এখনো অখন্ড পাকিস্তানের সমর্থক যারা
--------------------------------------
যারা ইতিহাসের মোটামুটি জ্ঞান রাখে তারা জানে আওয়ামীলীগের সাথে জামায়াতে ইসলামী সংঘাতটা রাজনৈতিক। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ ধর্মযুদ্ধ ছিলনা। রাজনৈতিক কারনে যুদ্ধ ছিল। পাকিস্তান আর ইসলাম সমার্থক শব্দ নয়। পশ্চিম পাকিস্তানীরা তাদের অন্যায়কে জায়েজ করার জন্যে ১৯৭১ এ ইসলামকে ব্যবহার করেছিল মাত্র। পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সহজ সরল ইসলামী দলগুলোকে ব্যবহার করেছিল মাত্র। এই দেশের যে সহজ সরল ছেলেগুলো দেশপ্রেমের কারনে রাজাকার আলবদর আশশামছ বাহিনীতে ছিল তাদেরকে কোন রকম পূর্বো খবর না দিয়ে পাকিস্তানীরা ৯৩ হাজার সেনা নিয়ে জেনারেল অরোরার হাতে আত্বসমর্পন করেছিল।১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরের পরে আনুমানিক ছাত্রসংঘসহ রাজাকার আলবদর আশশামস বাহিনীর তিনহাজার ছেলে গনপিঠুনিতে নিহত হয়েছিল। এই কারনে অখন্ড পাকিস্তানের এদেশীয় সমর্থকদের পশ্চিমপাকিস্তানী ভ্রাতাদের গালে এক মগ প্রশ্রাব উপহার না দিয়ে এখনো অখন্ড পাকিস্তানের সমর্থক থাকা অগ্রহনযোগ্য। পশ্চিম পাকিস্তানের ১৯৭১ এর গনহত্যা সংগঠিত কারীরা কি ইসলামের বন্ধু ছিল? কখনই না।৭১ পরবর্তীতে জুলফিকার আলী ভুট্টো কি ইসলাম কায়েম করেছিল? ৭১ পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনী কি ইসলাম কায়েম করেছিল?
তৎকালীন রাজাকার, আলবদর আশশামস ফোর্স এর সমর্থক দেখলে মেজাজ পুরাই বিগড়ে যায়। অখন্ড পাকিস্তান ঠিক ছিল বললে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ৩০ হাজার বলেন, তিন লাখ বলেন, ৩০ লাখ বলেন মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো মানুষদের মনের কষ্ট ও চোখের পানির ব্যাথা যারা আজও গোর্য়াতুমি করে বুঝলনা এবং স্বাধীনতা বিরোধী দলের নাম ইসলাম থেকেও প্রিয় হয়ে যায় তখন ইসলামের প্রতি ভালবাসা না কমলেও ব্যক্তির প্রতি ভালবাসা কমে যায় অনিবার্যভাবে।
মুক্তিযুদ্ধ হইছিল মুসলমান নামধারী খবিস বর্বর জুলফিকার আলী ভুট্টোর গোর্য়াতুমি ও ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চের রাতে পাকিস্তান বাহিনীর বর্বর আক্রমনের কারনে। আইয়ুব খান র্কতৃক পাকিস্তানের বাঙ্গালী প্রভাবিত ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট সরকারকে অন্যায় উৎখাতের ফলে আইয়ুব ও পশ্চিমা বিরোধী গনরোষ চাঙ্গা হয়েছিল এদেশে।পূর্ববঙ্গের স্বার্থবিরোধী আইয়ুবের ১৯৬৪ এর একপেশে সাজানো মৌলিক গনতন্ত্রের নির্বাচনের কারনে আর ১৯৭০ সালে সাধারন নির্বাচনে জিতারপরও এদেশের তৎকালীন মানুষের প্রানের সংগঠন আলীগকে ক্ষমতায় যেতে না দেওয়ার কারনে । লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ববংগকে আলাদা রাষ্ট না করে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে একীভূত করে দেয়ার ষড়যন্ত্র, ৫৬% মানুষের ভাষাকে মূল্যয়ন না করে লিংগুয়া ফ্রাংকার নামে উর্দু চাপিয়ে দেয়া, আবার সেই উর্দুকে না মানলে ভাষা আন্দোলনকারীদের জাতীয়তাবাদ বলে ইসলাম বিরোধীতার তকমা লাগিয়ে দেয়া সহ পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায়ের বিরোধিতা করে তাদের সাথে পাতানো সংসারকে তিন তালাক মাইরা দিয়া বাংগালী ঠিক কাজটাই করেছিল। বিয়ের পূর্বে প্রেমও ছিল ভালবাসাও ছিল। বিয়েও হইল। সন্তানও হইল। বনিবনা হইতেছেনা। সংসার ঠিকিয়ে রাখার চেষ্টাও করা হইছিল । সংসার ঠিকেনি। সংগত কারনে তালাক মাইরা দেয়া হয়েছে। ইহাতে এই দেশের তরুনদের আফসোস নাই।
রাজাকার গঠন যদি হয় তখনকার দেশপ্রেম আর এখনকার দেশপ্রেম হচ্ছে রাজাকারদের গালি দেয়। এখনকার তরুনরা রাজাকার গালি দেয়া দেশপ্রেম ধরে নিয়েছে। ভাগ্যের নির্মম বাস্তবতা। এর আলোকেই কর্মসূচী প্রনয়ন করলে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। নাইলে ফিউচারে আরো বিপদ আছে। কিছুই করার নেই। বাংলাদেশ পাকিস্তান হবেনা। ভারতও হবেনা। ইতিহাসের যথার্থতার বিচারে বিতর্ক করে খুব একটা লাভ নাই। আমাদের দরকার এই দেশের মানুষকে স্বাধীনতা বিরোধী নাম বর্জন করে ইসলামাইজ করা। পররাষ্টনীতি চেইঞ্জকরা ও ভারত নির্ভরতা মুক্ত করা। অর্থনীতিকে ভারতমুক্ত করা। সামরিকভাবে শক্তিশালী হওয়া। এই গুলা না হওয়াতে তরুনদের আফসোস আছে। পশ্চিম পাকিস্তানীদের জন্যে ও অখন্ড পাকিস্তানের সমর্থকদের জন্যে তরুনদের কোন দয়ামায়া নাই। পশ্চিম পাকিস্তানীদের অন্যায় সমর্থনকারীদের থেকে ইসলাম শুনার ক্ষেত্রেও সিংহভাগ তরুনদের আগ্রহ নাই। এরা ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ দুইটাই ভালবাসে। মুক্তিযুদ্ধ অন্যায় বিরোধিতা করে এদেশের সাধারন জনতার এক ঐতিহাসিক সাহসী যুদ্ধ ।