুক্ত।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