somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতঃপর, আমার ভাগ্য দর্শন আর নেশার মায়াজালে জড়ানো কিছু অন্তিম প্রলাপ !!

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



খুব কৌতুক করে বলতাম, ভাগ্য খেলে আমারে নিয়ে । তখনো আসলে দেখা হয়নি ভাগ্যের খেলা কারে কয় , সে খেলা কতটা যাতনাময় , সে খেলা কি বিভীষিকাময়! আজ জানি, আসলে যখন ভাগ্যটা খেলাটা শুরু করে পুতুলমত মানুষটারে নিয়ে , তার মন-কুঠুরীর অন্তরীণে লুকানো জল রঙ মাখানো মিস্টি জোছনা ধোয়ানো চাওয়া, ঝিলিমিলি স্বপ্ন আর রঙিন আশার ফানুশ গুলো মধু মায়াবী কল্পলোকে ডানা মেলে দেয়.... প্রজাপতির ডানা , বড় রঙিন সে ডানা ...

হরেক রঙের ঝিলিমিলি রূপালি স্বপ্ন-বীজ বোনা থাকে সে ডানায় ,প্রত্যহ সকাল-সাঁঝে সেথায় জোয়ার-ভাটা হয়, শেষ বিকেলের পড়ন্ত আলোয় যেন মন-মহুয়া নতুন কোন সুর গাঁথে, সন্ধ্যার আঁধার ঘনালে সেথায় অযুত তারারা নিযুত কল্পনার মালা গাঁথে, কভুবা হয়ত ছেয়ে যায় মেঘে মেঘে, তারপর আবার সে মেঘমেদুর কল্পাকাশে ঝিলিক দেয় এক চিলতে রূপালী চাঁদ......



আর তারপর ???

তারপর সেই রূপালী চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত জ্যোৎস্না প্লাবিত শিশিরে ধোয়া কাঁচা পথের মিহি ঘাষ মাড়িয়ে শুরু হয় পথচলা ...

কত স্বপ্ন , কত কল্পনা, কত রঙ , কত জল্পনা সব মিলেমিশে মাখামাখি একেবারে – যেন শরতের আকাশে ওড়া একেক্টা মুক্ত ঘুড়ি !
আর প্রতিটা ঘুড়িতেই যেন হরেক রঙের রেশমি সুতায় বোনা হরেক রঙের স্বপ্ন-বীজ!
পাশে যে মানুষটা থাকে , সবগুলো সুতার মধ্যেই যেন মিশে থাকে তার ঘ্রান, মিশে থাকে উন্মাদনা , মিশে থাকে অনুপ্রেরণা ...




কত কল্পলোক, কত ছায়াপথ তখন চোখের সামনে অবারিত উন্মুক্ত হয়ে যায় , ইয়ত্তা নেই ! মহাকাল যেন থমকে দাঁড়ায় একটা মুহূর্ত দুটা স্বপ্নিল চোখের চোখাচোখিতে , গাছেরা যেন হেলেহেলে কি এক নতুন কানাকানি শুরু করে দেয় , রাতের আকাশ ঢালে ছায়া , বনশালিকেরা যেন অকুন্ঠে বিলায় মায়া , নীড় হারা পাখিরা ডানা মেলে দেয় যেন দুটো প্রানের পরে , যেন এতটুকু না লাগে আঁচড় , যেন এতটুকু না লাগে ব্যথা !

আসলে ওই মধু মুহূর্তগুলি এমনই হয় যে , মনে হয় একপলকে যেন না শেষ হয়ে যায় , তখন কোন বাঁধাই যে বাঁধা মানে না, কোন বারন শাষনই যে আর মন মানে না ... শুধুই হারাতে চায় , নিঃসীম সীমানায় ! যেন লুকাতে চায় মায়াজালে ঢাকা অলিক কল্পনায় !



আর যখন ওই ঘোরটা কেটে যায় হঠাত, তখন ???

যেন বুকের ভেতর থেকে কি একটা ছিড়ে যায়, একেবার ওলোটপালট করে দেয় সব চিন্তা আর কল্পনার জোয়ার , ভাবনার রেশগুলো আচ্ছন্ন মনে যতটা না দাগ ফেলে তারওচেয়ে প্রবল হয়ে দাগ দেয় ওই মুহূর্তের হতাশা , না পাওয়া , মিথ্যা , অবিশ্বাস , স্বপ্ন আর বাস্তবের প্রবল দোলাচলে !

