somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাবিলের স্বপ্ন! এবং মোহাব্বতের ভাসমান পতিতার গল্প

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তখন বিএনপির শাসনকাল। দেশজুড়ে ছাত্রদলের দাপট। ঠিক এখনকার সোনার ছেলে ছাত্রলীগের মতো। বলতে গেলে ছাত্রলীগের চেয়েও কয়েকগুণ কারন তারেক রহমান বিভাগীয় পর্যায়ে তৃণমূল সম্মেলন করে
হাই ভোল্টেজ দিয়েছিলেন সেই ছাত্রসংগঠনকে।

কিন্তু সদাহাসি মোহাব্বতের হঠাৎ মন খারাপ, সেই ক্লাস নাইন থেকে ছাত্রলীগ করে অথচ মামলাবাজ চেয়ারম্যান তাকে কোন একটা ভাঙচুরের মামলায়ও আসামি করা হলোনা। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। এরপর কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠনে নেতৃত্ব দেয়ার স্বপ্ন। তবে এই বয়সে একটি দুটি মামলার আসামি হলে দলীয় সাবেক মন্ত্রী ও এলাকার বড় নেতার কাছে শক্ত করে পরিচয়টুকু দেয়া যায়।

প্রায়শই ক্লাসে বলতো আমি কি দল কম করি। এই আমলে মিছিলে যাই, মারামারিতে যাই। তবে রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হচ্ছে না কেন? তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কি আমাকে দেখেনা।
এভাবে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলো। তিন মাসের ছুটি। মোহাব্বত বায়না ধরেছে ঢাকা যাবে। ভর্তির আগেই পরিবেশটা যাচাই করবে। একদিল আত্মীয়স্বজন মিলে বরিশালের লঞ্চে। সারারাত প্লেকার্ড খেলতে খেলতে ভোররাতে লঞ্চের পর্দার আড়ালে তার চোখে পড়লো তারার মতো বাতি। যাত্রীবাহী জাহাজ এগুচ্ছে।

-হুররে! ঢাকায় চলে এসেছি।
তাকে থামিয়ে দিয়ে স্বজনেরা বললো, বেটা বোকা এটা চানপুর (চাঁদপুর)। থেকে গেলে এলাকার চঞ্চল ছেলেটি। এরপর ভোরবেলা সদরঘাট।

এতো সুন্দর ঢাকা! প্রতিদিনই ঘুরোঘুরি। এই ধানমন্ডি লেক, আবার গুলশান। বিমানবন্দর/চিড়িয়াখানা কিছুই বাদ নেই। একদিন বন্ধুরা বললো চল্ দোস্ত সংসদে যাই। চন্দ্রিমা উদ্যানে হুর-পরী মেলে। মাত্র ২০ টাকায় জান্নাতের সুখ!
এক বিকেলে চন্দ্রিমা উদ্যানের লেকপাড়ে বাদাম-আইসক্রিম খেয়ে সময় কাটাতে থাকলো তারা। যেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো মেকআপ মেখে হুর-পরীরাও ঝোপঝাড়ে আসতে শুরু করলো। মোহা্ব্বতেরাও তিন/চারে মিলে আনাগোনা দিতে থাকলো গাছের আড়ালে। অমনি ডাক পড়ল ভেতর থেকে। ও তো মহাখুশি। এক পা দুই পা করে আগালো। চাওয়া মাত্র বাহককে টাকাও দিলো।

অমনি পুলিশ এসে ধরে ফেললো সবাইকে। কাজের কাজ হলোনা টাকা দিতেই ধরা। নেয়া হলো তখনকার মোহাম্মদপুর থানায়। ২৯ ধারায় আসামি। পরেরদিন আদালতে উঠানো হলো ঢাকার স্বপ্ন লালন করা ছেলেটিকে। কিন্তু দুর্বল আইনের মামলায় ঠিকই আদালত থেকে তাৎক্ষণিক জামিন হয়ে গেল। আগে ঠিক করা ছাড়াই অপরিচিত আইনজীবী তাদের জন্য এই ব্যবস্থা করলেন, পরে টাকা।
মনো:কষ্টে সেইদিনই ঢাকার প্রতি মোহাব্বত করা গ্রামের মোহাব্বত লঞ্চে উঠে পড়লেন।

দুই. আদনান নাবিল ওরফে নাবিল হায়দার। তিনিও ভোলা বোরহানউদ্দিনে মোহাব্বতের মতো ঢাকা স্বপ্ন দেখতেন। বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, চাচা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দাদা-নানা ছিলেন রাজনীতিবিদ। আবার সেই ছোটবেলা থেকে দাদার সিনেমা হল রাজমনিতে মান্নার রাজনীতির ছবি দেখে অভ্যস্ত। সবমিলে জম্মের পরপরই রাজনীতিতে টুইটুম্বর। এইচএসসি পাশ করে ঢাকায় পাড়ি জমালেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে করেই হোক ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে তার স্বাপ্নিক জগত প্রসারিত হতে থাকলো।
নাম লেখালো ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের খাতায়, কিন্তু ক্ষমতাসীন দলে আছেন, তাই কে দিবে মামলা। মোহাব্বতের মতো সেই চিন্তাও করা যায়না। নেতা হওয়া তার চাই চাই।

তাই বড় কিছু দিয়েই শুরু হলো- ভিপি নূরকে হুমকি দিয়ে আলোচনায়। নেতাদের কাছে কদর বেড়েছে। এলাকায় এখন তাকে সবাই গুনে কথা কয়। নেতার ছেলে নেতা হওয়ার পথে। কিন্তু হাইব্রিড হতে হলে আরও মারদাঙ্গা হওয়া চাই।

করোনাভাইরাসে মানুষ আতঙ্কে আছে। গরীব-দুখী বাঁচাতে সরকার ত্রান দিচ্ছে। কিন্তু তার বাবা চেয়ারম্যান ত্রানের চাল মেরে দিলেন। এ নিয়ে এক সাংবাদিক নিউজের খোচানো শুরু করছে। অমনি সাংবাদিককে ফোনে ডেকে এনে বাবার সিনেমা হলের সামনে এনে ফেসবুকে লাইভ অন করে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন শুরু করলো।

এবার হয়তো ক্যাম্পাসের পোলাপান বুঝবে আমার কতো ক্ষমতা। তাই হলো ফেসবুকে ভাইরাস।
কিন্তু আন্দোলন-ফান্দোলনের কারনে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলো।

এই বুঝি মোহাব্বতের স্বপ্নের মতো!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×