somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকতার একটি বিশ্লেষন

১৭ ই মার্চ, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাঠ্য ১ঃ নাস্তিকতা কি

স্রষ্টার অস্থিত্বে অবিশ্বাস কেই নাস্তিকতা বলা হয়, এটি একটি বিশ্বাস কারন স্রষ্টা নেই এ ধরনের কোন প্রমানও নেই, তাই শুধু মাত্র অজ্ঞায়বাদ কে কোন বিশ্বাস বলা যায় না তথাপি নাস্তিকরা যুক্তিদেখান আস্তিকতার বর্জন কেই নাস্তিকতা বলা যায়, নাস্তিকতা বিশ্বাস নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতি। কিন্তু অক্সফোর্ড ডিকশনারী সহ বিভিন্ন ডিকশনারীতে নাস্তিকতাকে একটি বিশ্বাস ই বলা হয়েছে। দেখা যায়, ইংরেজি এথিজম শব্দটি গ্রিক এথাস শব্দ থেকে আগতা যারা স্রষ্ঠাকে অস্বীকার করত, অথবা ঐ সকল ব্যাক্তি যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে। এ হিসাবে থেকেও নাস্তিকতা কে একটি বিশ্বাস বলা যায়। যাইহোক, বিশ্বাস বা বিশ্বাসের অনুপস্থিতি একটি হলেই হল।

পাঠ্য ২ঃ কারা নাস্তিক এবং কেন

প্রশ্ন হল মানুষ নাস্তিক কেন হয় বা কারা নাস্তিক । এ প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাকে প্রতিটি সমাজ ব্যাবস্থা দেখতে হবে। আপনি জার্মানিতে যান, জার্মানিতে এমন কোন মানুষ পেতে পারেন যে জার্মান মানুষ যতই সভ্য হোক, তার দৃষ্টিতে জার্মান খারাপ। এ ধরনের মানুষের সংখ্যা তাদের মোট জনসংখ্যার ৫% নিচে হবে। (কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, যেমন যে কোন প্রকার রিভুলোশনের আগ মুহূর্ত্বে)

ঠিক তেমনি আপনি চীনে যান, এখানেও একই চিত্র পাবেন, কিছু লোক কিছুতেই চীনকে পছন্দ করে না। এবং আবারো এদের সংখ্যা খুব বেশী আকারে পাবেন না। রাশিয়া, আমেরিকা কেউ এর থেকে বাদ নয়। ভারতেও এ ধরনের ব্যাক্তিদের পাবেন যেমন মাওবাদী। আসলা তারা ঐ সকল ব্যাক্তি যারা ঐ সমাজ ব্যাবস্থার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি, তাই তারা ঐ সমাজের সর্বদা বিরোধীতা করে। তারা ভাল না খারাপ সে প্রশ্ন আপাত আমি করছি না, কারন সময় আর পরিবেশ অনুষারে তা ভিন্ন হয়।

বাংলাদেশের নাস্তিকরাও ঐ প্রকারের। তারা সমাজের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি, তাই সর্বদা সমাজের বিশ্বাসকে অস্বীকার করেই সমাজের প্রতি তার প্রতিবাদ। ভাল করে লক্ষ্য করে দেখবেন, প্রতি ২০ জনে একজন ব্যাক্তি ও এ রকম না। তাই তাদের জনসংখ্যা ৫% এর নিচে। কিন্তু বাংলাভাষী বাকি জনগুস্টির "ভারতীয় ফিলসফীতে" নাস্তিকতাও গ্রহন যোগ্য হওয়ায়(আগ্রুমেন্টেটিভ, কেউ দ্বাবী করেন, আবার কেউ অস্বীকার করেন), বাংলা ব্লগ গুলিতে এই মতবাদ আলাদা ভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত।

পাঠ্য ৩ঃ বাংলাদেশী নাস্তিক

বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে চলে আসি, পৃথিবীর অধিকাংশ নাস্তিকরা যেমন যুক্তি ব্যাবহারে ইব্রাহিমের ধর্মেকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেয়, তেমনি বাংলাদেশের মানুষ অধিকাংশ মুসলিম এবং ইব্রাহীমি হওয়ায়, নাস্তিকরা মুসলিমদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে ইসলাম বর্নিত স্রষ্টাকে ভুল প্রমানেই ব্যাস্ত থাকতে দেখা যায়। (ভারতীয় ফিলসফির কারনে যারা নাস্তিক, আপাত তাদেরকে আমরা হিসাবের বাহিরে রাখবো)

মুসলিম বাংলা সমাজে নাস্তিকতা বাড়ার অন্যতম কারন হতাশা। বিভিন্ন প্রকার হতাশ্‌ বিভিন্ন প্রকার মানুষকে আচ্চায়িত করে। এই হতশা মানুষের মনে ক্ষোভ জন্ম দেয়। এই ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে প্রথমে অস্বীকার, পরে স্রষ্টাকে গালি গালাজ সহ, বিশ্বাসী বাক্তিদের প্রতি তীব্র আক্রোশে পরিনিত হয়। আমাদের সমাজে শিখানো হয়, নামাজ পড়, তাহলে আল্লাহ পাক এই দিবেন সেই দিবেন, অথবা এই কাজ কর, তাহলে আল্লাহ পাক এই জিনিস দিবেন সেই জিনিস দিবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। যখন ই কোন মানুষ কোন কিছু পেতে ব্যার্থ হয়, তখনি তার মনে প্রথম ভাব আসে, আল্লাহ পাক আমাকে দেননি। একবার দেন নি, দুই বার দেন নি, তিনবার দেন নি, আমি আল্লাহ পাকের জন্য এই করলাম সেই করলাম, তবুও তিনি এই বিপদ দেন, সেই বিপদ দেন ইত্যাদি। এভাবেই হতাশা বাড়তে থাকে। তাছাড়া, নদীর ঐ পারের মানুষের সর্বদা ভাল থাকে এই ধারনার বশবর্তি হয়ে, অনেকেই ভিন্ন ব্যাক্তির সাথে নিজেকে তুলনা দেয়। ঐ ছেলে নামাজ পড়ে না কিংবা ঐ কাজ করে কিন্তু আল্লাহ পাক তাকে এই দিয়েছেন সেই দিয়েছেন ইত্যাদি। এক সময় সে বলে, আল্লাহ পাক কে ডাকাই উচিত না, তারপরেই নিজেকে নাস্তিক বানিয়ে নেয়। এটি আস্তে আস্তে আক্রোশে পরিনত হয়।

পাঠ্য ৪ঃ নাস্তিকরা কেমন জ্ঞানী

কিছু কিছু ব্যাক্তি যারা সমাজের সাথে মানাতে পারে না, তারাও সমাজ বিরুধীতার অংশ হিসাবে নাস্তিক হয়ে উঠে। এই নাস্তিক ব্যাক্তিরা তাদের দর্শন থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পাবার চেষ্টা করে, এবং এর থেকেই তারা যুক্তিবাদের দারস্থ হয়। অনেক সময় ধরে, আস্তিক দের সাথে তর্কের প্রয়োজনে কিংবা নিজেদের টিকে থাকার প্রয়োজনে সব সময় নুতুন যুক্তি সৃষ্টিতে তারা ব্যাস্ত হয়। সে হিসাবে যখন কোন ইমোশনাল আস্তিক তাদের সাথে কথা বলতে যায়, তখন নাস্তিক বাক্তি পাকা খেলোয়ারের মত তাকে যুক্তিতে কাপোকাত করতে পারে। এর থেকেই কিছু কিছু সাধারন মানুষের মনে এই ধারনা জন্ম হয় যে নাস্তিকরা বেশ জ্ঞানী। আসলে যুক্তির দক্ষতায়, সাধারন আস্তিকগন নাস্তিকদের নিকট প্রায় শিশুর মত।

পাঠ্য ৫ঃ নাস্তিকদের হতাশার তীব্রকরন

নাস্তিক ব্যাক্তিদের আশা বলে কিছু নেই, থাকলেও তা বস্তুবাদী যা কি না অধিকাংশ সময় অধিকতর যোগ্য বা প্রাকৃতিকভাবে নির্বাচিত ব্যাক্তি কর্তৃক হারানোর ভয় থাকে। এ জন্য টিকে থাকার সংগ্রামে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে। জীবনে চাওয়া না পাওয়ার বেদনা গুলি নাস্তিকদের অন্তরকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। কাওরো কর্তৃক লিখিত ভাগ্যে বিশ্বাস না থাকায়, জীবন নদীর জোয়ার ভাটা এদের মারাত্বক রূপে প্রভাবিত করে।

(চলবে.......)

রেফারেন্সঃ
ওয়েকিপিডিয়া আর্টিক্যাল নাস্তিক্যবাদ, ইংরেজি আর্টিক্যাল Atheism http://en.wikipedia.org/wiki/Atheism

Internet Encyclopedia of Philosophy: আর্টিক্যাল Atheism http://www.iep.utm.edu/atheism/
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×