বিষন্ন রোদ্দুরে লুকানো শিয়ালটি পার্ক রোডের মাথায় উকি দিয়েছে যখন, তখন শাদা মেঘ আর সহজাত বিনুনীর আলো অবাক হাওয়ায় খেলছিল আকাশময়। তোমাকে আর বেশ কয়েকদিন লেখা হবে না ভেবে হুহু করছিল মন। অপেক্ষার নিকষ নিতম্ব সময়কে যখন বিহ্বল রাখে তখন আমি এরকম রোদ্দুরের দেখা পাই, যদিও লন্ডনে বৃষ্টিমাতাল জলদ খুব বেশি আপ্যায়ন করে না অহেতুক রোদ্দুরকে।
তোমাকে বেশ কয়েকদিন লেখা হবে না ভেবে সান্ধ্যভ্রমণে সঙ্গী খুঁজেছি অবচেতনায়; যার সাথে পথ চলা কিংবা কথা বলার এক আরামদায়ক পান্ডুলিপি প্রস্তুত করে আমি লোকালয়ে নির্বাসিত হবো আবার। তোমার প্রতিটি নখ সংলগ্ন শাদা চাঁদ তুমি সে পান্ডুলিপির ঝরা প্লাবনে পাবে, কালো অক্ষরে!
পার্ক রোডের শিয়ালটি তোমার মতো চুপচাপ। একটু তাকিয়ে রাস্তা পার হয়, আমি ভাবি এই ঝকমকে শহরে অনাহুত এই শ্বাপদ তোমার মতো রঙ কেন পাল্টে আমাকে বিভ্রমে নিয়ে যায়! এ কি অদৃশ্য তমশার বিচিত্র উল্টোশ্লোক!
তুমি যখন শিয়াল হও বিচিত্র বর্ণের অথবা শিয়ালটি সহসা তুমি তখন আমি আসমানের রোদ্দুরে মুখ পেতে কিছুটা আলোর প্রত্যাশায় চোখ উল্টাই, চটচটে স্যালুনের মতো পাতলা বারিপাত তোমাকে লেখা আমার সব গল্প কেড়ে নেয়; যেন শিয়ালেরও খুঁটিনাটি প্রিয়জনের অন্তর্ধানের পরের শর্ত।
বিষন্ন রোদ্দুরে আমি মানুষ খুঁজে ফিরি।
তোমাকে না লেখার ক্ষণগুলো বিচিত্র শেয়াল লুকিয়ে থাকে; তুমি আর শেয়াল যেন রোদ্দুরের স্পষ্ট অনুবাদ- শব্দ আর বজ্রের কবিতাকলা, আমার তন্ত্রপেশির অজাগরণ আর গুরুভোজের পর নেমে আসা অস্বস্তি।
তোমাকে লিখবো না তাই শেয়ালের দেখা পাই নি আর। পার্ক রোডে আমি হেটে হেটে আকাশ সমান জোছনা দেখি আর বিলিন সন্ধ্যায় আরাধনা করি নৈ:শব্দের, যেন আধারের গা ঘেষে নিয়ত বিলি হচ্ছে চুপ হওয়া আকুলতা!
শ্লোক, শেয়াল, আসমান, বৃষ্টি- সব রঙ মেখে তোমার প্রতিবিম্ব এখন। রোদ্দুর শুধু ম্লান জোছনা হয়ে পার্ক রোডে আটকে আছে অচানক সেই ক্ষণের অপেক্ষায়।।
আপটনপার্ক, লন্ডন
১৪.০৪.২০১৮