প্রায় এ লিখাটি নিয়ে ভেবেছি কিন্তু লিখিনি। কারন উপদেশ দিতে ভালো লাগে না। আমি নিজে এমন কেউকাটা কেউ নয় যে উপদেশের ঝুলি নিয়ে হাজির হবো!! তারপরও সব চিন্তা ছেড়ে আসলাম কারন ক'দিন পর পর ব্লগে এরকম নোংড়া ছবি, কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি দেখতে ভালো লাগে না। এটা নিশ্চয় মানবেন বয়সে যত বড় হই না কেন সামহোয়ারে আমি একজন বয়স্ক শ্রেনীর ব্লগার কারন এক যুগ পার করেছি আমি। আর সে দাবী থেকেই আজকের লেখা।
নাম্বার ওয়ান: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিখায়ও বিস্তর আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। অনেকেই উনার লিখা পছন্দ করেন নাই। তাই বলে কি উনি তাদের কলার চেপে ধরে বলেছেন, ওই ব্যাটা আমার লিখা কেন পছন্দ করিস নাই । আমি যা লিখি ব্লগে তা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত, ভালোলাগা, মন্দলাগা। আর এ সব কিছুর পিছনে আছে আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, পারিবারিক শিক্ষা, মানসিকতা, আহরিত জ্ঞান. ইত্যাদি। আর এ লিখাতেই ফুটে উঠে আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, আমার শিক্ষা, আমার মানসিকতা। আমার এ ভাবনার সাথে অনেকেই দ্বিমত করবে আবার অনেকেই সমর্থন করবে। কিন্তু তাই বলে জোর জবরদস্তি করে কাউকে আমার লিখা পছন্দ করাতে যাবো কেন ? আর আমার লিখা ভালো লাগে নাই তাই বলে নোংড়া ছবি ফ্লাড করবো? আমারে মতের বিপক্ষে গেছে তাই কোমর বেঁধে ঝগড়া করবো?
ভাইজানরা/আপুরা, মনে রাখবেন আপনি যাই লিখেন তাই কিন্তু আপনার চরিত্রের বর্হিপ্রকাশ। এখন ধরেন আপনি কারো লেখা পছন্দ করেন না তাই নতুন নতুন নিক খুলে তার পোস্টে যেয়ে ঝাড়লেন। এখন বলেন, এ ঝাড়াঝাড়িতে আপনি কি পেলেন?...... কিছুই না! সময়ের অপচয়, আর এর নোংড়া কাজ করতে যেয়ে নিজের মন মানসিকতাকে কতটা নীচে নামিয়েছেন তা কি আপনি বুঝেন? হয়তো আপনার বয়স অল্প তাই বুঝতে পারছেন না কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে যখন মগজের পরিপূর্ণতা আসবে তখন নিজের কাজের জন্য নিজেই লজ্জা পাবেন।
আমি ধরে নেই এখানে যারা ব্লগ করতে আসে তারা কম বেশী শিক্ষিত। কোন রিক্সাওয়ালা বা কাজের বুয়া ব্লগিং করে বলে আমার জানা নাই। তাহলে এ শিক্ষিত মানুষগুলো কিভাবে এ অশিক্ষিতের মতো কাজ করে? আপনি কি বুঝতে পারছেন আপনি নিজেকেই কোন লেবেলে নামিয়ে আনছেন! আপনি হয়তো নিজেকে খুব চালাক ভাবছেন, ভাবছেন কেউই আপনাকে ধরতে পারবে না। কিন্তু আপনি চরম বোকা, সবাই জানে ও বুঝতে পারে কে বা কারা এ ধরনের কাজ করতে পারে।
যেমন, একজন স্বনামধন্য (!!) ব্লগার একসময় প্রায় আমাকে সহ বেশ ক'জন ব্লগারকে ব্যাক্তিগত আক্রমন করতো। লিখায় উল্টা পাল্টা কমেন্টস করতো। তারপর, এক সময় হারিয়ে গেল। এবং এ হারানো কিভাবে সম্ভব হলো তা ভালোই জানি। কিন্তু সে এ সব নোংড়া কাজ করে নিজেকে কি পেলো? আমাকে বা অন্য কাউকে তাড়াতে পেরেছে ব্লগ থেকে??? পারেনি বরং তারা নিজেরাই হারিয়ে গেছে।
নাম্বার টু: এবার আসি নাম্বার টু ঝামেলা নিয়া। কিছু কিছু ব্লগার দেখি আক্রমানত্বক কমেন্ট করেন। বিশেষ করে নতুন কেউ আসলে তুলোধনু দিতে দিতে প্রায় ব্লগ ছাড়া করেন। কর্কশ সে উপদেশমূলক মন্তব্য অনেকেরই বদহজম হয় এটাই স্বাভাবিক। এখানে আমার একটা কথা আছে, অনেক সময় (প্রায়) নিজের আপন মা-বাবার কাছ থেকেও উপদেশ শুনলেও বিরক্ত লাগে। সেখানে পাশের বাসার আংকেল আন্টির ঝাড়িমার্কা উপদেশ হজম হবে না এটাই স্বাভাবিক। এ ধরনের ঝাড়ি দিয়ে সবাইকে ব্লগছাড়া করার কোন কারন আছে কি?
যার যা খুশি লিখুক, নাচুক, কাঁদুক তাকে শোধরানোর গুরু দায়িত্ব আমাকে কেউই দেয় নাই। শুধু শুধু এ দায়িত্ব মাথা পেতে নেবার কি দরকারটা আছে? যদি কন্সট্রাকটিভ কোন মন্তব্য করতে চান, করুন। কারো কোন জ্ঞানের ঘাটতি মনে হলে তার পূরণ করুন। তবে সেটা অবশ্যই পজিটিভ ওয়েতে। নিজেকে মহাপন্ডিত ভাবেন ভালো কথা কিন্তু অন্যকে ছাগল ভাবার কোন কারন নেই। এখানে যারা লিখতে আসে তারা সবাই কম বেশী যোগ্যতা রাখে বলেই মনে করি।
আবারো বলি, আমরা ব্লগে লিখি, পড়ি, নিজের ভালোলাগা মন্দলাগা শেয়ার করি, আলোচনা করি, কারো দুখে কাদিঁ, কারো সুখে হাসি। এটি একটি অনেক বড় পরিবার। এবং এ পরিবারের প্রতিটি মানুষেরই অনেক কিছুই বলতে গেলে কমন.... আমরা লিখতে ভালোবাসি, আমরা পড়তে ভালোবাসি আর সবচেয়ে বড় কথা আমরা দেশকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকেন সুস্থ্য থাকেন। হ্যাপি ব্লগিং!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৫:৪৮