১. আমার কোম্পানীতে এক বেলচাওয়ালা শ্রমিক(বিষয়ের মর্ম বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহার করলাম) আছে যে দেশে ২০ হাজার টাকার মত পাঠাতে পারে। তার মেয়ে বিবাহযোগ্যা। শুনলাম একটা ছেলের সাথে বিয়ের কথাবার্তা চলছে। ছেলে ঢাকাতে ওয়ার্কশপ-এ কাজ করে বা ওয়ার্কশপ আছে। কয়েকদিন আগে তাকে মোবাইলে বলতে শুনলাম কাউকে(সম্ভবত স্ত্রী) সে বলছে, বিয়ে ক্যানসেল করে দিতে। কারণ, ছেলেরা ২ ভাই গ্রামে এক বাড়িতে থাকে। আর কোন বাড়ি নেই। এত গরীবের কাছে বিয়ে দিতে চায় না সে ব্লা ব্লা ব্লা...
২.আমার এক আপনজনের বিয়ে হচ্ছিল না অনেকদিন। তার পিতা না থাকাতে মামা, খালু ভালো পাত্রের আশায় বার বার বিভিন্ন সম্বন্ধ ফিরিয়ে দিচ্ছিল। কখনো ছেলের চাকুরি, কখনো উপার্জন, কখনো দেনমোহর নিয়ে তাদের সাথে মিলছিল না। তার মামা একদিন বলে বসল, মেয়ে দিয়ে দিচ্ছি সারা জীবনের জন্য, ব্যবসা তো করতেই হবে!!
৩. আমাদের দেশে মেয়ের পিতা মনে করেন, তার কন্যার সাথে যার বিয়ে হবে সে তার মেয়েকে যদি ডিভোর্স দেয়, অথবা দিতে চায় তাহলে মেয়ের বিয়ে টিকিয়ে রাখতে হলে বড় অংকের 'দেনমোহর' ধার্য্য করতে হবে। অর্থাৎ সব যাচাই, বাছাই করে পাত্র ঠিক করার পরও মনের ভেতর সন্দেহ থাকে ঐ ছেলেকে নিয়ে। অথচ যে কোন ভাল সম্পর্কই যে কোন কারণে ভাঙতে পারে। তখন দেনমোহর-ও বিচ্ছেদ ঠেকাতে পারে না...
৪. বর্তমানে ঘরে ঘরে জাতীয় সমস্যা হল বউ শাশুড়ি সমস্যা। বিশেষ করে ২/৩ ভাই এক সাথে থাকলে তাদের স্ত্রীদের মধ্যে ঝামেলা, আর সেখানে পক্ষাবলম্বন নিয়ে শাশুড়ির সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। বিয়ের পর হয় বউ না হয় শাশুড়ি একে অপরকে অপছন্দ করে কোন এক অজানা কারণে। কেউ ছাড় দিতে রাজি নয়। ফলাফল, পারিবারিক অশান্তি। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ছেলেকে যে কোন এক পক্ষকে বেছে নিতে হয়...
৫. তাহলে দেখা যাচ্ছে, ছেলেদের অনেক ঠেকা! বাড়িও থাকতে হয়, ভাল উপার্জনও থাকতে হয়, বড় অংকের দেনমোহর-ও লিখতে হয়, আবার পরিস্থিতির কারণে মা, ভাইকেও ছাড়তে হয়! এভাবে প্রতিটা বিয়ের আগে পরে যদি এসব ঘটনা প্রভাব বিস্তার করে অদূর ভবিষ্যতে বিয়ে নামক সিস্টেমের উপর সবার আস্থা উঠে যাবে। তাই সব পরিবারকেই ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে সম্পর্ক করতে হবে। আর সমস্যা যেহেতু ছেলেদের বিয়ের পরই শুরু হয়, তাই মেয়েদেরকেই কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হবে...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০২