বাংলাদেশ ফেসবুক সমিতি, ম্যাসেঞ্জার পার্টি কোনটাতেই বাদ পড়েননি নারায়ণগঞ্জের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই খবর চাউর হয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্রলের স্ক্রিনশর্ট দিয়ে। সেখানে লেখা ছিল ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে মারা গেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভি’।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী যখন সরকারের কাছে কারফিউ জারির আবেদন করছেন, ঠিক তখনই তার মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়। এ নিয়ে আইভি ভক্তদের অনেকের মাঝেই না জেনে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে, ইন্না লিল্লাহি....রাজিউনও লেখেন।
তবে ক্ষণিক পরে জীবিত হয়ে ফিরে আসেন আইভী!
তিনি এক বাক্য বিস্মিত হয়ে বলেন, মাগরিবের নামাজ শেষ করে শুনলাম আমি মারা গেছি। বিব্রত এবং ক্ষুব্ধ মেয়রের ভাষ্য ছিল, কারা এটি ছড়িয়েছে?। আমি তো নারায়ণগঞ্জে আমার বাড়িতেই আছি। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কে-বা কারা আমার মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে আমি জানি না। নামাজ শেষ করে শুনলাম আমি নিউইয়র্কে মারা গেছি। আমি ভালো আছি, সুস্থ আছি। কেউ গুজবে কান দেবেন না।
যদিও ওই টিভি চ্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটাও এক ধরণের মিথ্যা ক্রল। কেউ কপি-পেস্ট মেরে এমন জঘন্য কাজটি করেছে। আর সুদক্ষভাবে কাজটি করা হয়েছে 'দুইটা স্ক্রল এক সাথে জোড়া দিয়ে। মানে আগের একটা স্ক্রল আর পরের একটা স্ক্রল জোড়া দিছে।”
এই তো গেলো আইভীর কথা। গত ২৬ মার্চ থেকে আইসোলেশনে আছেন করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়া 'ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন' এর একজন ভিডিও সাংবাদিক। তাকে রাজধানীর উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে টেলিভিশনটির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সহ সম্পাদক ফেসবুকে কথা বলেন।
তবে সেটি নিয়ে শুরু হয় আরেক রাজনীতি। একজন সাংবাদিক নেতা তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন, ওই ভিডিওগ্রাফার খালেদা জিয়ার মুক্তির দিন ডিউটিতে ছিলেন। যদিও টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ এমন কোন তথ্য প্রকাশ করেননি।
অবশ্য এ নিয়ে একহাত দেখান টেলিভিশনের রাজনৈতিক প্রতিবেদক (বিএনপি নিউজ কাভার করেন) জাহানারা পারভীন। তিনি তার ফেসবুকে লেখেন, আক্রান্ত ভিডিও সাংবাদিক খালেদা জিয়ার নিউজ কাভার করেননি। তাহলে দাড়াঁলো কী? একটি গুজব।
শনিবার রাতে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে আবু বকর সিদ্দিকী নামে একজন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। যিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে করোনায় আক্রান্তের গুজব ছড়ান তার ফেসবুকে। এছাড়া ফেসবুকে আরও স্ট্যাটাস দেন যে, করোনার কারনে ব্যাংক-এনজিও ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে অনেকে আত্মহত্যা করেছেন। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে পুরনো ছবি ব্যবহার করে এই ক্রান্তিকালে চাঁদাবাজির ভুয়া অভিযোগ তোলেন।
প্রশ্ন হলো করোনাভাইরাসের কাছে যেখানে চীন-আমেরিকার মতো দুই শত্রুভাবাপন্ন দেশ তার দেশের নাগরিকদের প্রাণ বাঁচানোর তাগিতে কাজ করছে। সারাবিশ্বে শত্রু-মিত্র এক হয়েছে সেখানে গুজব কেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪০