কয়েকটি হাঁস জোছনায়, ম্যানর পার্কের হ্রদে সাঁতার কাটে, রুপার মতো চাঁদের আলো তাদের শাদা আর বাদামী পালক ছুয়ে গেলে- দূরতম ম্যাপল গাছটি ভাবে, এখন জোছনা আর হেমন্তের শেষপাতাঝরা একত্রে বিষাদ পুষে এনেছে; অথচ সবাই সঙ্গত একা।
গাছটি একা, চাঁদ একা, জোছনা একা, হাঁসেরা পৃথক পৃথক একা; এমনকি যে ঘাসের উপর আমি বসে তার সবুজ আর শিশির ক্রমন্বয়ে একা-
একটি শাদা হাঁস হঠাৎ বিছিন্ন হয়ে হ্রদের মধ্যখানে তাদের নিবাসে ফিরে যায়, আমার বন্ধু যেমন একটু আগে আমাকে পাগল ভেবে একা একা বাড়ী ফিরে গেল, শুধু গুটিকয়েক শীতের বাতাস রেখে। আমি শাদা হাসটিকে আমার ফিরে যাওয়া বন্ধু ভেবে নিই- আমি জোছনাকে হেমন্ত ভেবে আবারও নিবন্ধিত হই আলো অন্ধকারের খেলায়।
হঠাৎ ম্যাপল গাছটি থেকে একটি পাখি ডেকে উঠে, আমি যেহেতু পাখিবিশারদ নই তাই অন্যসব পাখির আওয়াজ থেকে এই ক্রমব্যাথাতুর শব্দকে আলাদা করতে পারি না। আমি শুধু চিনি অস্কার ওয়াইন্ডের সেই বুলবুলিপাখিটিকে তাই এই শব্দটিও তার গান ভেবে কিছুটা মনোযোগ পাঠিয়ে দিই আবছা অন্ধকারের ম্যাপল শাখায়!
দৃষ্টি আর মনোযোগ পাঠানোর পর আমি অত:পর একা হয়ে যাই পুনর্বার- হয়ত এভাবেই মানুষ আর প্রকৃতি পরস্পর সম্পর্ক করে অনাদিকাল; হয়ত নির্জনতার যে হলকা সেখানে একটি হাঁস আর একটি বুলবুলির ডেকে উঠা জোছনার বন্দনাও হতে পারে।
দূরের পাবে একটা মদ্যপ হল্লা। একাকিত্বের ভয়ে একা মানুষেরা সমগোত্রীয় মানুষের গ্লাসে গ্লানি ঢালছে। সবাই পরস্পরেকে বুঝিয়ে চলেছে আমি তোমার সামাজিক পরিক্রমায় একটা দীর্ঘ আক্ষেপ।
রাত বেড়ে চলে, বুলবুলিটির গান অস্পষ্ট হয়ে আসে। জোছনা ফিকে হতে হতে ঢলে পড়ে অস্তাচলে- শাদা হাঁসেরা আর বাদামী হাসেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে হ্রদের মাঝখানের ঝোপে চলে যায়।
আমি শুধু কিছুটা শীতের বাতাস পকেটে পুরে জ্যাকেটের জিপার লাগিয়ে উঠে দাঁড়াই, আমাকে যেতে হবে সামাজিক মানুষজীবনে!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