somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষক আন্দোলনঃ পেশাগত সম্মান বনাম প্রতিষ্ঠান এর সম্মান

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেধা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ,
বাধ্যতামূলক শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু ,
কোর্স কারিকুলাম ডাইনামিক করা,
প্রতি ক্ষেত্রে সত্যিকারের সৃজন শীল প্রশ্নপত্র চালু,
এক্সটার্নাল টিচার দিয়ে প্রশ্ন করানো,
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় উত্তর পত্রের মূল্যায়ন চালু,
বিশ্ববিদ্যালয় থিসিস/রিসার্চ বেইজড করার মত বহু কাজ করার আছে বাংলাদেশে। হ্যাঁ শিক্ষকদের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের করে আনা দরকার।
গতানুগতিক এবং মুখস্ত লেকচার নেয়া কিভাবে আটকানো যায় সেগুলো ভাবতে হবে। তবে তার মানে এই নয় যে তাঁদের বেতন বেতন এর তুলনামূলক অবমূল্যায়ন কিংবা ক্যারিয়ার গ্রেড এর উচ্চতা অন্য পেশার তুলনায় কমিয়ে ফেলাকে সাপোর্ট করতে হবে।


বরং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সভ্য দেশে অন্য সকল পেশাজীবীদের চাইতে বেতন এবং সম্মান বেশি পান। একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বেতন কাঠামো সহ নিজস্ব পরিচালনা কালচার থাকাই প্রাতিষ্ঠানিক শাসনের কথা। বাংলাদেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্বশাসিত কিন্তু আচার্য তো দুরের কথা একজন উপাচার্জও নিয়োগ দিতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই মেধাভিত্তিক নিয়োগ কাঠামো, নেই শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক সময়েই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষমতাসীন ছাত্র সঙ্ঘঠনের চাপে ২য়-৩য় বিভাগ পাওয়া এত বেশি দলীয় কর্মীকে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে যে তাঁদের বেতন দিতে ভর্তি ফি এবং বেতন বাড়ানো হয়েছে! বুয়েটে পরীক্ষা না দেয়া নেতাকে পাশ দেখানোর মত চাঞ্চল্যকর কাজ হয়েছে যা পরে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন খাত, ঢাবি জাবি ট্রান্সপোর্ট সেকশন এইসব চুরির কারখানা।। কোন পর্যায়ের গবেষণা কাজ না করেই বহু টিচার আজ প্রফেসর যাদের কাজই নির্লজ্য দলবাজি। এভাবেই পদে পদে প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ নিজেদের শক্তি হারিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় গুলো প্রতিষ্ঠানিক ক্ষমতা ফিরে পেতে আন্দোলন করুক, দুর্বিত্তদের প্রভাব এবং অনধিকার চর্চা রোধে একজোট হয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠুক, তাইলে শিক্ষকের সম্মান একদল চোরের হাতের মোয়া হয়ে থাকবে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা মান এবং সচ্চতা আনুক, তাইলে একদিন নিজেদেরই শক্তি এত সংহত হবে যে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়কে চাহিদামাফিক ফান্ড দিতে বাধ্য হবে।

"সচিব হব কেন? আমরাই সচিব বানাই।" এই বক্তব্য শুধু ব্যক্তির না হোক, প্রতিষ্ঠানের হয়ে উঠুক। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলো এতটা শক্তিশালী হয়ে উঠুক যেন তাঁরা বলতে পারে, "এখানে কেউ হাত দিলে, সেই হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে (আইনি কাঠামোতে)"।
আর হ্যাঁ আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার (পড়ুন ঘুষ ভিত্তিক প্রশাসনিক ব্যবস্থার) নিপাত চাই। ঘুষ, তদবির এবং নিজেদের অযোগ্যতা ঢাকতে এক্সপার্টদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ-এই তিনের আতত ভাঙ্গতে পারলেই শুধু দেখা যাবে, প্রশাসনের হাতে পেশাদার এবং পেশাহীন সকল নাগরিকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিরাপদ।


এই কাজে প্রতিষ্ঠান হিবেসে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্টেকচূয়াল হিসেবে শিক্ষকগণের এগিয়ে আসতে হবে। অযোগ্যকে বিসিএস নামক মুখস্ত বিদ্যার ফাঁদ দিয়ে সচিব করার প্রথা কিভাবে বাতিল করতে হবে সেই ফর্মূলা শিক্ষকদেরই বের করতে হবে।

ব্যক্তি বা নির্দিস্ট পেশাভিত্তিক সম্মানের আন্দোলন নয়, প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার এন্ড টু এন্ড আন্দোলন চাই। প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক শাসন কাঠামোর আন্দোলনই টেকসই সমাধান এর পথ সুগম করবে। নাইলে আঘাত আসবে ভিতরের শিক্ষক নামক দলবাজ লূটেরা দের কাছ থেকে বাইরের চোরদের কাছ থেকে।

আমরা চাই চলমান আন্দোলনে শিক্ষকরা জয়ী হোন। বেতন এবং পদমর্যাদার এই স্ট্র্যাটেজিক আন্দোলনে হেরে গেলে শিক্ষকদের সামনের দিনে অনেক ইন্টেলেকচুয়াল হার মেনে নিবার জন্য তৈরি থাকতে হবে। এর প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয় এর উপর পড়বে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় এর শক্তিহীন হয়ে পড়া মেনে নেয়া যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরাধের সেকাল ও একাল

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

সেকাল
--------------------------------------------------------
স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা হেনরি বেভারিজ ছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য৷বেভারিজ ১৮৭০ সালের মার্চ হতে ১৮৭১ সালের মার্চ এবং ১৮৭১ সালের জুন থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশালের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×