কি পেয়েছেন তিনি? যে রাশিয়ার মানুষের মুক্তির জন্য তিনি আজীবন কষ্ট সয়ে কাজ করে গেছেন, সেই রাশিয়া তেই আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে অশ্লীল শ্লোগান ওঠে - লেনিনের মূর্তি ভাংগো ! ভেঙ্গে যায় সোভিয়েত রাষ্ট্র, লেনিনের মূর্তিও ভেংগে পড়ে । পূজিবাদীরা তাকে ডাকে শয়তান, সভ্যতা ধংসের প্রচেষ্টাকারী । ধার্মিকেরা নাস্তিক বলে উড়িয়ে দেয় তার সকল অক্ষয় অবদান । গুটিকয় যে কয়জন সমাজতন্ত্রের ধ্বজ্জাধারী বেঁচে আছেন, তাদের কীর্তি কলাপ দেখে লেনিন স্বয়ং ধরণীর কাছে প্রার্থনা করতেন দ্বিধা হবার জন্য ।
প্রশ্ন জাগে, লেনিন কি বেঁচে নেই? তার আদর্শ, তার বিপ্লব? সন্দেহ নেই তিনি বেঁচে আছেন । তিনি বেঁচে আছেন, কারন পৃথিবীতে এখনো অবিচার বেঁচে আছে । বেঁচে আছেন কারন এখনো অবিচারের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ বেঁচে আছে ।
তার জন্মদিনে, এই অধমের নিশ্চিত ভালবাসার শ্রদ্ধাঞ্জলীঃ
দীর্ঘজীবী হোন লেনিন
প্রথম মহাযুদ্ধের দিনগুলোয়
সান কার্লোতে ইতালীয় জেলের এক খুপরিতে
কিছু সৈন্য, মাতাল আর চোর যেখানে বন্দী
সেখানে সোশ্যালিস্ট এক সৌনিক কপিং পেন্সিল দিয়ে
আঁচড় কাটল দেয়ালে
: দীর্ঘজীবী হোন লেনিন।
ধূসর খুপরিতে, আবছা কিন্তু বিশাল হরফে
কথাগুলো লেখা ।
জেলারমাশাই দেখলেন, দেখে এক বালতি চুনসুদ্ধ
পাঠালেন এক মিস্তিরি
ছোটো একটা বুরুশে সে চুনকাম করে দিল ওই ভয়ংকর লিপি
কিন্তু সে তো কেবল অক্ষর গুলির ওপরেই বুলিয়েছিল চুন
তাই এখন খুপরির ওপরদিকে চুনেই জ্বলজ্বল করছে
: দীর্ঘজীবী হোন লেনিন।
তারপর আরেকজন এল বড়সড় এক বুরুশ নিয়ে
গোটা দেয়ালে বুলিয়ে দিল চুন
ফলে বেশ খানিকক্ষণ দেখা গেল না কিছু, কিন্তু সকালবেলা
চুন শুকিয়ে যাবার সাথে সাথেই ফুটে উঠল সেই লিপি, আবার
:দীর্ঘজীবী হোন লেনিন।
জেলারমশাই এবার এক খোদাইকার পাঠালেন
হতে তার ছুরি
ছুরি দিয়ে কেটে-কেটে তুলে ফেলল একের পর এক অক্ষর
ঘন্টাটেক জুড়ে
কাজ যখন ফুরোল, খুপরির মধ্যে রইল কেবল
বর্ণহীন
কিন্তু দেয়াল গভীর করে কুঁদে তোলা অজেয় সেই লিপি ।
:দীর্ঘজীবী হোন লেনিন।
সৈনিকটি বলল :এবার তবে দেয়ালটাকেই ভাঙ্গো !
(শিহরন জাগিয়েছিল, জার্মান নাট্যকার ও কবি বর্টোল্ট ব্রেখটের কয়েকটি লাইন । আগে একবার রিপোষ্ট হয়েছিল । )
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১২:১৭