একেবারেই অল্প বাকি মা!
নো পাপা। আই ডোন্ট ওয়ান্ট। ইটস এনাফ।
এটুকু খেলে আমার লক্ষ্মী মেয়ের কিন্তু মোটেই কষ্ট হত না, জান তো!
আমার কথা শুনে সামান্য অনাগ্রহ সত্ত্বেও মেয়ে রাজী হল খাবার মুখে নিতে। ওকে পাপা, লেট মি ট্রাই, বাট কুড ইউ প্লিজ টেল এ্যা পোয়েম ফর মি?
ঠিক আছে বলছি, তবে বাংলায় কিন্তু!
ওকে স্টার্ট দেন জাস্ট নাও।
আমি একটু ভাবলাম। আশ্চর্য! তেমন কোন কবিতাই তো মনে পড়ছে না এই মুহূর্তে! ‘দুই বিঘা জমি’ তো অন্তত আমার মুখস্তই ছিল! ভুলে গেলাম নাকি!
কিন্তু মনে না পড়লে তো চলবে না! মেয়েকে বলতে যে হবে কিছু একটা! কি করা যায়!
এক ধরনের ইতস্ততবোধে আক্রান্ত হলেও শুরু করলাম বলা, তাৎক্ষণিকভাবে-
“-লক্ষ্মী ভীষণ আমার মেয়েটা যে
কষ্ট মোটে বাবাকে দেয় না যে
এমন মেয়ে যায় দেখা খুব কম-ই
চাঁদের মতো ফুটফুটে একদম-ই-”
ওয়াও! এ্যা বিউটিফুল লিটল গার্ল লুক এ্যালাইক দ্যা মুন- রাইট পাপা?
হ্যাঁ, মা।
বাট ইজ ইট এ্যা পোয়েম? ইটস এ্যা রাইম! ইজ নট ইট?
সবই এক ধরনের কবিতাই মা!
ইনডিড! ওকে দেন। হু রোট ইট পাপা?
আমি এবার বিব্রত বোধ করলাম। খাবারের শেষ অংশটুকু মেয়ের মুখে তুলে দিতে দিতে বললাম, এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয় মা- কোন কবিতা মনে পড়ছিল না তো, তাই আমিই বানিয়ে বানিয়ে বললাম তোমাকে-
গ্রেট! আর ইউ এ্যা পোয়েট পাপা?
না, মা। আমি শ্রমিক।
এ্যা লেইবারার! মেয়ের চোখেমুখে এক ধরনের অনিশ্চিতির চিহ্ন! বাট, ইজ ইট পসিবল ফর এ্যা লেইবারার টু ক্রিয়েট এ্যা পোয়েম?
সম্ভব মা। যারা বাংলায় কথা বলে, তারা প্রত্যেকে অন্তরে কবি হয়!
ইজ ইট! মেয়ের কণ্ঠস্বরে সংশয়।
হ্যাঁ, মা।
ইফ আই স্পিক বাংলা, দেন?
তুমিও অন্তরে কবি হবে মা।
আই ওয়ান্ট টু বি এ্যা পোয়েট পাপা। সো আই মাস্ট- সরি পাপা- আমি নিশ্চয়ই বাংলায় কথা বলব এখন থেকে-নিশ্চয়ই-
মাতৃভাষার প্রতি মেয়ের উৎসাহ, উত্তেজনা দেখে চোখে জল চলে এল আমার। আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম দ্রুত। আমি চাই না আমার মেয়ে চোখের এই জল দেখুক। কারণ, চোখের এই জল সম্পর্কে কোন প্রশ্ন যদি করে আমার মেয়ে, এই মুহূর্তে, তার উত্তর দিতে আমি অপারগ একেবারে!
ছবি: সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:১৮