somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেখকের কান্না !!!

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন থেকে একজন লেখক বই লেখা শুরু করে তখন তাকে কিছুটা বাইরের জগতে চলে যেতে হয়। সে জগত টা শুধুই চিন্তার, শুধুই ভাবনার, শুধুই সৃজনশীলতার। সে যখন বই লিখে তখন সে অনেকটা পাগলের মত হয়ে যায়, ভাবনার পাগল, বাস্তবতার পাগল। খাওয়া-দাওয়া সবই দূরের যাত্রী হয়ে যায়। সে জানে বই লেখা অনেক কষ্টের, কিন্তু সে পিছিয়ে যায় না, শুধুই পাঠক কে ভালো কিছু দেবার জন্য এগিয়ে যায়। সে অনেক পড়াশুনা করে, অনেক ভাবে। তার প্রতিটি বর্ণ, শব্দ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যে চিন্তা মাথায় কাজ করে তা হচ্ছে, পাঠকদের ভালো লাগবে তো, পাঠক পছন্দ করবে তো !!!

বই লেখা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তা কাগজের মলাটে বই আকারে রূপ নেয়, তখন আরেক বিভীষিকা শুরু হয়। সে কিভাবে কি করবে ভেবেই পায় না। সে বই সম্পর্কে অনেক ভাবে, অনেক ! কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ তাকে প্রচণ্ড রকমের অনেক ভুল বুঝে, কিন্তু সে হাঁসিমুখে সব মেনে নেয়। কারণ রাগ করা তাকে মানায় না।

বই প্রকাশ হবার পর তার কাছের কিছু মানুষ ভালোবেসে তার কাছে সৌজন্য সংখ্যা চায়। এ চাওয়া অবৈধ নয়, বরং বড্ড বেশী যৌক্তিক। কারণ এটা অধিকারের শ্রাবণ। কেউ বই চাইলেও সে কাউকে মানা করতে পারে না, কিন্তু সে প্রতিমুহূর্তে ভাবে সে কিভাবে মেইন্টেইন করবে? যারা প্রকাশনীর খরচে বই বের করে তারা হয়তো প্রকাশনী থেকে কিছু বই ফ্রি পায় কিন্তু যারা নিজের খরচে বই বের করে তারা একটি কপিও ফ্রি পায় না। তারা যদি কাউকে গিফট করতে চায় তাহলে সে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে কিনে কাউকে সৌজন্য সংখ্যা দিতে হয়। তাই সে ভাবে কি করবে সে?

লেখকের পাশের প্রিয় বন্ধুটি খুব বেশী ভালোবেসে এক কপি ফ্রি বই চায়, কিন্তু লেখক কোন উত্তরই দিতে পারে না। কারণ অনেকগুলো টাকা খরচ করে বই বের করার পর তার কাছে অত টাকা থাকে না যে সবাই কে বই গিফট করবে। কিন্তু তারপরেও কিছু গুরুজনকে কিছু বই গিফট করতে হয় আশীর্বাদের জন্য। এক্ষেত্রে বন্ধুরা রাগ করেআর অপবাদ দেয় বই একটা লিখে সে খুব ভাব ধরে। আসলে লেখক মানুষ গুলো কেন জানি সব পারলেও ভাব ধরতে পারে না। কেউ তাদের কষ্ট বুঝে না, কেউ বুঝতে চায় না। তাছাড়া প্রতিটি লেখক ই চায় সে তার প্রিয় মানুষ গুলোকে সৌজন্য সংখ্যা দিতে, কিন্তু লেখকের না কিছু করার থাকে না, তার হাত পা প্রকাশক এর কাছে বাঁধা থাকে।

আপনারা হয়তো দেখেন কাগজের মলাটের একটি সুন্দর বই বের হয়ে আসছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন এই বইটি বের করতে গিয়ে লেখকের যে কি পরিমাণ কষ্ট সহ্য করতে হয় তা শুধু লেখকই জানে কিংবা যারা এ সেক্টরে কাজ করে তারা জানেন। সব কিছু উপেক্ষা করে লেখক রাগ করে না, কারো সাথেই রাগ করে না, বড়জোর নিজের সাথে রাগ করে, নিজের সাথে কাঁদে, নিজের সাথে অভিমান করে, নিজের সাথে ঝগড়া করে কিন্তু কাউকে কখনও কাউকে বুঝতে দেয় না। কারণ সে করুণা চায় না, কেবলই ভালোবাসা চায়, প্রকাশিত বই এর সার্থকতা চায়, মানুষের ভালোলাগা হতে চায়, তার চেয়ে বেশী কিছু নয় !!!

একজন লেখকের বই প্রকাশের জাস্ট হাতে গোনা ২/৩ টি সমস্যার কথা বললাম। এরকম শত, সহস্র সমস্যা কে সমাধানে রূপ দিয়ে একটি বই এর জন্ম হয়। আর দিন শেষে লেখক শুধু একটি কথাই ভাবে আমার কাছের মানুষগুলো আমার বই সংগ্রহ করবে তো !!! এভাবেই নীরব দীর্ঘনিঃশ্বাস আর আর বেদনার অশ্রু বিসর্জনের মাধ্যমে একজন লেখক বেঁচে থাকে তারপরেও সে সারাদিন হাঁসিখুশী থাকে, যেন নিজের সাথে নিজেই অভিনয় করে।

একজন লেখক কে ''হারতে দেওয়া কিংবা হারাতে দেওয়া'' সম্পূর্ণ নির্ভর করে তার পাশের মানুষগুলোর উপর। কারণ লেখক বই লিখে তার পাশের মানুষগুলো কথা ভেবে। লেখকের কলম চলে এবং লেখক নিত্যনতুন চরিত্র চিত্রণ করে এ মানুষগুলোর কথা কল্পনা করে !!!

---গোলাম রাব্বানী
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×