বন্ধুদের নিয়ে রাঙামাটি, কক্সবাজার,সেন্ট মার্টিন বা নীলগিরী যাচ্ছেন।দল বেধে আনন্দ নেওয়ার জন্যে,মনকে শান্তি দেয়ার জন্যে ।
হ্যাঁ এখনি তো মজা করার সময় ।
মজা তো অনেক নিলেন।
তবে চলুন না, আজ বন্ধুদের সাথে দল বেধে কোন সরকারি হাসপাতালের মর্গে যাই ,লাশ আর নিস্তব্ধতাই মনের অর্থ খোজার জন্যে ।
কোথাও ব্যান্ড বা গানের অনুষ্ঠান হলেই এক পায়ের উপর দাড়িয়ে যান, যে ভাবেই হোক টাকা জোগাড় করে চলে যান ,গান বা ব্যান্ড দেখতে ।
গানের তালে তালে মাথা ঝাকান আর মনকে গানের মাঝে হারিয়ে ফেলেন।
ভালো ।
তবে একটা কাজ করেন, আজ বিনা টাকাতেই কোন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান।আধা পোড়া, ঝলসানো মানুষগুলোর চিৎকার শুনুন ।সব সময় গান শুনা মনটাকে শোনান সেই আওয়াজ আর বিবর্নতার করুন সূর।
নাক ভরে নিন ডেটলের গন্ধে চাপানো পোড়া চামড়া আর মাংসের গন্ধ .
নিজের দেহের আর পৃথিবীর বিষ্ণনতা বুঝতে পারবেন ।
কেউ কিছু বললেই মন খারাপ করে ,ঘরের দরজা -জানালা বন্ধ করে অন্ধকারে বসে থাকেন, কান্না করেন, একটু নিস্তব্ধতা খুঁজেন নিজের কষ্ট কমাতে।
নিস্তব্ধতা দরকার ?
তবে চলুন ......
এখন থেকে মন খারাপ বা কেউ বকা দিলে আর ঘরের কোনায় না,
কোন শুনসান কবরস্থান বা শ্মশানে যাবেন ।
এক ঘন্টা বা দু ঘন্টা বসে চলে আসবেন ।
কি ভয় হয়??
চিন্তা করেছেন কী? মৃত্যুর পর এই স্হান গুলোই হবে আমাদের ঠিকানা ।
প্রাণের প্রিয়া বা জানু,
বাবুটাকে একদিন না দেখলে বা কথা বলতে না পারলে হৃদয়ের মাঝে সুনামি,হ্যারিকেন আর উল্কা পতন হয়।
সেই বাবুটাই মারা যাওয়ার এক বছর পর কি তার শোকে কবর থেকে কংকালটা তুলে ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখবেন ?'
আমরা নাকি বানর থেকে বিবর্তিত হয়ে মানুষ পর্যায়ে এসেছি ।
এখনো বিবর্তিত হচ্ছি।
আমি বলি শুধু আমরা প্রাণীরা না, আমাদের সাথে থাকা জড় পদার্থ গূৃলোও বিবর্তিত হচ্ছে ।
আমি যে কলম দিয়ে লেখাটা ডায়রিতে লিখছি নবাব সিরাজ উদ দৌলার আমলে কি আমার হাতের কলমটার মতো কোন কলম ছিলো ?
আবার আমি মারা যাওয়ার পর বা শত বছর পর কলমের বাহিক্য রুপটা কি এমনি থাকবে ?
সকাল বেলা চা খেয়েছেন।
চিন্তা করুন তো দশ বছর পূর্বের কাপ আর এখন কাপে অনেক পরিবর্তন হয়েছে নাকি?
পঞ্চাশ ষাটের দশকের মানুষের ব্যবহৃত প্যান্ট শার্ট গুলো খন আপনার সামনে আনলে হাসবেন ।
হ্যা,হাসবেন আর বলবেন ছি এই মগা টাইপের প্যান্ট কেমনে পড়তো ।পুরাই কমেডি।
এখন আপনার কাছে কমেডি মনে হলেও তাদের সময় এই একই প্যান্ট টি হিট ছিলো ।
ঠিক দুশো বছর পর আপনার মোবাইল আর মোবাইলে তোলা নাক বোচকানো , চোখ টেরা সেলফি নামের ছবিটা দেখলেও আমাদের পরের প্রজন্ম এই টাইপ কথা বলবে।
কারন কি জানেন ?
বিবর্তন জিনিসটা সব সময় কুত্সিত ।
বিবর্তনের সময় নামটা ঠিক থাকে ,জিনিসটা না।
সময়ের সাথেই নামের পিছনে থাকা জিনিসটা বিবর্তিত হয়।বিবর্তনের সময় বুঝতে না পারলেও এক সময় তা বুঝা যায় ।
আমরা সর্বদা নতুন কিছু জানার বা জানাতে ব্যস্ত আছি ।
নিজেকে কখনো বুঝেছি?
বুঝার চেষ্টা করেছি?
নিরিবিলিতে বসুন ,ঠান্ডা মাথায় ভাবুন ,
নিজেকে প্রশ্ন করুন , আর উত্তর দিন ।
চোখ দুটি কার?
-আমার ।
হাত দুটো ?
-আমার ।
পা দুটো ?
-আমার ।
হৃদপিন্ড,কিডনি,রক্ত , কার?
-আমার ।
শরীর টা কার?
-আমার ।
আমিটা কে???
হ্যাঁ , কে এই আমি ?
কখনো এই জিনিস বুঝার চেষ্টা করেছেন ??
আমিটাকে আগে বুঝুন ।
তার পর না হয় তুমি , আর তোমাদের বুঝার ধাপে পা ফেলবেন।
মনে রাখবেন , এক অধ্যায় শেষ না করে অন্য অধ্যায় পড়া শুরু করলে ,পরীক্ষার প্রশ্নে অধ্যায়টা কমন আসলেও উত্তর কিন্তু ঘোলাটে থাকে
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