কয়েকদিন আগে ফেসবুকে পাওয়া একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সামুতে শেয়ার করেছিলাম। সেটার বিষয়বস্তু ছিল 'বাংলাদেশের আগামী রাজনীতিতে ভারতের পরবর্তী নির্বাচনের প্রভাব'। আজকে মাওলানা সাঈদীর মামলার রায় কার্যকরের সম্ভাব্য সময়সীমার বিষয়ে ঐ একই লেখকের আর একটি বিশ্লেষণ শেয়ার করছি।
এই পোষ্টের কোন লেখাই আমার না। মূল লেখক বিভিন্ন সময় পর্ব আকারে এই লেখা গুলো লিখেছেন আমি তাই প্রতিটি লেখার হেডিং এর পর এর প্রকাশকাল উল্লেখ করে দিচ্ছি।
মাওলানা সাঈদীর মামলার রায় কার্যকরের সম্ভাব্য সময়সীমা
***************************************************
জাপানফেরত শেখ হাসিনা যে কার্ডটি খেলবেন, সেটির নাম মাওলানা সাঈদী।
আগামী ১৯ জুনের মধ্যে সাঈদীর মামলার রায় আসছে এবং সেটা ফাঁসির রায়ই। এটাই এ-সময়ের প্রেডিকশন।
ইতিপূর্বে গত ২৭ মার্চেও লিখেছিলাম
"ভারতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষিত হওয়ার আগে সাঈদীর মামলার রায় কার্যকরে সরকার উদ্যোগী হবে না। এটাই এ-সময়ের প্রেডিকশন।
নির্বাচনে কংগ্রেস জিতলে রায় তো কার্যকর করবেই, এমনকি কংগ্রেস হারলেও আওয়ামী সরকার চেষ্টা করবে রায়টি কার্যকরের। কেননা ব্যাপক সহিংসতার অজুহাতে আওয়ামী লীগ যেকোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার এবং বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব সৃষ্টির সুযোগ পাবে। [বিএনপি অবশ্যই সাঈদীর রায় নিয়ে নীরব থাকবে।]
আগামী ১৬ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে আওয়ামী সরকার মাওলানা সাঈদীর বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তটি কার্যকর করবে। এটাই এ-সময়ের "অনুমান"। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।"
আগের পর্ব
প্রকাশকাল: প্রকাশকাল: March 2৮, 2014 at 3:18am
গতরাতে পোস্ট করা একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণে আমি বলেছি:
"আগামী ১৯ জুনের মধ্যে সাঈদীর মামলার রায় আসছে এবং সেটা ফাঁসির রায়ই।"
রায়টি ফাঁসির হবে কিনা, এ-বিষয়ে কোনো কোনো সম্মানিত লেখক দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাই এ-বিষয়ে আমার প্রেডিকশনের কারণগুলো ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন মনে করছি।
১. এটা সত্য যে, সাঈদীর মামলার রায়টি বিলম্বিত করার মাধ্যমে এ-বিষয়ে বৈদেশিক চাপের কাছে আওয়ামী সরকারের কিছুটা নমনীয় হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে মধ্যপ্রাচ্যের ওইসব দেশের কাছে হাসিনা সরকার নতি স্বীকার করবে না। সৌদি আরব বা কাতারের কাছে পাওয়ার মতো খুব বেশি কিছু হাসিনা সরকারের নেই।
২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাওলানা সাঈদী কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর নন। বরং বঙ্গোপসাগরে একটি মার্কিন ঘাঁটিই এ-মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রধান মার্কিন এজেন্ডা। আওয়ামী সরকারের মার্কিন দালাল গওহর-সেলিম-আনোয়ার মঞ্জু এখন এই মিশনেই ব্যস্ত। মাওলানা সাঈদীকে বাঁচানো সেখানে কোনো এজেন্ডাই নয়।
