somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্যোতির্বিজ্ঞান কোর্স: ডার্ক এনার্জীএনাটমী আর মহাবিশ্ব

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুক্তি দিয়াই সব চলছে, যুক্তিবিহীন অলৌকিকত্ব মানুষ্য জীবনে দেখা যায় না: এই কথাটা আসলে ঠিক না। অন্তত আমাগো দেশের জন্য না। আমার বাসা গাবতলীর কাছে হওয়াতে সাবেক বিউটি সিনেমা হলের পিছন দিয়া পায়ে হাইটা বাসায় যাইতাম বাস স্ট্যান্ড থিকা। দেখতাম দেয়ালে দেয়ালে লেখা,"এইখানে হিস্যু করিলে কাটিয়া দেয়া হইবে" অথবা "এইখানে প্রস্রাব করিলে ১১ টাকা জরিমানা করা হইবে"। কিন্তু ঐ লেখার নীচে জন গন লাইন ধইরা লুঙ্গি পরিহিত অবস্হাতেই হিস্যু করিতো।
দেশ স্বাধীন, তাই আমাগো দেশের মানুষ যুক্তির পরাধীন থাকতে চায় না। তারা সবকিছুর স্বাধীনতা চায়, এমুন কি মুখেরও। এই যেমন ধরেন একজন মানুষ সরকারী ১৬ হাজার টাকা স্কেলের কাস্টমসের চাকুরী কইরা ৩ বছরের মাথায় ঢাকা শহরে তিন তিনটা বাড়ি করে। বাড়িগুলা যাতা না, পুরা বিদেশী ফিটিংস, তার মধ্যে কয়েকটা বাড়ি আবার ভিলা বাড়ি। অবসরে যাওনের পর কুনো এক রাজনীতিক দলের টিকেট পাইয়া মন্ঞ্চে খাড়ায়। লাখো আমজনতা তার বক্তৃতা শুনে, এতো বড় একখান চোর কি সুন্দর খাড়াই খাড়াই মিছা কয়, জন গন সেইটা খালি বিশ্বাসই করেনা, তারে ভোটও দেয়!
আপনেই কন এই দেশে কি কেউ যুক্তি মানে? দেখা যায় বাড়ির বৌ অসুখের যন্ত্রনায় মইরা যায়, সেই অসুখের পথ্য হিসেবে মোল্লা জামাই ইয়াছিন সূরা পড়া পানি খাওয়ায় বলে,"শুইয়া থাকো, আর আল্লারে ডাকো। দেখবা সব ঠিক হইয়া যাইবো!" অথচ নিজের একটু জ্বর আইলে প্যারাসিটামল পান্জ্ঞাবীর পকেটে উকিঝুকি দেয়! আমরা আবার সেই মোল্লার পিছেই নামাজ পড়ি, তার কাছ থিকা ফতোয় শুইনা বৌ পিটাই আর ধর্ষিতা মাইয়ার বাপরে হাজার খানেক টাকা ধরাইয়া ধর্ষকরে জুতার বাড়ি দিয়া ছাইরা দেই!

জানি পদার্থবিজ্ঞান, প্রকৌশল বিজ্ঞান স হ মৌলিক জ্ঞানে জন গনের কোনো ইন্টারেস্ট নাই, তাদের ইন্টারেস্ট হইলো ইরান কেমনে মিসাইল উড়ায়, অথবা ব্লগে নাস্তিকগো কেমনে খুচান যায় (অবশ্য নাস্তিকমামারাও কম যায় না!)। অবশ্য ইরানের কথা কি কমু, দেশ এতো আগায় গেছে সে দেশে নাকি মাইয়াগো প্রকৌশল বিদ্যা, জেনেটিক্স, গণিত সহ ৯০টা বিষয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করছে! জয় ইরান, উড়াই তুড়ান!