যেন মানুষটা মাঝ সাগরের মোহনায় ঘূর্ণিপাকে আছড়ে পড়া অসহায় ডিঙি নৌকা একটা !
তারে নিয়ে খেলে নিঠুর বাস্তব তখন , সে শুধু নির্বাক দেখে যায় , বলার থাকেনা আর কিছুই , করারও থাকেনা কিছুই , চাইবার থাকেনা কিছুই , দেবারও আর থাকেনা একদম কিছুই !
শুধু খেলনা হয়ে যেন , ক্রিড়ারস-রঙ্গ মিটায় ভাগ্য নামক বিশাল কোন খেলোয়াড়ের /

তারপর ??

তারপর যখন ওই ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ক্ষত-বিক্ষত মানুষটা খড়কুটা সমেত হয়ে কংক্রিটের মেঝেতে পা রাখে , তখনি শুরু হয় তিরস্কার , ধিক্কার , অবজ্ঞা , আর চতুর্মাত্রিক যাতনার !



তারপরও তারে হাঁটতে হয় , তারপরও পথ চলতে হয় , তারপরও সামনে তাকাতে হয় চোখ তুলে , তারপরও তার ইচ্ছে হয় আকাশটারে দুচোখ ভরে আপন করে একবার দেখতে , আরো একবার ওই মুক্ত আকাশটায় মুক্ত বিহঙ্গের মত পাখা মেলতে ঝেড়ে ফেলে সব লাঞ্চনা , যন্ত্রণা , অবজ্ঞা আর যাতনা !

সে সামনে তাকায় , পড়ে যাওয়া চশমাটা মাটি থেকে তুলে হাতে নেয় , নতুন ভাবে একবার দেখে চোখে আঁটে ! নতুন দৃপ্ততায় সামনে তাকায় আরেকটাবার – বড় কঠিন সে চাহনী , যেন কংক্রিটসম মজবুত কোন বজ্র আঁটুনি ! নতুন করে গাঁথবার শুরু , নতুনভাবে দেখবার শুরু পুরানো পৃথিবীটা , শুরু নতুন রথযাত্রার , শুরু নতুন স্বপ্নের মালা গাঁথবার – শুরুই তো !! এইতো শুরু , শেষ হয়নি কিছুই, হয়তো এতোটুকু মলিন হয়েছে এই যা !

মলিন চাদরটারে নাহয় এবার একটু গোলাপ জলে ভেজালাম , জাফরান রঙ্গে নতুন ভাবে রাঙালাম , নতুন একটা স্নিগ্ধ রজনীগন্ধা গাঁথতে না পারি , ভোরের সবুজে মিশে থাকা নতুন সতেজ একটা ঘাসফুলই নাহয় এবার গাঁথলাম ।

কিবা এসে যায় , কে দেখিবে হায় , জীবন তো থামে নাই , কেনইবা ফিরে ফিরে তাকাই !! – নাহ আর তাকাবো নাহ !

নতুন ভোরের সূর্য দেখার এই সময় !
এইতো আমার চিরচেনা নব উন্মেষ ধ্বনিত-পথ !




হাঁটলাম তবে ওই নতুন ভোরের পানে ,
হাঁটলাম তবে জীবনের ওই শেষ বিকেলের গোধূলি পানে ,
হাঁটলাম একবুক ভরে তাজা বাতাস নেব বলে ,
হাঁটলাম জীবনের রুক্ষ এই বিশাল মেঠো পথের শেষে
একরাশ সন্ধামালতির ভিরে মুখ গুজে থাকা আমার অদেখা ছোট্ট কুটির পানে স্রান্ত-তনু এলাবো বলে ,
হাঁটলাম সেথায় প্রিয় মুখটারে নিয়ে দু-দন্ড সন্ধ্যাতারা গুনবো বলে ......





এইতো , শেষ হয়ে যাইনি , হবও না এর আগে ! ঘুমাব তারপরেই , আগে নয় !!

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:৩৪
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×