১২ তারিখ রাত ১১.৩০ এ আমাদের যাত্রা শুরু করার কথা। শেষ মূহুর্তে দলের সদস্য সংখ্যা কমে গিয়ে দাড়াল ৬ জনে। মেজাজ টা আবার বিলা হইল। পুরা ৬০০ টাকার কট। এইখানে বলে রাখা ভাল আমরা হলাম ইকোনমি ক্লাসের ট্রাভেলার। পয়সা কম, মজা বেশি এই নীতিতে বিশ্বাসী। পরে অবশ্য আমাদের রাজ (কোয়াটার মাস্টার)সিস্টেম কইরা টিকিট বিক্রি করে দিয়েছিল।
যাই হোক আমাদের যাত্রা শুরু হল। ভোর পাচটায়। আমরা চট্টগ্রামে পোছেই সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে চলে গেলাম বদ্দারহাট বাস কাউন্টারে। এখান থেকে বান্দরবান এর বাস ছাড়ে।বাস এ উঠে দিলাম একটা ঘুম।ঘুম থেকে উঠে দেখলাম বাস খাড়া ঢাল বেয়ে উপরে উঠছে। একটু পরে বাস পৌছল বান্দরবান শহরে। সময় আনুমানিক ৭ টা।
হালকা নাস্তা করে আমরা যখন থানচি যাবার বাস কাউন্টারে গেলাম তখন দেখি দিনের প্রথম বাস ছেড়ে চলে গেছে। পরের বাস সকাল ১০.৩০। আমাদের প্ল্যান থেকে নীলগিড়ি বাদ দিতে হল। কিন্তু পরে বুঝেছিলাম নীরগিড়ির চেয়েও এক্সা্ইটিং কিছু আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।
যখন বাস কাউন্টারে আসল তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা বাস এর ছাদে উঠব (যদিও আমরা সিট এর জন্য টিকেট কেটে রেখেছিলাম)। বাস ছাড়ল। আমার দেখা এ যাবত কালের সকল রাস্তার মধ্যে বানদরবান টু থানচি রাস্তা হচ্ছে বেস্ট। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এর জন্য স্যালুট।
একে তো খাড়া ঢাল তার উপরে বাস এর ছাদ এ বসা। বেশ উচু থেকে সব কিছু দেখা যাচ্ছিল। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে যদি বুকে সাহস থাকে তবে বাসের ছাদে উঠে থানচি যাওয়া উচিত। বাসের ছাদ থেকে যখন রাস্তার পাশের খাড়া ঢাল এর দিকে তাকাচ্ছিলাম তখন যে অনুভূতি হচ্ছিল তা লিখে প্রকাশ করা যাবে না।
তবে বাসের ছাদে বিপদ ও আছে। গাছের ডাল এর বাড়ি খেয়ে আমাদের প্রায় সকলের নাক, কান অথবা গাল কেটেছে। আস্তে আস্তে বাস যত নীলগিড়ির দিকে যাচ্ছিল ততই মেঘ আমাদের কাছে চলে আসছিল।
একসময় মেঘ এর মধ্য দিয়ে বাস চলতে লাগল। আমরা মেঘ ধরার ব্যার্থ চেষ্টা করতে লাগলাম। মেঘ ধরতে ধরতে বাস এসে থামল নীলগিড়িতে। বাস এর অর্ধেকের বেশী লোক নীলগিড়িতে নামল। বাস নিচে পুরোপুরি খালি। কন্ডাক্টর নিচে নেমে বসার জন্য চিল্লাচিল্লি করতে লাগল। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ।আমরা মহা আনন্দে মেঘ ধরায় ব্যাস্ত।
বাস আবার চলতে লাগল। কিছুক্ষন পরে সাইনবোর্ড দেখলাম লেখা বিপদজনক ঢাল। ঢাল টা আসলেই বিপদজনক। প্রায় ৬০ ডিগ্রি এংগেলে বাস যখন ধীরে ধীরে নামছিল তখন আসলেই ভয় লাগছিল। আমি বাসের ছাদে বসে বসে চিন্তা করতে লাগলাম কিভাবে সেনাবাহিনী এই রাস্তা তৈরী করেছে। সেনাবাহিনীকে নিয়ে ব্লগে অনেক কিছু লেখা হয়। কিন্তু তাদের এই কাজ গুলো কখনোই ব্লগে লিখতে দেখিনি।
যাই হোক যেতে যেতে এক সময় বাস তার গন্তব্যে এসে পৌছলাম। কিন্তু একি! বাজার কই এখানে তো দেখি দুটো চায়ের দোকান। দোকান থেকে জানতে পারলাম সামনে নদী, নদী পেরলে থানচি বাজার। আমরা খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পেরোলাম…………………
তারপর ……….
আফিস যাবার সময় হয়ে গেছে। বাকি টুকু আগামীকাল।;
পরের পর্ব বান্দরবান এর অদেখা রূপ (পর্ব-২) বড় পাথর
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:১৪