ডার্ক এনার্জী

ডার্ক এনার্জী কি সেইটা আমরা জানি না। যেহেতু এনার্জী সেহেতু এইটার একক কি হইবো অথবা কিভাবে এইটাকে কাজে লাগান যায় এইটাও জানি না। খালি জানি এর পরিমান কত আর এইটা কি আকামটাই না করতাছে এই মহাবিশ্বে!

ইতিহাস কমু না, তবে এর প্রায়োগিক তত্ব নিয়াই আমার যতো ইন্টারেস্ট! আজকা থিকা প্রায় শখানেক বছর আগে চাপরাশীর চাকুরিরত আইনস্টাইন একখান প্রবন্ধ লেখেন জেনারেল রিলিটিভিটি নিয়া। ঐখানে তার এই আপেক্ষিকতারে মহাবিশ্বের জন্য সার্বজনীন রূপ দিতে গিয়া দেখেন, এই মহাবিশ্বে যদি গ্রাভিটির পরিমান বেশী থাকতো তাইলে দেখা যাইতো কালকা সকাল বেলা উইঠাই দেখা গেলো আসমানের চান সুরুজ তারা মাটিতে আছাড়া খাইয়া দুনিয়া তামা বানাইয়া রোজ কেয়ামত লাগায় দিছে।কিন্তু সেরকম হইতেছে না। সাধারন টেলিস্কোপে চক্ষু রাখলে আসমানের চান সুরুজ তারা সেরকম কোনো থেটারিং মারতাছে না আছাড়া খাওনের, সেরম ভয়ের কোনো কারন নাই। তো বেচারা চাপরাশী মনে করলো পুরা মহাবিশ্ব স্হির হইয়া আছে। তার মানে এই যে এতো গ্রহ উপ গ্রহ তারা নক্ষত্র নিজ নিজ কক্ষপথে গ্রাভিটির টানে চলতেছে, মানুষ মাটি বায়ূমন্ডল সব জায়গা মতোই আছে সেহেতু গ্রাভিটির এই টানটারে নিরপেক্ষ করতাছে নিশ্চয়ই কোনো শক্তি। তাই সে মহাবিশ্বের এই ক্ষেত্রটারে ব্যাখ্যা করনের জন্য একখান ইকোয়েশন লেখলেন যেইখানে তিনি একটা ধ্রূবক টানলেন যার কাজ হলো এন্টি গ্রাভিটির মতো কাজ করা এবং এই মহাবিশ্বটারে স্হির রাখা। এর নাম কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট।



এর কয়েকবছর পর এডউইন হাবল একটা ভালা টেলিস্কোপ নিয়া আসমানের দিকে চাইয়া দেখে মহাবিশ্বের সবকিছু কেমুন জানি দূরে সইরা যাইতেছে। যদিও সবাই জায়গা মতোই আছে কিন্তু সবাই দূরে সইরা যাইতেছে। বেচারা ইনডাইরেক্টলি সাবেক চাপরাশী আর ততদিনে নাম কুড়ানি বিশাল জ্ঞানী আইনস্টাইনরে মোটামোটি চিপা সম্মান দেখাইতে গিয়া বোমা ফাটায়,"যে মহাবিশ্ব ব্যায়াম করেনা, গায়ে গতরে বাড়তেছে। এর সবকিছু দূরে সইরা যাইতেছে!" আইনস্টাইন মামা ঘুম থিকা তার কথা শুইনা মনে মনে গজড়াইতে গজড়াইতে কইলো,"আমার জীবনে বিয়া না করাটা সেরা ভুল আছিলো না, এই কসমোলজিক্যাল ধ্রুবক ব্যাটাই সবচেয়ে বড় ভুল আছিলো!"
এইভাবে চলতে থাকলো ঘোড়ার গাড়ি সময়ের সাথে। ফাঁকে ঐ চাপরাশী আরও অনেকের লগে নোবেল জিতল, পটল তুললো, এক ট্যাটন স্ট্যান্ডার্ড মডেল দিলো, আরেক মদন হিগসী কনিকার খোজ দিলো, হিগসী পাওন গেলো না আসলটা ,মাগার সেই মদন পুরস্কার বাগাইয়া গাড়ি বাড়ি বানাইলো। তো ৯০ এর দশকে পোলাপান ভালা ভালা টেলিস্কোপ হাতে পাইয়া জ্যোতির্বিজ্ঞানে ভর্তি হইয়া আ্ঁতলামীর পরিচয় দিতে লাগলো পুরা বিশ্ব ভইরা। বাঙ্গালীর মশারীর ভিতর মশা ঢুকাইয়া মশা মারনের মতো থিওরী দিতে লাগলো। আকাশের কুনা কান্ঞ্চি থিকা ফটুক তুলতে থাকলো। তো ঐ সময় সুপারনোভা ১এ এর একটা ফটুক তুললো, ঐটা নিয়া ব্যাপক গবেষনা কইরা একটা গ্রাফ বানাইলো।



