আজ রাতে তো খেয়েছেন।
কি দিয়ে খেলেন?
মাছ, মাংস, সবজি?
খাবারটা ভালো করে হজম হয়েছে?
অদৃশ্য কোন আবেগে মনে হয়েছে কি খাবারটা গলায় আটকে যাচ্ছে?
আচ্ছা কিছুদিন আগে জিয়াদ নামে একটি শিশু মারা গিয়েছিল
মনে পড়ে সেই কথা?
আজ রাতে তো তার মা ও আপনার আমার বা আমাদের মায়ের মতো রাতের খাবার খেয়েছেন। আপনার আমার বা আমাদের মায়ের মতো কি তার খাবারটা নির্ধিদায় হজম হয়েছে? বাচ্চাটার ছোট ছোট শার্ট পেন্ট বা খেলার গাড়ি গুলো দেখলে কি সেই মায়ের আর বেচে থাকার ইচ্ছে হয়?
খান সাহেব, চৌধুরী সাহেব, ভূইয়া সাহেব আর রহমান সাহেবরা এক সময় যা আল্লাহ, খোদা, ইশ্বর, ভগবানের ভয়ে হোক বা সমাজ সেবার জন্যেই হোক, দান করে গেছে।
তার পরবর্তি বর্তমান প্রজন্ম বা উত্তরাধিকারীরা জনগনের সম্পদ বাপের সম্পদ মনে করে ভোগ করছে।
ঐ যে বিবর্তন বলে একটা কথা আছে না।
তাই আর কি।
আমরা হাজার মাইল উচ্চতার এভারেষ্ট জয় করতে পারি।
পারিনা শুধু ৬০০ ফুট মাটির নিচ জয় করতে।
আমাদের মস্তিষ্ক, অনুভুতি সব আছে। নেই শুধু মনুষত্য।
এতটুকু পড়ার পর আপনি শুরু করবেন জিয়াউর রহমান বা শেখ মুজিবর রহমানকে গালি দেওয়া।
উনাদের নিয়ে লিখতে ভয় হয়।
কেন ভয় হবে না? উনারা তো সত্যিই মহান,
শত্রুর মাঝে থেকেও কেউ একটি দেশের স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠ করা।
"আমি মেজর জিয়া বলছি " কথাটা বলার জন্যে কত সাহস প্রয়োজন ভেবেছেন?
দেখেছেন কোন নেতার ভাষন শুনার জন্যে নিজের ইচ্ছায় মাণুষ ছুটে আসতে?
আমিতো এখনো মহান নেতার ৭'ই মার্চের ভাষন শুনলে শরীরে কম্পন অনুভব করি
শেখ মুজিবর রহমান বা জিয়াউর রহমান নিয়ে ত্যানা প্যাচান কোন সাহসে?
হাজার জনম সাধনা করেও আপনি শেখ বা জিয়া কোনোটাই হতে পারবেন না।
সমালচনা বাদ দিন।
তারা কে কি করেছে এই দোষ খোজা বাদ দিন।
নিজের কথা ভাবুন, আমি কি করেছি তা নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করুন।
ওহ সরি ডুড!!!
আমি তো ভুলে গেছি, আমি -আমরা নিউ জেনারেশন,
আমরা কি করবো?
থাক তবে,
আমাদের কিছু করতে হবে না।
আপাতত অনুভব করুন,
মানুষের কষ্ট, হাসি , কান্না।
ভাইয়া বা আপুরা গার্ল ফ্রেন্ড বা বয় ফ্রেন্ড নামক মানুষটার সাথে রাগ করে ৭০-৮০ হাজার টাকা দামের আই ফোন ভেঙ্গে ফেলেছেন।
কখনো কি ভেবেছেন?
রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা ছেলেটা সারাদিন রাস্তায় কাগজ কুড়িয়ে এক বস্তা কাগজ বিক্রি করে ৮ টাকা পায় না।
অনুভব করুন কোন পথ শিশুকে আপনার ব্যবহৃত একটি পুরনো জামা দিলেও তার ভেতরে ফুটে উঠা খুশিটা।
পেট্রল বোমায় অর্ধ জ্বলা কোণ মায়ের সন্তানের জ্বালাময় কষ্ট।
ছেলের শরীরের দিকে তাকিয়ে থাকা মায়ের অন্তরের ভেতর গুমরানো হাহাকার।
কোন দুঃখি মায়ের বেঁচে থাকার অবলম্বন একমাত্র কন্যাটির দেয়ালে থেতলানো শরীরের দিকে মায়ের তাকিয়ে থাকা দৃষ্টি।
তাজনিন ফ্যশন নামক আধুনিক কোন কয়েদখানায় জ্বলে যাওয়া কোন মায়ের আদরের মানিকের মৃত্যু পূর্ব কষ্ট।
মাঝে মাঝে এসব চিন্তা মাথায় আসলে এদেশে আমাদের অবস্থান বুঝা যায়।
আমাদের সমাজের মাঝে বিশাল এক দেয়াল আছে।কোন ইট বা পাথরের না, স্বচ্ছ আয়নার।
এক পাশের মানুষ গুলো অন্য পাশের মানুষের কর্মকান্ড টেলিভিশনে কোন রিয়েলেটি শো দেখার মতো দেখি।
এই শো দেখা বা দেখার কিছুদিন পর্যন্ত এর রেশ থাকলেও, পরবর্তিতে আর থাকে না
আসুন না সমাজের প্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙ্গে, অন্যের বিবর্তনে বিবর্তিত না হয়ে নিজেই বিবর্তনের একটা সিড়ি তৈরি করি।,
যেটা বেয়ে অন্যরা বিবর্তনের নতুন পথে আগাবে।
নিশ্পাপ হাসি দেখতে চান?
হাজার টাকা বিল আর শত টাকা ওয়েটারকে টিপস্ না দিয়ে রাস্তার সেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পথ শিশুদের কোন টং দোকানে এক কাপ চা আর একটা বন খাওয়ান,
তবে দেখবেন তাদের চোখে সিমাহীন তৃপ্তি আর মুখে নিস্বপাপ হাসির আভা।
এবার এই খুশির তৃপ্তি নিয়ে বাসায় যান।
নিজের রুমে যেয়ে একা বসে ভাবুন
৬০০ফুট, মাটির গর্ত, জিয়াদ, আগুন, চিৎকার, পেট্রল বোমা, পোড়া মাংসের গন্ধ, তাজনিন ফ্যশনের মতো কোন ভবন, ধসে পড়া ফ্লাইওভার, আমি সেজর জিয়া বলছি,
দূর হতে অস্পষ্ট ভেসে আসা আওয়াজ
"যার যা কিছুই আছে তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ুন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
বিবর্ন
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:৩০