হুজুর! পরিষ্কার কোর'আন এবং হাদিস থাকতে আমাদেরকে ইমাম, মুফতি মুহাদ্দিসদের ব্যাখ্যা শুনতে হবে কেন? কোর'আন-হাদিস কি এনাফ নয়!
-বাহ, অনেক দিন পর তোমার মাথা খুলতেছে দেখছি! আচ্ছা, বিকালে একবার এসো, এগুলো বিস্তারিত না শুনলে গুলিয়ে ফেলবে।
-মাফ করবেন, হুজুর। বিকালে আসতে পারব না। আম্মুকে নিয়ে শহরে বড় ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
-এই দেখো বেয়াক্কেলের কাণ্ড। তুমি না গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেছ, ডাক্তারের কাছে যাবে কেন? দাঁড়াও, হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি চিকিৎসা-বিষয়ক কয়েকটি বই ডাউনলোড করে দিচ্ছি। এগুলো পড়ে বাজার থেকে তোমার মায়ের জন্য ঔষধ নিয়ে আসো। কেন খামাখা টাকা এবং সময় নষ্ট করবে?
-সুবহানাল্লাহ! আমি এগুলো পারব না।
-আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি লিখে দিচ্ছি, তুমি ফার্মেসি থেকে নিয়ে এসো। এবার হল তো?
-আপনি এসব কী বলছে আজ! Certified ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ফার্মেসি ঔষধ দেবে নাকি! ফার্মেসিওয়ালার সাথে আমিও চৌদ্দ শিকের ভেতরে যাবো।
- বৎস! দেখো, একজন মানুষের শারীরিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া শুধুমাত্র চিকিৎসা বিজ্ঞানের বই পড়ে কেউ ঔষধ দেয় না, দিলে কেউ নেবেও না। অথচ, বইগুলোতে পরিষ্কার আছে, কোন ঔষধটা কোন রোগের। এভাবেই প্রতিটি বিষয়। যেমনঃ সহজ ভাষায় রচিত আইনের বই থাকা সত্ত্বেও মানুষ মামলা-মোকদ্দামায় এডভোকেট কিংবা ব্যারিস্টারের আশ্রয় নেয়। আর তুমি আত্মার চিকিৎসা করার জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়া গ্রন্থ থেকে ডিরেক্ট প্রেসক্রিপশন তুলে নিতে চাচ্ছো,যেখানে রয়েছে কত গভীর বিষয়াবলী! কতটা ভয়ানক হতে পারে চিন্তা করেছো?
-তার মানে কি হুজুর, আপনি কোর’আন এবং হাদিস পড়া থেকে আমাকে অনুৎসাহিত করছেন?
-এই যা। এটা অনুৎসাহ হল নাকি উৎসাহ হল? তোমাকে গভীর অধ্যয়নের কথা বলছি। এবং যতদিন এই পাণ্ডিত্য অর্জন না করছো, আলেমদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষনকে মানতে বলছি। লাইব্রেরি থেকে একটা আইনের বই কিনে কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দু-একটা বই কিনে নিজে নিজে যেমন কেউ ব্যারিস্টারি কিংবা চিকিৎসা করে না বরং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিতের নিকটে যায়, তোমাকেও তাই বললাম।
মনে রেখো, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে নিজেদের জীবদ্দশায় পেয়েও পরবর্তীতে সাধারণ সাহাবায়ে কেরাম শরীয়ত-বিশেষজ্ঞ সাহাবীদের অনুসরণ করতেন। কখনো নিজে নিজে জ্ঞানের চাষ করেন নি।
#হু_জু_রে_র_হু_জ_রা