গ্রাফের X অক্ষাংশ আছিলো রেডশিফটের ক্রমাংক আর Y অক্ষাংশে আছিলো সুপারনোভা থিকা নির্গত বস্তুকনিকা গুলার উজ্বলতার মাত্রার ক্রমাংক।



এইখানে রেড শিফট নিয়া অনেকের কুশ্চেন থাকতে পারে। রেড শিফট নিয়া আগে দুইটা বাতচিত করি। ধরে আপনে বিয়ান রাইতে হাট থিকা একখান টর্চ লাইট কিন্যা আনলেন আর তার পিছে সাটাইলেন শক্তিশালী ভোম্বল সাইজের অলিম্পিক ব্যাটারী। অখন ব্যাটারী লাগাইয়াই আপনে জায়গায় বেজায়গায় টর্চ মারতে লাগলেন। তো দেখা গেলো আপনের ব্যাটারীর শক্তি অনুযায়ী আপনের টর্চ রাস্তার পাশের নদী পার হইয়া ঐ পাড়ের লোকমান মিয়া রাইতের আন্ধারে নদীর পাড়ে টাট্টি করার সীন দেখবার পারবেন। মাগার আপনে যদি টর্চের ভিতর ইন্ডিয়ান ধ্বজভঙ্গ ব্যাটারী লাগান তখন ঐ পাড় তো দূর, নদীর আগেই টর্চের বাত্তীর উইকেট পইড়া যাবে।



কাহিনী হইলো আলোটা হইলো ফোটনের বিচ্ছুরণ। ফোটন কনিকারে অতিরিক্ত উত্তেজিত কইরা কম্পনসংখ্যা বাড়াইয়া দিলেন ছাইড়া। তো ফোটন কনার এনার্জীর যতক্ষন থাকবো ততক্ষন পর্যন্ত সেরম কাপানী দিতে থাকবো। কিন্তু যত এনার্জী খোওয়াবে ওর কাপানী কইমা যাবে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাড়বে। আমরা নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য পর্যন্ত দেখতে পারি। সবচেয়ে বেশী তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে যাইয়া আলোর বর্নালী লাল বর্নের কাছাকাছি চইলা যায়। এইটা এমুনই লাল যেইটা আমাদের চোখে পড়ে না। একে বলি আমরা রেডশিফট। নীচের ফটুক দেখেন।



আরও একভাবে এই রেডশিফট হয় সেইটা হইলো ডপলার এফেক্ট। অনেকটা এমন যে একখান ট্রেন স্টেশনে খাড়াইয়া আছেন। ধরেন ট্রেনে বইসা আপনার প্রেমিকা কইতাছে," তোরে তালা দিলাম, এক তালাক, দুই তালাক...." এখন ট্রেন খান যতদূর যাইবো আপনে তার লাস্ট কথাটা ততআস্তে শুনবেন। আর যদি ট্রেন আসতেছে আর সেও আপনেরে তালাকের ফরমান শুনাইতেছে, তো দেখা যাইবো তার লাস্টের কথাটা আপনে জোরতে শুনবেন। আলোর ক্ষেত্রেও সেম ঘটনা ঘটে। চলমান বস্তু থিকা নির্গত আলো যতদূর যায় তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাইড়া যায়, উজ্বলতাও কমে। এই প্রচন্ড কমানির আলোর বর্নালীটারেই বলি রেডশিফট। তাইলে বুঝতে পারছেন এই রেডশিফটের দূরত্বের একখান সম্পর্ক আছে।