৩. বিজেপি/মোদী যতই হাসিনার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হন না কেন, তাদের কোনো জামায়াতপ্রীতিও নেই। তাই মাওলানা সাঈদীকে বাঁচানোর জন্য বিজেপি/মোদী কোনো আগ্রহ দেখাবে না।
৪. বিএনপি অবশ্যই মাওলানা সাঈদী ইস্যুতে নিশ্চুপই থাকবে।
৫. আপীল বিভাগের যে বেঞ্চে মাওলানা সাঈদীর রায়টি অপেক্ষমাণ সেখানে একমাত্র বিচারপতি ওয়াহহাব মিয়া ছাড়া বাকি চারজনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। সুতরাং ওখান থেকে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের রায় আশা করা খুবই কঠিন।
৬. চেতনার রাজনীতি হলো আওয়ামী সরকারের শেষ খড়কুটা। দিল্লির নির্বাচনের পর ডুবন্ত হাসিনা অবশ্যই মাওলানা সাঈদীকে ফাঁসি দিয়ে চেতনার খড়কুটা আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইবেন।
আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
আগের পর্ব
প্রকাশকাল: March 27, 2014 at 1:35pm
পূর্বাভাস
গত ৭ জানুয়ারি ২০১৪-তে লিখেছিলাম:
মার্চ পর্যন্ত এই সরকার টিকে গেলে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকেও আব্দুল কাদের মোল্লার পরিণতি গ্রহণ করতে হবে। [আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও ন্যায়বিচারক]
এই সরকার যতদিন টিকবে, ভারতের ইচ্ছায় ও মার্কিনের সম্মতিতে জামায়াতের এই তালিকা আরো দীর্ঘ হতে থাকবে। [আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও ন্যায়বিচারক]
মাওলানা সাঈদী-র বিষয়ে আমার প্রেডিকশনটি সঠিক হয়নি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য।
ট্রাইবুনাল থেকে আব্দুল কাদের মোল্লার রায় দেয়া হয়েছিল ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩-তে। আর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় শেষে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল ১২ ডিসেম্বর। অর্থাৎ ট্রাইবুনালের রায় থেকে ফাঁসি কার্যকরে সময় লেগেছিল ১০ মাস ৭ দিন।
অন্যদিকে, মাওলানা সাঈদীর ট্রাইবুনালের রায় হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩-তে। প্রায় ১৩ মাস পার হলেও মামলাটির এখনো আপিল বিভাগের শুনানি শেষ হয়নি।
অর্থাৎ সাঈদীর মামলার আপিল শুনানি ও রায় কার্যকরের গতি কাদের মোল্লার মামলার চেয়ে অনেক শ্লথ। অথচ কাদের মোল্লার ক্ষেত্রেই বরং আপিলের আইন সংশোধন করে আপিল দায়ের করতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। সেই মামলার চেয়ে সাঈদীর মামলার গতি আরো দ্রুত হওয়ার কথা।
তাছাড়া ২৬ মার্চের আগে মাওলানা সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে চেতনার রাজনীতি খেলাটাই ছিল সরকারের জন্য স্বাভাবিক।
কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সাঈদীর মামলার আপিল শুনানির প্রক্রিয়াটি অনেক ধীরে এগুচ্ছে এবং তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চও এখন যুদ্ধাপরাধের বিচার ফেলে পাকিস্তানি পণ্য, পতাকা ইত্যাদি দিয়ে চেতনা উত্থিত করছে।
তাহলে কোন্ পরিস্থিতির কারণে সরকার ও তার চেতনা ব্রিগেডের এই শম্ভুক গতি?
