এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজ। ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছিল গত জানুয়ারী মাসেই, এর মহান স্রস্টা হারম্যান মেইনারের জন্মবার্ষিকীকে ঘিরে ঘটা করে পালনের আয়োজন করা হয়েছে আজ ২৪ জুন ২০১১।
কলেজের প্রধান ফটক [ছবিসূত্র: কলেজের ফেইসবুক গ্রুপ]
শৈশবে মা-কে হারান অস্ট্রিয়ায় জন্ম নেয়া হারম্যান মেইনার। মায়ের মৃত্যূর পর তিনি বড় হয়ে ওঠেন তার বড় বোনের কাছে। সেসময়ই তিনি তার মেধার পরিচয় দেন এবং তার স্বীকৃতিস্বরূপ স্কুল হতে বৃত্তি পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়।
তখন সবেমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় কেবল যুদ্ধে হত-নিহত মানূষ আর তাদের স্বজনদের আহাজারি। হারম্যান মেইনার এই সময় বসে না থেকে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। মাত্র ৬০০ অস্ট্রিয়ান শিলিং (বা প্রায় ২০০০ টাকা) নিয়ে বন্ধুদের সাথে হারম্যান মেইনার শিশু কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেন এসওএস-কিন্ডারডর্ফ (SOS-Kinderdorf)। যুদ্ধবিদ্ধস্থ অঞ্চলের শিশুদের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যান। এরপর তার কার্যক্রম ইয়োরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা হয়ে আসে এশিয়াতে।
হারম্যান মেইনার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সফরে আসেন যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থ ও দুঃস্থ শিশুদের দীর্ঘমেয়াদী সাহয্যের প্রস্তাব নিয়ে। ঐ বছরই শ্যামলীতে প্রথম এস ও এস শিশু পল্লী প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৮৬ সালের ১৯ জানুয়ারী এস ও এস-এর সহযোগিতায় ঢাকার মিরপুরে নির্মিত হয় এস ও এস হারম্যান মেইনার কলেজ। নাম কলেজ হলেও এখানে শিশুশ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়। এর উন্নত পাঠদান পদ্ধতি, সুশৃংখলা আর শিক্ষকদের আন্তরিকতা শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফলে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তাই একটি উত্তম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করতে বেশি সময় লাগে না।
হারম্যান মেইনার কলেজ ক্যাম্পাস [ছবিসূত্র: ফাইরুজ ]
আমার পিতার চাকরির সুবাদে আমাকে অনেকবার স্কুল বদল করতে হয়েছে। হারম্যান মেইনার কলেজ হলো আমার ষষ্ঠ এবং শেষ স্কুল। অতি গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বছর—অষ্টম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত কাটিয়েছি এখানে। একে ঘিরে রয়েছে অনেক স্মৃতি। আজ যাচ্ছি পুরনো সহপাঠিদের সাথে একটি দিন কাটাতে। পুরনো স্মৃতিগুলো হাতড়ে সেই শৈশবে ফিরে যেতে।