z= v/c, ----------১
v = Ho d,---------২

রেফারেন্স: (Weinberg 1972, pp. 420-424).

১ নম্বর ইকোয়েশনে z হইলো রেডশিফট, v হইলো দূরে সইরা যাওনের গতো আর c হইলো আলোর গতি।
২নম্বর ইকোয়েশনে Ho হইলো হাবলের ধ্রুবক , d হইলো দূরত্ব।

সমস্যা হইলো এই গ্রাফ থিকা প্রাপ্ত ডাটা যখন নিম্নোক্ত দুইটা সূত্রে বসাইলো তখন দুনিয়া থিকা ঐ কনিকা গুলার দূরত্বে গরমিল পাওন গেলো বেশ ভালো রকমের।
এই সূত্রটা দেখাচ্ছে ঔজ্জ্বলতার সাথে দূরত্বের পীড়িত

D(L)=(L/4*pi*S)^½-------৩
D(L) হইলো ঔজ্জ্বলতার দূরত্ব, L হইলো ঔজ্জ্বল্যতা, S হইলো ফ্লাক্স।

এইখানে যেইটা দেখা যায় ঔজ্জ্বলতা থিকা প্রাপ্ত দুরত্বের মান রেডশিফট থিকা প্রাপ্ত দূরত্বের মানের থিকা বেশী। সবাই মাথা চুলকা চুলকি করতে লাগলো।

কুন জায়গায় ভুল আছে সেইটা বাইর করতে গিয়া দেখলো যদি রেডশিফটের মান ১ হয় তাইলে এখন গ্যালাক্সীগুলান ৬৭কিমি/সে/মে.পারসেক গতিতে দূরে সইরা যাইতে থাকে সেই হিসাবে মহাবিশ্বের বয়স হবে

১/৬৭*৩.০৮৬*১০^-১৯ = ৪.৫*১০^১৭ সেকেন্ড অর্থাৎ ১৩ বিলিয়ন বৎসর

এখন এই ত্বরনের মান ৩০ কিমি/সে/মে.পারসেক করে দেই তাহলে মহাবিশ্বের বয়স দাড়ায়১*১০^১৭ সেকেন্ড।তার মানে দেখা যাইতেছে দূরত্বের হিসাবে ঐ ঔজ্জ্বলতার মানটাই সঠিক আছিলো। তবে এই মহাবিশ্বের প্রবৃদ্ধির হার অতীতের থেকে এখন বেশী। কারন সুপারনোভা থিকা দেখা যাইতেছে যে বিগ ব্যাং হবার ১ বিলিয়ন বছর পর এই মহাবিশ্বের সাইজ যতটুকু হইছে ৫ বিলিয়ন বছর পর হইছে তার দ্বিগুন কিন্তু ৫ বিলিয়ন বছর পর এই বৃদ্ধি দ্বিগুন না হইয়া হইছে ৩ গুন।


তার মানে দেখা যাইতেছে এই বৃদ্ধিটাও একরকম ভাবে বাড়তেছে না, বাড়তেছে সেইটারও চক্রবৃদ্ধি হারে। তার মানে কিছু একটা চেষ্টা করতেছে এই মহাবিশ্বরে আরও দ্রুত ভাবে বাড়াইতেছে।