মাওলানা সাঈদীর মামলায় ধীরগতির সম্ভাব্য কারণ
১. মাওলানা সাঈদী হলেন জামায়াতের একমাত্র আইকন, যিনি তাঁর দলের চেয়েও জনপ্রিয়। গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ প্রমুখ দলের উচ্চপদে থাকলেও দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বাইরে এদের কোনো নিজস্ব ব্যক্তি ইমেজ নেই। কিন্তু মাওলানা সাঈদী এক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ব্যতিক্রম। তাঁর ওয়াজের ভক্ত দেশে ও বিদেশে অনেক। বিশেষত আরবের সরকারগুলোতে মাওলানা সাঈদীর অনেক গুণগ্রাহী রয়েছে। তাই জামায়াত স্বাভাবিকভাবেই মাওলানা সাঈদীর জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের লবিং করবে। সেটার কিছু নমুনা ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
গত দেড় মাসে বাংলাদেশে আরব রাষ্ট্রদূতদের গতিবিধি লক্ষ করুন:
গত ১৮ ফেব্রুয়ারিতে কাতারের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আবদুল আজিজ মোহাম্মেদ আল-মানা সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
৫ মার্চে শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ এন এ আল বুসাইরি।
ওআইসির মহাসচিব ইয়াদ আমিন মাদানি ঢাকা সফরে এসে ৯ মার্চে দেখা করেন শেখ হাসিনার সাথে।
এই প্রভাবশালী আরব কূটনীতিকদের সাথে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের কারণ সম্বন্ধে অফিশিয়ালি যাই বলা হোক না কেন, মাওলানা সাঈদীর মামলায় ধীরগতির সঙ্গে এসব বৈঠকের সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
অফিশিয়ালি যেসব ইস্যু জানানো হয়েছে, এসব বৈঠক যদি সেসব কারণেই হতো, তাহলে কাতার ও সৌদি রাষ্ট্রদূতদ্বয় পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার সাথে ফলো আপ বৈঠকে গেলেন কেন? ১১ মার্চ কাতারের রাষ্ট্রদূত ও ১৩ মার্চ সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বসেন খালেদা জিয়া।
২. আপিল বিভাগ মাওলানা সাঈদীর ফাঁসির রায় বহাল রাখলে দেশে ব্যাপক সহিংসতা ঘটবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর, ফাঁসি কার্যকর করার আগে ও কার্যকর করার পরে দফায় দফায় আরো বহু রণক্ষেত্র তৈরি হবে। ৫ জানুয়ারি-পরবর্তী দুর্বল সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি [অর্থাৎ রাজনৈতিক সহিংসতা] নিয়ন্ত্রণে আনা। দেশে-বিদেশে সরকার দেখাতে চায় যে, বিনা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। এ-বিষয়ে সরকার আপাতত সফলও হয়েছে। তাই এখনই সাঈদীর রায় কার্যকরের পথে গিয়ে সরকার দেশে কোনো সহিংসতার ঝুঁকি নিতে চায়নি।
৩. বহির্বিশ্বের হিসেবটিও আপাতত আওয়ামী সরকারের পক্ষে নয়। ভারতে গত ৫ মার্চে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ায় কংগ্রেস কার্যত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে আছে। নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির সম্ভাবনার কথাই বলছেন ভারতীয় রাজনীতি-বিশ্লেষকেরা। এ-অবস্থায় কংগ্রেসের কাছ থেকে ৫ জানুয়ারির আগের পরিস্থিতির মতো প্রবল ব্যাক আপ আওয়ামী লীগ পাবে না। মার্কিন-ব্রিটেন-ইইউ তো মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিরুদ্ধেই। তাই ভারত সরকারের নাজুক সময়টি আওয়ামী লীগ সরকার ক্রিকেট, ফ্ল্যাশ মব, কনসার্ট, দেশপ্রেম ইত্যাদি মদিরা দিয়ে পার করতে চায়। ১৬ মে-তে ভারতের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হবে।
৪. মাওলানা সাঈদীর মামলার রায়টি কার্যকর করাটাই আপাতত সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই রায়টি কার্যকর করতে পারলে গোলাম আযম, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের রায় ধাপে ধাপে কার্যকর করা যাবে। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে, এই সরকার কতদিন টিকছে, তার ওপর। তবে কূটনৈতিক পাড়ার গুজব বলছে, গোলাম আযম, সালাহউদ্দিন কাদের বা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই তিনজনের ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের চাপের কাছে সরকার নাকি ইতিমধ্যে নতি স্বীকার করে ফেলেছে।
আপিল বিভাগে সাঈদীরর মামলার রায়টি কি বদলে যেতে পারে?
না, আপিল বিভাগের বর্তমান গঠনে সাঈদীর মামলায় ট্রাইবুনালের রায়টি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকাটাই স্বাভাবিক।
তবে জামায়াত যদি সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক ইত্যাদি দেশের মাধ্যমে বলিষ্ঠ চাপ প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে আপিল বিভাগে রায়টি বদলে যাবে। এই সম্ভাবনাটি অবশ্য খুবই ক্ষীণ।
আসলে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের ফাঁসির ব্যাপারে মার্কিনের ভূমিকাটি ধরি মাছ, না ছুঁই পানি স্টাইলের। মার্কিনীরা আওয়ামী লীগকে এসব ফাঁসি কার্যকরে মৌন সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে বঙ্গোপসাগরে তাদের মূল চাওয়াটি আদায় করে নিতে চায়।
মাওলানা সাঈদীর মামলার রায় কার্যকরের সম্ভাব্য সময়সীমা
ভারতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষিত হওয়ার আগে সাঈদীর মামলার রায় কার্যকরে সরকার উদ্যোগী হবে না। এটাই এ-সময়ের প্রেডিকশন।
নির্বাচনে কংগ্রেস জিতলে রায় তো কার্যকর করবেই, এমনকি কংগ্রেস হারলেও আওয়ামী সরকার চেষ্টা করবে রায়টি কার্যকরের। কেননা ব্যাপক সহিংসতার অজুহাতে আওয়ামী লীগ যেকোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার এবং বিএনপির সাথে জামায়াতের দূরত্ব সৃষ্টির সুযোগ পাবে। [বিএনপি অবশ্যই সাঈদীর রায় নিয়ে নীরব থাকবে।]
আগামী ১৬ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে আওয়ামী সরকার মাওলানা সাঈদীর বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তটি কার্যকর করবে। এটাই এ-সময়ের "অনুমান"। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
আগের পর্ব
কোন পথে বাংলাদেশের রাজনীতি - ৯
প্রকাশকাল: January 7, 2014 at 10:42am
পূর্বাভাস
গত ৩০ ডিসেম্বর এই সিরিজের ৮ নম্বর কিস্তিতে যা লিখেছিলাম, তার সারমর্ম ছিল:
১. মার্কিনীরা এখনো সুস্পষ্ট কোনো পক্ষ নেয়নি এবং ভারত এখনো আওয়ামী লীগের পক্ষে আমেরিকার কাছে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
২. আওয়ামী লীগের পক্ষেই মাঠে নেমেছে বিশ্বরাজনীতির সবচেয়ে ধূর্ত খেলোয়াড় ব্রিটেন।
৩. আমেরিকা কোনো উদ্যোগ না নিলে বিএনপি জোটের যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে ৫ তারিখের প্রহসনটি হয়ে যাবে।
এছাড়া আরেকটি স্বতন্ত্র শিরোনামের রাজনৈতিক বিশ্লেষণে ৩ জানুয়ারিতে লিখেছিলাম:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি হতে দেবে।
ওপরের প্রতিটি প্রেডিকশনই সঠিক হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি
বাংলাদেশের ইতিহাসের [বিশ্বের ইতিহাসেও] সবচেয়ে বিচিত্র জাতীয় নির্বাচনটি ৫ জানুয়ারিতে হয়ে গেল।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অর্ধেকের বেশি প্রার্থী জিতে যাওয়া, নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি ও জাল ভোটের পরিমাণ - সবই ছিল ইতিহাসের অনন্য সার্কাস।
