somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফেলুদার তোপসে
নিষ্পত্তি কি সব সময়ে জয়-পরাজয়ে? ময়দানি ধুলোয় তার বাইরেই যে পড়ে থাকে খেলার আসল-নকল গল্পগুলো৷ ময়দানের ঘাস-ধুলো যাঁর প্রিয়তম বন্ধু, তাঁর কলমে অভিজ্ঞতার দস্তাবেজ৷

গভীর রাতে ভীষন কান্না পেলে

২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৃথিবীর এক নির্জন শহরতলির বাদামী শীতের রাতে বসে আছি,এই এই আমি। আমি,মানে আমার এই বোধ।এই রক্ত,মাংস দিয়ে গড়া শরীরের কাছাকাছি থাকা এক অস্তিত্বের বোধ।প্রতিদিন এক নতুন আশঙ্কায় বেঁচে থাকা একটি ক্ষুদ্র মানুষ যে যাকে প্রতি মুহূর্তেই বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে এই জগৎ তোমার উপযুক্ত নয়।তুমি তো হাত শক্ত করতে পারোনি।অনায়াসে কাটিয়ে উঠতে পারোনি সমস্ত বিচ্ছেদ।যে মেয়েটির হাসিতে গোটা শ্রেণীকক্ষ তুমি ভরে থাকতে দেখেছিলে,আচমকা একদিন তুমি দেখলে উঠোনে শোয়ানো আছে তার মায়ের মৃতদেহ।কী বলতে পেরেছিলে সেদিন সন্ধেবেলা তাকে?তুমিও জানো না তোমার হাত পা কাঁপছিল,খুব কাঁপছিল,প্রবল জ্বরের ঘোরে তুমি কেমন প্রলাপ বকে চলছিলে,কেমন হাত পা অসাড় হয়ে আসছিল তোমার, তোমার প্রতিটা শব্দ কেমন সময় পেড়িয়ে চলে যাচ্ছিল সেই কোটি কোটি বছর আগের পৃথিবীর দিকে,সেই আদিমতম মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিল সেই আদিম শব্দ- বিচ্ছেদ?

নিজের হাতে যেদিন পুড়িয়ে ফেললে অতোগুলো ছবি,যাদের দিনের পর দিন যত্ন করেছো,রঙ মাখিয়েছ,রাতের বেলা একবার দেখে ঘুমোতে গেছো,তাদের চোখের সামনে অভাবে জ্বলতে দেখে তুমি জানো তোমার পলক পড়েনি,তোমার পুরনো বাড়ীর ভগ্নাবশেষের পাশে এখনো সেই চিতার কাঠকয়লা পড়ে থাকে, প্রবল শীতে ঠাণ্ডা লাগে না আর তোমার।অনায়াসে পুড়িয়ে এসে ভাত খেয়েছিলে,মায়ের প্রশ্নে জবাব দিয়েছিলে-যেখানে আমার এতবছরের বিশ্বাস করা মানুষ নিজের কথা রাখে না,নিজের কাছে সৎ থাকে না সেখানে আমার এসব কিছুর মূল্য নেই।এসব তোমার নেহাত ছেলেমানুষি।ধৈর্য-হীনতা।কার উপর রাগ করলে তুমি? যে কোনদিন নিজেকেই চেনেনি। কিন্তু তুমি? তুমি তো চিনেছিলে। এই জল বাতাস আগুন দিয়ে তৈরি করা নিজেকে চিনেছিলে তুমি, চিনেছিলে তোমার শব্দদের,তবু…। কোন কোন রাত্রিবেলা মৃত্যুর কত কাছাকাছি চলে যাই,অনুভব করি আমি।জীবন মৃত্যুর এক চমৎকার রেখা ধরে এগিয়ে চলা। ভারতবর্ষ এক চমৎকার রাষ্ট্র শক্তি হবে,কলকাতা এক মৃত শহর হিসেবে নিজে করে তুলবে আরো আরো মসৃণ এবং সকলে আমরা মহানন্দে উৎসব করতে করতে গলা টিপে ধরব গাছেদের, তারপর কয়েকটা লাল, হলুদ, সোনালি বোতামের খেলায় উড়িয়ে দেব আমাদের পারমাণবিক মুণ্ডুগুলি।মুণ্ডহীন সকল আতশবাজি জ্বালাতে জ্বালাতে নেমে আসব বাগানে।

বৃক্ষহীন বাগান,ফুলহীন,পাখি-হীন বাগান।সেই বাগান থেকে নেমে আসে এক অরণ্য-বালক।তীক্ষ্ণ চোখ তার,আদুর গা, মাথা-ভর্তি ঝাঁকরা চুলে মুখখানি মায়ার।তার উষ্ণ হাতে সে ধরে রাখতে চায় সকলের হাত।সেই মা মরা মেয়েটির হাত,সেই অর্থকষ্টে ভোগা ছেলেটির হাত,সেই যুবতীর হাত যে প্রেমিককে বুক দিতে চেয়েছিল,প্রেমিক ঝলসে নিয়েছে মাংস,চিবিয়ে খেয়েছে। বালক সকলের হাত ধরে থাকে,বলে আমাদের পথ আজ থেকে হবে আগুন,আমাদের পথ আজ থেকে হবে সততা।ধর্ম যেদিন বারুদ হয়ে ওঠে,রাষ্ট্র হয়ে ওঠে জুয়োখেলার মাঠ এবং অনেক অনেক মানুষ যখন আয়না বিক্রি করে দেয় সস্তা দামে তখন সেই বালক হাত ধরে রাখে।আটকে দেয় পেয়াদাদের।শীতের রাতে যে খোঁজ নিতে যায় পুরনো গাছেদের,তাদের শিকড়,তাদের ডালপালা…। যে চিঠি লেখে এখনো পুরনো মানুষদের এমনকি মৃত মানুষদের সাথেও যার চিঠিপত্র আদানপ্রদান প্রবল।

সেই বালককে খুঁজতে আসবে কিশোরী-সততা একদিন।ছুঁতে পারবে না সহজে।একদিন সমস্ত কিছু তুচ্ছ করে আসবে,বুঝবে হৃদয় কেবল মুখের কথা নয়।অনেক বিশ্বস্ত মানুষের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ দিয়ে গড়ে ওঠে হৃদয়।যাকে মানুষ ভালবাসে, সম্মান করে। যে অনায়াসে বুকে টেনে নিতে পারে দুঃখকে। ছদ্ম-মানুষ নয়, আগুন-পাখি।

কিশোরী, গভীর রাতে ভীষণ ভীষণ কান্না পেলে এই পাখির কাছে এসো।


গভীর রাতে ভীষন কান্না পেলে
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×