এখন কথা হইলো এই হিসাবটাই ঠিক কিনা। এইটা শিওর হওয়া যায় যদি আমরা ইলেক্ট্রনের গঠন আর আলোর গতির সাথে হাবল টাইমের একটা সম্পর্ক গড়তে পারি তাহলে একটা ইকোয়েশন পাই সেটা হলো

H^-1 = (2m(μ)/m(e))^9(N^3)[72π]^3(e^2/m(e)c^2)[6/πc]------৪

সূত্র: The Fundamental Constants and the Frontier of Measurement, Petley pp. 41-42

এখানে c হলো আলোর গতি, e2/mec2 নিউটোনিয়ান কনসেপ্টে ইলেক্ট্রনের ব্যাসার্ধ যার মান 2.81794092(38)x(10)-13 cm, N হলো কোনো গ্যালাক্সির ভিতর দিয়ে তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ প্রবাহিত হইতে থাকলে তার ধ্রুবক ১৮৪৩, 2mμ/me অনুপাতটা হলো মিওনের ভরের সাথে ইলেক্ট্রনের ভরের অনুপাত যার মান ২০৬.৩৩২৯। এর থেকে আমরা মহাবিশ্বের বয়স পাই ১৪.৩ বিলিয়ন বৎসর। তার মানে দেখা যাইতেছে ঔজ্জ্বলতার সাথে মহাবিশ্বের বয়সের হিসাবটা মিলে যায়।

যেহেতু আইন্সটাইন ভুল করেও ভুল হতে পারেনি, আর এই কথাটা সীন ক্যারল সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেবার জন্য তাকে ২০১১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। যেহেতু একটা কালো এনার্জী মহাবিশ্বের এই বৃদ্ধির পিছনে কাজ করতেছে এবং গ্রাভিটি এর বিরুদ্ধে কোমড় বাইন্ধা নাইমাও কাজ হইতেছে না সেহেতু এই একটা জিনিসরে ডার্ক এনার্জী ধইরা নেয়া হইছে।

তার মানে এই মহাবিশ্ব খুব দ্রূত ঠান্ডা এবং আন্ধার হইয়া এর শেষ পরিনতি টানবো। এই ঘটনাটার সাক্ষী সিএমবি পর্যবেক্ষনেও দেখা গেছে!


এখন অনেকেরই দেখা যায় ডার্ক ম্যাটার নিয়া অনেকের তালগোল পাকায় যায়।



আসলে ডার্ক ম্যাটার কি দিয়া তৈরী সেইটাই আমরা জানি না। অনেকেই ডার্ক এনার্জীরে বলে একটা শক্তি, কিন্তু এইটা ভুল। এইটা আসলে শক্তি না বইলা একটা জিনিস বলাই ভালো কারন এইটার না আছে কুনো মাত্রা না আছে কোনো শক্তির একক। বিজ্ঞানীরা বলে পুরা মহাবিশ্বে ৭৩% হলো ডার্ক এনার্জী আর ২৭% হলো ডার্ক ম্যাটার ও দৃশ্যমান বস্তু সকল (এইখানে দৃশ্যমান বস্তু কইতে বোঝানো হইতেছে এই যে গ্রহ উপ গ্রহ, গ্রহানু ধূমকেতু নক্ষত্র থিকা শুরু কইরা এমুন সব বস্তু যেগুলা থিকা আলো প্রতিফলিত হয়। আমরা যারা প্রাইমারী স্কুলে সাইন্স পয়লা পড়ি তখন পদার্থবিজ্ঞান স্যার ক্লাসে আইসাই একটা জ্ঞানী কথা কইতো,"আমরা কিন্তু আলো দেখি না, কিন্তু এর প্রতিফলন দেখি!" ঘটনা সেইরমই। মহাবিশ্বের এর পরিমান ৫% আর ডার্কম্যাটার হইলো ২২%)।