এই নির্বাচনটিকে এমন প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়ার বেশির ভাগ ক্রেডিট বিএনপি-জামায়াতের ঢাকার বাইরের নেতাকর্মীদের।
আওয়ামী লীগের প্রতি মধ্যবিত্ত শ্রেণির বর্তমান অনাগ্রহ ও ভাসমান ভোটারদের পুরো নির্বাচনটির প্রতিই অনাগ্রহও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
লন্ডন থেকে তারেকের নির্বাচন প্রতিরোধের ভিডিও বার্তাটিও ছিল খুবই কার্যকর।
মিডিয়া লীগের পিঠটান: নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি এতই কম ছিল যে, জনকণ্ঠের মতো নির্বোধ পত্রিকা ছাড়া কেউই এই নির্বাচন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেনি - যদিও জনকণ্ঠও ইনিয়ে বিনিয়ে "ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম" হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
Click This Link
ওই এক জনকণ্ঠ ছাড়া নির্বাচনের পর মিডিয়া লীগের বাকিদের শিরোনামগুলোর অবস্থা দেখুন:
প্রথম আলো: জাল ভোট, কলঙ্কিত নির্বাচন
Click This Link
ইত্তেফাক: জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাইয়ে শেষ হল ১৪৭ আসনের নির্বাচন, অধিকাংশ কেন্দ্র ছিল ফাঁকা
Click This Link
সমকাল: ভোটার কম ... একটিও ভোট পড়েনি ৪২ কেন্দ্রে - আ'লীগের ভোটাররা কোথায় গেল?
Click This Link
কালের কণ্ঠ: ভোটারবিহীন সহিংস ভোটে নিহত ২১
Click This Link
আর ইলেকট্রনিক মিডিয়া তো লাইভ কভারেজ দিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে একবারে দেবযানী/উলঙ্গ করে ফেলেছে। অনেকেই মনে করেন, টিভি চ্যানেলগুলোর সাহসী ভূমিকার কারণেই প্রিন্ট মিডিয়ার আওয়ামী ব্রিগেড বাধ্য হয়েছে পরদিন নিরপেক্ষ নিউজ ট্রিটমেন্ট দিতে।
সিপি গ্যাং এখন কোনোমতে মুখ বাঁচাতে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে প্রচারণায় মেতেছে [অথচ আওয়ামীপন্থী সব পত্রিকার ভাষ্যই এক! নয়াদিগন্ত আর আমার দেশের কথা না-ই বা তুললাম।]
উল্লসিত সরকার: নির্বাচন নিয়ে জনকণ্ঠের মতোই উচ্ছ্বাস সরকারের। সুরঞ্জিত তো উচ্ছ্বাসের চোটে হলেন পৃথিবীর প্রথম ঘৃণ্য রাজনীতিবিদ যিনি প্রকাশ্যে জাল ভোটের পক্ষে সাফাই গাইলেন!
গতকাল বিকেলের প্রেস কনফারেন্সে শেখ হাসিনারও উল্লাস ছিল দেখার মতো। নির্বাচনের আগের ম্লান মুখটি খুশিতে একেবারে তুলোধুনো করে দিল জোটের মিত্র ইনু আর জোটের বাইরের শুভাকাঙ্ক্ষী কমিউনিস্টদেরকে।
নির্বাচনের আগে দ্রুতই একাদশ সংসদ নির্বাচনের যে টোপ শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন, সেটিও গতকাল হাস্যোজ্জ্বল মুখে হয়ে গেল, "আগামী যখন আসবে আগামী নির্বাচন হবে। ...আগামী নির্বাচনের জন্য ধৈর্য ধরতে হবে।"
Click This Link
সরকারের তরফ থেকে দ্রুত পরবর্তী নির্বাচনের মূলাটি এখন আর নেই।
বিএনপি জোট: নির্বাচনের পরপরই তারেক রহমান লন্ডনে এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, "বৈধ যে না, তার সাথে আর আলোচনার কী কারণ থাকতে পারে?"
