আমি বেয়ার গ্রেইলস। আপনাদের দেখাবো কি করে প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হয়। আজ আমি এসেছি বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা ।
রাস্তায় প্রচুর মানুষ দেখা যাচ্ছে গাড়িও প্রচুর দেখতে পাচ্ছি । আমাকে হেটে হেটে ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে হবে । কিন্তু মনে হচ্ছে রাস্তা পার হওয়াই বিড়াট চ্যালেন্জ হয়ে দেখা যাচ্ছে এর মধ্যেই অনেকে গাড়ির সাথে কাবাডি, কাবাডি করে রাস্তা পার হচ্ছে । এবার বুঝলাম কাবাডি কেন এদেশের জাতীয় খেলা । যা হোক অনেক চেস্টা করেও কায়দা করতে না পেরে আশে পাশে তাকালাম। আরে ঐতো একটা ওভার ব্রিজ, কিন্তু সবাই কাবাডিতে দক্ষ থাকায় তাদের সেটা ব্যবহারের দরকার হয়না তার পরেও আমার মত বিদেশিদের জন্যই হয়তো তারা এটা বানিয়েছে । সত্যি-ই এদেশের সরকার ফরেনদের জন্যও জনবান্ধব । যা হোক ওভার ব্রিজ দিয়ে যাওয়া ঠিক করলাম । দু সিড়ি উঠতেই দু পা বুবিট্রাপে আটকে গোলে মনে হলো । নিচে চোয়ে দেখলাম মাঝবয়সি এক লোক দু পা জড়িয়ে ধরে আছে আর কি যেনো বিড়বিড় করে বলছে । ভয় পেয়ে গেলাম আমি কি তার গায়ের উপরে পাড়া দিয়ে ছিলাম? তাই এভাবে ধরে ফেলেছে ? "সরি দেখিনি মাফকরে দিন" বলতে চেস্টা করলাম, ইংরেজীতেই বললাম, বাংলাটা তো জানিনা কিন্তু লোকটা তাৎখনাত ইংরেজীতেই জবাব দিলো " স্যার প্লিজ ফাইভ ডলার পাউন্ড গিভ " । এতোক্ষনে বুজলাম আমি আসলে কোন অন্যায় করিনি সে সাহায্য চায় । কোন সারভাইভ মিশনে সাথে টাকা পয়সা রাখিনা কিন্তু যে ভাবে ধরেছে কিছু না দিলে মনে হয় ছাড়বেনা সাথে থাকার মধ্যে একটা ছুরি আর পানির ফ্লাক্সে আধা ফ্লাক্স পানি আছে । ছুরিটা-ই দিয়ে কোন রকমে পা ছুটিয়ে দৌড়ে ওভারব্রিজ পার হলাম । ওভার ব্রিজে উঠে বুঝতে পারলাম এদোশের মানুষ অপচয় একদম-ই পছন্দ করেনা । ওভার ব্রিজ রাস্তাপার হওয়ার কাজে ব্যাবহার হয়না বলে খালি ফেলে রাখে না । মল মূত্র ত্যাগ, খুচরা দোকান ব্যবসা , আবর্জনা জমা করা সহ বহুমূখি কাজে ব্যাবহার করছে । এতো সীমিত সম্পদের দেশ হওয়ার পরেও এরা সম্পদের সর্বচ্চ ব্যাবহার করে নিজেদের এগিয়ে নিচ্ছে কি করে সে রহস্য বুঝলাম ।
বাপরে, একটা ওভার ব্রিজ পার হতে গিয়ে জান শুকিয়ে গেলো সদর ঘাট পর্যন্ত কিভাবে যাবো ভাবতেই গলা শুকিয়ে আসছে । পানি খাওয়ার জন্য ব্যগ থেকে পানির ফ্লাক্স বের করে হাতে নেয়া মাত্র কে যেনো পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো । চার দিক থেকে কিল ঘুশি বাংলালিংক দরে আসতে থাকলো । জ্ঞান হারানোর আগে শুনতে পেলাম কো জেনে চিৎকার করে বলছে ধরছি পেট্রল বোমাবাজ পামু একলাখ টেকা ...
এর পর বেয়ার গ্রেইলসের কি হয় সে খবর পাওয়া যায়নি তবে পরের দিন "দৈনিক প্রথম চাপা" পত্রিকায় তার ছবি ছাপাহয়। পিছনে সানগ্লাস, চোখে মাথায় কালো ফট্টি বাধা ব্যাব সদস্যরা উদাস ভাবে দাড়িয়ে আছে। নিচে ক্যাপশনে লেখা "ফরেন পেট্রল বোমাবাজ গ্রেপতার" । সম্ভবত বেয়ার গ্রেইলসের পানির বোতলটাকেই তারা পেট্রল বোমা মনে করেছিলো ।