এখন ধরা যাক আমরা টেলিস্কোপে অনেক দূরের দুইটা গ্যালাক্সী দেখতে থাকলাম। এখন স্বভাবতই একটা প্রশ্ন মাথায় আসবো যে কি এমন শক্তি আছে যা এই দুটারে জায়গা মতো রাখতেছে অথবা একে অপরকে দূরে সরায় ফেলতেছে। তাইলে আসেন একটা হিসাব করি সেইটা হইলো ঐখানে যতগুলা ম্যাটার আছে সবগুলারে দুই দিয়া ভাগ করি।তাইলে দেখা গেলো আমরা ৭৩% ডার্ক এনার্জী নিলাম আর ২৭% এর অর্ধেক ১৩.৫% ডার্ক ম্যাটার আর দৃশ্যমান বস্তু নিলাম। এখন ৭৩ কে ১৩.৫ দিয়া ভাগ দিলে দেখা যাবে ৫.৪।

এইটা থিকা বলা যায় যে যেই বল এই গ্যালাক্সী দুইটাকে দূরে ঠেলে দিতাছে তার শক্তির মান ৫.৪ গুন বেশী যেই শক্তি ওদেরকে কাছে টাইনা রাখতে চায়। তার মানে এইখানে এইটা দিয়াও প্রমান করা যায় মহাবিশ্ব ত্বরনায়িত দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাইতেছে। ডার্ক ম্যাটারের কাজই হইলো এইটা গ্রাভিটির সৃষ্টি করবে আর এই যে কিছু একটা টাইনা রাখে দুইটা গ্যালাক্সীকে এইটাই হইলো ডার্ক ম্যাটার। আরেকটু সোজা করলে আমাদের আকশে দৃশ্যমান জিনিসের বাইরে এই যে এতো কালা কালা আন্ধার দেখা যায় এইখানে ভ্যাকুয়াম এনার্জী হিসেবে ডার্ক এনার্জী আর অদৃশ্য বস্তু হিসেবে ডার্ক ম্যাটার আছে। এই জন্য দেখেন আলো ঠিকই গ্রহ উপগ্রহের উপর পড়ে কিন্তু আসমান ভইরা আন্ধার। এই ডার্ক ম্যাটারের গ্রাভিটির কারনে আলো সোজা হইয়া বাইর হইতে পারে না (ব্যাখ্যাটা হলো ডার্ক ম্যাটারের গ্রাভিটির কারনে আলোটা একটা বেকা হইয়া যায়। এইটা এমন যে আপনের সামনে সোজা সোজি ১০ মাইল দূরে একটা লাইট হাউজ আছে। ঐ লাইট হাউজে আপনের বন্ধু আপনার দিকে আলো ফেললো। আলো খান কিন্তু আপনের উপর পড়বো। কিন্তু হঠাৎ মাঝখানে ডার্ক ম্যাটার আইসা পড়লো তখন দেখা যাইবো আলোটা একটু ব্যাকা হইয়া যাইবো। আপনের বন্ধু আপনের উপর আলো ফেলতে পারবো কিন্তু আপনে যেইখানে দাড়ায় আছেন আপনের বন্ধু সেইখান থিকা একটু ডাইনে বা বায়ে দেখবার পারবো আর আপনে লাইট হাউজটারে চিকনা না দেইখা দেখবেন চ্যাপ্টা বা ভুটকা: একে বলে গ্রাভিটেশনাল ল্যান্সিং!)।



এই ডার্ক এনার্জী কি ব্লাক হোল দ্বারা প্রভাবিত হয়?

যখন দুইখান তারা সংঘর্ষ বাধে তখন দৃশ্যমান বস্তুর সাথেই কিন্তু সংঘর্ষ বাধে এবং এগুলো তৎক্ষনাৎ ধ্বংস হইয়া গুড়া গুড়া হইয়া এনার্জীতে পরিনত হয় এবং ঐখানে ডার্ক ম্যাটার সাথে তারকা দুইটার নিজস্ব ভর আর গ্রাভিটির কারনে এক জায়গায় আবার ঘনীভূত হইয়া হয় নতুন কইরা পথ চলতে পারে অথবা ব্লাক হোল তৈরী হতে পারে। কিন্তু ডার্ক এনার্জীর উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। কারন ডার্ক এনার্জী হলো এন্টি গ্রাভিটির মতো কাজ করে। তাই এর উপর কোনো প্রভাব নাই যদি একটা বিশাল ব্লাক হোলও পয়দা হয়!