http://www.youtube.com/watch?v=tZsiUuUE4CI
কিন্তু গতকাল রাতে বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাত্কারে খালেদা জিয়া বলেছেন, যদিও সরকার বৈধ নয়, তবু তাদের সাথে আলোচনার জন্য তিনি প্রস্তত এবং আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
Click This Link
ভারতের অবস্থান: নির্বাচনের পর বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানানোর মতো জনকণ্ঠসুলভ মাতলামিতে ভাসেনি ভারত। বরং মোটামুটি সতর্ক ভাষাই ভারত বলেছে: “এটা (নির্বাচন) ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার অংশ। ...সহিংসতার পথে কোনো সমাধান আসে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে তার নিজস্ব গতিপথে চলতে দিতে হবে।”
Click This Link
নির্বাচনটি অস্বাভাবিক হাস্যকর হওয়াতেই ভারতের প্রতিক্রিয়ায় এই সতর্কতা। আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের সমর্থন কোনোভাবেই কমার ইঙ্গিত নয় এটা।
ব্রিটেনের অবস্থান: বিশ্বরাজনীতির সবচেয়ে ধূর্ত খেলোয়াড় ব্রিটেনকে পাশে পাওয়াটাই আসলে শেখ হাসিনার বর্তমান অতি আত্মবিশ্বাস ও অতি উচ্ছ্বাসের কারণ।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাইয়্যেদা হুসেইন ওয়ারসির নির্বাচনবিষয়ক বিবৃতিটি খুবই গুরুত্ববহ। ওয়ারসি এক্ষেত্রে দ্রুততার সাথে মার্কিনের আগেই [ভারতের পরপরই] নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দেন।
বাংলাদেশের মিডিয়া যে যার এঙ্গেল থেকে ওয়ারসির বিবৃতিটি উপস্থাপন করেছে। আগেও বলেছি, এই ধূর্ত ব্রিটিশরা এমনভাবে খেলে যে আপনি সহজে ধরতে পারবেন না, সে কোন পক্ষের খেলোয়াড়। পল্টি মারার ক্ষেত্রে ব্রিটিশরা এরশাদের ধর্মগুরু হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
ওয়ারসির বিবৃতিটি ব্রিটেনের সরকারি ওয়েব সাইট থেকেই দেখা যাক:
Click This Link
ওয়ারসি একেবারে প্রথম বাক্যেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে বলছেন, "an election called in accordance with Bangladesh’s Constitution." [বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত নির্বাচন]
এর পর ওয়ারসি এই নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে ভোট না-হওয়া এবং বাকি আসনগুলোর নির্বাচনেও কম ভোটারের উপস্থিতিকে disappointing [হতাশাজনক] বলেছেন।
সাথে সাথে তিনি deplore [নিন্দা/ক্ষোভ] প্রকাশ করেছেন, acts of intimidation and unlawful violence [ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বেআইনি সহিংসতা] ও arson attacks on public buildings, including schools and colleges [স্কুল-কলেজসহ সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ]-এর মতো কাজগুলোর জন্য।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দযুগল আছে ওয়ারসির বিবৃতির সেকেন্ড লাস্ট বাক্যে:
"We therefore urge the new government and all political parties to act in line with the interests of the people of Bangladesh." [তাই আমরা নতুন সরকার ও সব রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাই।]
নতুন সরকার গঠিত হওয়ার আগেই "new government" বলে সেই সরকারকে সম্বোধন করাটা আওয়ামী লীগের জন্য বিরাট প্রাপ্তি।
অতি-আশাবাদী কেউ ভাববেন না, অত সাত-পাঁচ ভেবে ওয়ারসি এসব বলেনি! মনে রাখবেন, এরা দিপু মনি না, এরা ঝানু কূটনীতিক!
