Bangladesh born Rohingya girl ousted from university
ব্লগে গতকাল "রোহিঙ্গা পরিচয় লুকিয়ে ইউনিভার্সিটি ভর্তি হওয়া ছাত্রীর ছাত্রত্ব স্থগিত" শিরোনামে ১ টি পোষ্ট এসেছে; এই পোষ্টটি লেখা অবধি সেই পোষ্টটি "আলোচিত ব্লগ" পাতায় ছিল; এখন পর্যন্ত ১৮ জন ব্লগার ইহাতে মন্তব্য করেছেন; এঁদের মাঝে শুধুমাত্র ১ জন ব্লগার পুরোপুরি সঠিক মন্তব্য করেছেন, তিনি হলেন, ব্লগার 'বিচার মানি তবে তালগাছ আমার'; স্বয়ং লেখকই ভুল ধারণা দিয়েছেন পোষ্টে!
পোষ্টটির বিষয় হলো: ১৯৯৩ সালে আসা এক রোহিংগা পরিবারের মেয়ে রাহী আক্তার খুশীকে নিয়ে; রাহী কক্সবাজারের রোহিংগা শরণার্থী শিবিরে জন্ম গ্রহন করেছে; সে এসএসসি পাশ করেছে একটি মাদ্রাসা ধরণের একাডেমী থেকে, এখন সে কক্সবাজারের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী; সম্প্রতি, রোহিংগা হওয়ার কারণে রাহীর ছাত্রত্ব স্হগিত করা হয়েছে; এটা অন্যায়; কারণ, রাহী জন্মসুত্রে বাংলাদেশী নাগরিক।
১৮ জনের মাঝে ১৭ জন মন্তব্যকারী ব্লগার, ও স্বয়ং লেখক এই বিষয়টি পরিস্কারভাবে ভাবতে ও বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশের জেল, বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্প, বাংলাদেশের উড়োজাহাজ, বাংলাদেশের সাগরে যেই শিশু জন্ম নেবে, বর্তমান বিশ্বের নিয়ম অনুসারে সেই শিশু বাংলাদেশের নাগরিক। বার্মায় জন্ম নেয়া রোহিংগাদের সেই দেশের নাগরিকত্ব না দেয়ায় যেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সেই সমস্যা কি আমরা বাংগালীরাও অনুশীলন করতে যাচ্ছি?
পোষ্টে একটি বিষয় এসেছে যে, মেয়েটির পরিবার মেয়েটির রোহিংগা পরিচয় লুকিয়ে, তাকে একাডেমীতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করায়েছে, এটা অপরাধ কিনা? না, এটা অপরাধ নয়; বরং, এটা একটা অন্যায় নিয়মের বিপক্ষে একটি সহজ নিরীহ সমাধান। শিশুর অধিকার শিক্ষা লাভ, সেটা থেকে বন্ছিত করার যে কোন আইনই 'ভুল আইন'; ভুল আইনকে সঠিক করার ক্ষমতা নিশ্চয় রাহীর পিতামাতার ছিলো না, বা নেই; সেই ক্ষমতা আছে পার্লামেন্টের, সংসদীয় কমিটির, প্রেসিডেন্টের। রাহীর মা-বাবা তাদের সাধ্যানুসারে শিশুর অধিকার রক্ষা করেছেন। ভুল আইনের পাশ কাটিয়ে যাবার জন্য নিরীহ কৌশল খাটায়েছেন পরিবারটি, এতে দেশ, সমাজ কারো কোন ধরণের ক্ষতি হয়নি; কিন্তু শিশুটির অধিকার রক্ষা হয়েছে, দেশ ও জাতির ভালো হয়েছে; সুতরাং, সেখানে অন্যায় হয়নি, অন্যায় হয়েছে বেকুবী আইনটি করা (যদি এই ধরণের কিছু আসলে থেকে থাকে)।
বাংগালীদের ব্লগিং ২০ বছর অতিক্রম করেছে; এই ২০ বছরে যদি মাত্র ২০ হাজার একটিভ ব্লগার থেকে থাকেন, এঁরা বাংলাদেশের সবচয়ে সৌভাগ্যবান মানুষ, যাঁরা নিজেদের ভাবনাচিন্তাকে যুগোপযোগী করার সুযোগ পেয়েছেন; এঁদের কমনসেন্স'এর লেভেল অন্য বাংলাদেশীদের তুলনায় অনেক বিশুদ্ধ হওয়ার কথা; কিন্তু ফলাফল এখনো হতাশ হওয়ার মতো।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:৫৭