এই ডার্ক এনার্জী কি এই যে এতো এক্সিলারেটর যেইখানে অনু পরমানু গুতাগুতি করাইয়া বিভিন্ন কনিকার সৃষ্টি করা হয় এইখানে কি দেখা যাবে?

না এইটা সম্ভব না। কারন এক্সিলারেটরে যেইটা করা হয় ম্যাটার এন্টি ম্যাটারের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটানো হয় ফলে যে শক্তি উৎপন্ন হয় সেটা ঐ ম্যাটার এন্টিম্যাটার জোড় গঠনের জন্য যথেষ্ট। ফলে ওগুলো ওখানে খরচ হয়ে যায়। কেউ কেউ হয়তো বলতে পারে অনেকসময় এরকম সংঘর্ষে আলো অবস্হায় শক্তি নিঃসরন বা নির্গমন হতে পারে কিন্তু সেইটা তো ঐ ম্যাটার এন্টি ম্যাটারের কিরকম সংঘর্ষ ঘটছে সেইটার উপর। হইতে পারে সেইটা গামা রে হিসেবে বের হবে অথবা এক্সরে আকারে। এনার্জী তখন অর্জন করা সম্ভব যদি আগে থেকে ম্যাটার এন্টি ম্যাটারের জোড় ঐখানে থেকে থাকে। কিন্তু সেই এনার্জীগুলোও তাতে খরচ হয়ে যাবে। তাই দেখা যায় এরকম কোলাইডারে যে সংঘর্ষ ঘটবে সেটা দিয়ে ডার্ক এনার্জী দেখা সম্ভব হবে না।


যাই হোউক, এই হইলো পুরা ডার্ক এনার্জীর বেসিক আর মহাবিশ্বের বয়স কেমনে ১৪.৩ বিলিয়ন বৎসর হইলো। এখন নেক্সট টাইম কেউ জিগাইলে সুন্দর কইরা তোতাপাখির মতো বইলা দিলে দেখবা সে পুরা আষাঢ় মাসের টাস্কি খাইয়া যাইবো!

রেফারেন্স:

১) ^ "Refined Hubble Constant Narrows Possible Explanations for Dark Energy". 2009-05-09. Retrieved 2009-05-09.
২) ^ W. L. Freedman, B. F. Madore, B. K. Gibson, L. Ferrarese, D. D. Kelson, S. Sakai, J. R. Mould, R. C. Kennicutt, Jr., H. C. Ford, J. A. Graham, J. P. Huchra, S. M. G. Hughes, G. D. Illingworth, L. M. Macri, P. B. Stetson (2001). "Final Results from the Hubble Space Telescope Key Project to Measure the Hubble Constant". The Astrophysical Journal 553 (1): 47–72. arXiv:astro-ph/0012376
৩) ^ Isaacson, Walter (2007). Einstein: His Life and Universe. Simon and Schuster. p. 354.
৪) ^ 'Hubble Constant: A New Way to Measure the Expansion of the Universe', Science Daily, 27 July 2011.
৫) ^ "Animation: Matter Content Sensitivity. The matter-radiation ratio is raised while keeping all other parameters fixed (Omega 0h^2= 0.1-1)". uchicago.edu.
৬) ^ Hubble, Edwin (March 15, 1929). "A RELATION BETWEEN DISTANCE AND RADIAL VELOCITY AMONG EXTRA-GALACTIC NEBULAE". PNAS 15 (3): 168–173. Bibcode 1929PNAS...15..168H. doi:10.1073/pnas.15.3.16৮
৭) Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১৮
২৩টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×