বিবৃতির শেষ বাক্যটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতবাহী। বাংলাদেশের অনেকেই এই শীতে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে নতুন সরকারের ওপর মার্কিন অবরোধের স্বপ্ন দেখে উত্তাপ নিচ্ছেন। মার্কিনের সেই ধরনের উদ্যোগের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ অবস্থান কী হবে, সেটারই ইঙ্গিত আছে শেষ বাক্যে:
Bangladesh is an important partner for the UK and we continue to support its people in their aspirations for a more stable, prosperous, and democratic future. [বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং আরো স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য দেশটির জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রয়েছে।
"we continue to support" - এই চারটি শব্দের জোরেই শেখ হাসিনা গতকাল প্রেস কনফারেন্সে বৈদেশিক অবরোধের সম্ভাব্যতাকে অত সহজে উড়িয়ে দিতে পেরেছেন।
মার্কিন অবস্থান: উভয় পক্ষেই থাকার মার্কিন অবস্থানটি অপরিবর্তিত রয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তরের নির্বাচন-পরবর্তী বিবৃতিতে:
Click This Link
সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র ম্যারি হার্ফের দেয়া বিবৃতির প্রথম বাক্যটি [ওয়ারসির প্রথম বাক্যটি মাথায় রেখে] লক্ষ করুন, The United States is disappointed by the recent Parliamentary elections in Bangladesh. [বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংসদীয় নির্বাচনে আমেরিকা হতাশ।]
মার্কিনীরা আরো মনে করে, "সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিফলন নয়।"
লক্ষ করুন, নির্বাচনটিকে মার্কিনীরা ভারত-ব্রিটেনের মতো "সাংবিধানিক" বলে আখ্যা দেয়নি।
অর্থাৎ ব্রিটিশদের সমর্থনের পাল্লাটি যেদিকে বেশি ঝুঁকেছে, মার্কিনের সমর্থনের পাল্লাটি তার বিপরীত দিকে [বিএনপি জোটের দিকে] ঝুঁকেছে। তবে বিএনপি জোটকে মার্কিনের এই সমর্থন খুব মারদাঙ্গা প্রকৃতির নয়।
বিবৃতির পরের প্যারাতেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে: While it remains to be seen what form the new government will take, United States commitment to supporting the people of Bangladesh remains undiminished. [নতুন সরকারের রূপ কী হবে, সেটা ভবিষ্যতেই জানা যাবে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার অঙ্গীকার অটুট থাকবে।]
লক্ষ করুন, মার্কিনীরা ব্রিটিশদের মতো করে এখনই এই সরকারকে "new government" বলেনি। তারা বলেছে, নতুন সরকারের রূপ কী হবে, সেটা ভবিষ্যতেই জানা যাবে... তবে "বাংলাদেশের মানুষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার অঙ্গীকার অটুট থাকবে।"
এই পর্যায়ে মার্কিনীরা তাহলে বাংলাদেশে কী চায়?
বিবৃতিতেই আছে সেটা: "immediate dialogue to find a way to hold as soon as possible elections that are free, fair, peaceful, and credible, reflecting the will of the Bangladeshi people." [অবিলম্বে সংলাপ - যার মাধ্যমে যতো শিগগির সম্ভব একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ বের হবে - যেটি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য এবং যা বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।]
আশা করি এখন বুঝে গেছেন, তারেক অনাগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও খালেদা কেন বিবিসিকে সরকারের সাথে আলোচনার আগ্রহের কথা শোনালেন।
জাতিসঙ্ঘ, কমনওয়েলথ, কানাডা, চীনের প্রতিক্রিয়া: জাতিসঙ্ঘ-কানাডা স্রেফ মার্কিন অবস্থানেরই প্রতিধ্বনি করেছে, আর কমনওয়েলথ স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটিশদের কথাগুলোর প্রতিধ্বনি করেছে।
চীন এখনো কিছু জানায়নি, জানালেও কিছু যায় আসে না। বহুবার বলেছি, চীন এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ফ্যাক্টর নয়।
নতুন আওয়ামী লীগ সরকারকে ফেলে দেয়ার কোনো ইচ্ছা, সামর্থ্য বা প্রয়োজন কোনোটাই চীনের নেই।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি
আওয়ামী লীগ: নির্বাচনটি সেরে ফেলতে পারায় আওয়ামী লীগ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। তাদের গঠিতব্য নতুন সরকারেও "পাকা কমিউনিস্ট"-রা মন্ত্রী থাকবেন।
বিএনপি: কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিএনপি সংলাপের পথে আগাবে। ঢিমেতালে মাঠের কর্মসূচিও চলবে। তবে সংলাপ শুরু হলে হরতাল-অবরোধ তুলে নেয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গ: এরশাদকে বুঝতে পারা ব্রিটেনকে বুঝতে পারার মতোই কঠিন।
এরশাদ ও এরশাদের অনুগত জিএম কাদের ব্লক শেষ পর্যন্ত ঠিকই গত নির্বাচনে মাঠে নামেনি।
কিন্তু এখন আর এরশাদ তাঁর ওই অবস্থান টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্বে যাওয়ার পরিণতি এখন এরশাদ ভালোই বুঝছেন।
আগামী ২২ জানুয়ারি মঞ্জুর হত্যা মামলার পরবর্তী শুনানি। সেই শুনানির আগে এরশাদ অবশ্যই সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে বাংলাদেশে কাউকে ফাঁসি দেয়া যে কতটা সম্ভব, সেটা তো এরশাদ জাস্ট গত ডিসেম্বরেই দেখেছেন!
জামায়াত প্রসঙ্গ: আওয়ামী লীগের নতুন সরকারটি টিকে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে জামায়াতই পড়বে।
না, শেখ হাসিনা অবশ্যই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবেন না। সেটা গতকালের প্রেস কনফারেন্সেও স্পষ্ট হয়েছে। [শেখ হাসিনা কেন নিজে জামায়াত নিষিদ্ধ না-করে আদালতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, সেই আলোচনাটি পরে কখনো করার ইচ্ছা রইলো।]
তবে মার্চ পর্যন্ত এই সরকার টিকে গেলে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকেও আব্দুল কাদের মোল্লার পরিণতি গ্রহণ করতে হবে। [আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও ন্যায়বিচারক]
এই সরকার যতদিন টিকবে, ভারতের ইচ্ছায় ও মার্কিনের সম্মতিতে জামায়াতের এই তালিকা আরো দীর্ঘ হতে থাকবে। [আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও ন্যায়বিচারক]
কূটনৈতিক পাড়ায় ঘন ঘন যাতায়াতকারী জামায়াতের একটি অংশও এই প্রক্রিয়াকে "হিকমত"-এর অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছে বলে কূটনৈতিক পাড়ায় কথা চালু আছে। জামায়াতের এই অংশটি দলের প্রশ্নবিদ্ধ ইমেজের নেতাদের "সরিয়ে", এমনকি জামায়াতের নাম পাল্টে রাজনীতিতে নতুনভাবে নামার ছকও কষছেন বলে কূটনীতিক পাড়ায় আলোচনা আছে।
- কাদের সিদ্দিকী, বি. চৌধুরী ও আসম রবের জোট এবং সিপিবি-বাসদ জোট নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে যাবে। তবে "জামায়াত" প্রশ্নে এরা, বিশেষত সিপিবি-বাসদ নিশ্চিতভাবেই সরকারের পক্ষেই থাকবে।
.... .... ....
আকস্মিক কোনো বড় ঘটনা না-ঘটলে, এটাই সম্ভাব্য পরিস্থিতি।
নতুন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পরবর্তী বিশ্লেষণ নিয়ে হাজির হব ইনশাআল্লাহ।
.... .... ....
[বি.দ্র: লেখকের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শ বা ভাবাবেগ দ্বারা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ প্রভাবিত নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ হলো রাজনৈতিক কাঠামো, ব্যবস্থা, দল ও অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে একটি সম্ভাব্য আগাম ভাষ্য।
Click This Link
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ কোনো জ্যোতিষশাস্ত্রের অবৈজ্ঞানিক ভেলকি নয় কিংবা এর প্রেডিকশনগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলাফলের মতো অভ্রান্তও নয়।
আল্লাহই ভবিষ্যতের একমাত্র নিয়ন্ত্রণকারী।]
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ২:০৫