somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসলেই কি ঈশ্বর বলে কেউ আছেন নাকি নেই !!!

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একজন মুসলমান বিশ্বাস করে, আল্লাহ বলে একজন আছেন যিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। একজন হিন্দু বিশ্বাস করে, ভগবান বলে একজন আছেন যার সব কিছু করার ক্ষমতা আছে। একজন খ্রিষ্টান বিশ্বাস করে, ফাদার বলে একজন আছে যিনি সর্বজ্ঞানী।
তাহলে বৌদ্ধ ধর্মের কি অবস্থা? বৌদ্ধ ধর্মে স্রষ্টার স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। তাদের ধর্মগ্রন্থ "ত্রিপিটক" এ স্রষ্টার ধারণা না থাকলেও কিছুর দরকার হলে প্রভুর কাছেই চায়। এমনটাই জানি আমি।

সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি আল্লহ, ভগবান, ফাদার, প্রভু সবাই একজন। একেক ধর্মের মানুষ একেক নামে ডাকে। মুসলমান যাকে আল্লাহ বলে ডাকেন, হিন্দু তাঁকে ভগবান, খ্রিষ্টান তাঁকে ফাদার কিংবা বৌদ্ধ তাঁকে প্রভু বলে জানে।

তার মানে হচ্ছে, যারা বিশ্বাস করে স্রষ্টা আছেন তারা আস্তিক, আর যারা স্রষ্টাতে বিশ্বাস করেন না তারা নাস্তিক। নাস্তিক যে কোন ধর্মের মানুষ ই হতে পারে।

চলুন, একটু বাস্তবতায় চলে যাই,
---আগে বিশ্বাস শব্দটির জন্ম হয়েছে নাকি অবিশ্বাস শব্দটির জন্ম হয়েছে?
অবশ্যই আগে বিশ্বাস শব্দ টির জন্ম হয়েছে। ওকে ফাইন! তার মানে হচ্ছে আগে মনে করা হত স্রষ্টা আছে, আর এখন মনে করা হয় স্রষ্টা নেই। কি ঠিক তো !!!
তার মানে স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস আর অবিশ্বাস এর মাঝে যে তর্ক টি আছে তাই হচ্ছে স্রষ্টার অস্তিত্ব! আর স্রষ্টার অস্তিত্ব আছে মানে স্রষ্টা আছে।

চলুন, একটু বোধে চলে যাই,
---যদি পৃথিবীতে ঈশ্বর না ই থেকে থাকে তাহলে দিন শেষে ঘুমানোর আগেআপনার মনের অপূর্ণতার কথাগুলো, আপনার অভিযোগগুলো কার কাছে মনে মনে তুলে ধরেন, যেগুলো কোন মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারেন না? নিচ্ছই অদৃশ্যমান কোন সত্তার কাছে! যে সত্তার কাছে অভিযোগ-অনুযোগ গুলো তুলে ধরেন তার নিচ্ছয়ই কোন বিশেষ ক্ষমতা আছে? সে নিচ্ছয়ই মানুষ নয়?
তাহলে সে কে? সে কি প্রভু নয়? হ্যাঁ, তিনি ই আমাদের স্রষ্টা। যা কারো সাথে শেয়ার করা যায় না তার সবটাই স্রষ্টার সাথে শেয়ার করা যায়। তার মানে,নাস্তিক রা গোঁড়ামির কারণে স্রষ্টা কে স্বীকার না করলেও তাদের মন কিন্তু ঠিক ই স্বীকার করছে পৃথিবীতে "প্রভু" বলে একজন আছে।

চলুন, একটু বিশ্বাসে তে চলে যাই,
নাস্তিক রা হয়তো বলবেন "স্রষ্টা" কে চোখে দেখা যায় না, তাই স্রষ্টা কে বিশ্বাস করি না। তাহলে শুনুন, আমরা কেউই চোখে দেখি নি যে আমাদের বাবা কে? কিন্তু তারপরেও মা যাকে বাবা বলে পরিচয় করিয়ে দেয় তাঁকেই আমরা বাব বলে জানি, কারণ বিশ্বাস। অনেকেই হয়ত বলবেন "ডিএনএ টেস্ট" করলেই জানা যাবে বাবা কে। যদি তাই হয়, তাহলে আপনি নিজের বাবার সম্বন্ধেই প্রশ্ন তুলছেন যে "ডিএনএ টেস্ট" ছাড়া বাবা ডাকবেন না, তাহলে বলতেই হয় "ইউ আর সিক।"

চলুন একটু যুক্তিতে চলে যাই,
আচ্ছা, যারা "বলছেন "ডিএনএ টেস্ট" করালেই বাবার পরিচয় জানা যাবে, তাদের ক্ষেত্রে কোথা হচ্ছে, "ডিএনএ" আবিস্কার হয়েছে কবে? ১৯৮৪ এর দিকে আবিষ্কৃত হয়েছে। তাহলে "ডিএনএ" আবিস্কার হবার আগে মানুষ তাহলে কিভাবে বাবা বলে ডাকতো? ডেফিনিটলি বিশ্বাসের উপর! তাছাড়া যারা এ কথা বলেন তারা নিচ্ছয়ই "ডিএনএ টেস্ট" করানোর পর আপনার বাবাকে বাবা বলে ডাকেন নি?
যেদিন থেকে কথা বলা শিখেছেন সেদিন থেকেই "মা বলার পাশাপাশি বাবা বলে ডেকেছেন।"

চলু একটু পেঁচাই,
যদি কারো কথা পেঁচাইতে মন চায় তাহলে আসুন, আমিও পেঁচাই !!!
আমি যদি আস্ক করি মুরগি আগে নাকি ডিম আগে? তখন আপনি হয়তো বলবেন ডিম আগে, তখন আমি বলবো তাহলে মুরগি আসছে কোথা থেকে? আপনি বলবেন ডিম থেকে। আমি বলবো সে ডিম আসছে কোথা থেকে? আপনি বলবেন মুরগী থেকে। এভাবে বছর এর পর বছর চলে যাবে কিন্তু সমাধান আর হবে না।

ঠিক তেমনিভাবে "ঈশ্বরতত্ত্ব" নিয়ে আমি যদি আপনাকে বলি স্রষ্টা মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন । তখন নাস্তিক মানুষ টি হয়তো বলবে স্রষ্টা বলে কেউ নাই। কারণ স্রষ্টা চোখে দেখা যায় না। ওকে ফাইন !!! একদম সহজ সমাধান দিচ্ছি !!!
-আমি নাস্তিক মানুষটিকে বললাম আপনি পৃথিবীতে আসছেন কিভাবে?
-তখন সে বলবে আমার বাবা-মায়ের কারণে।
-আপনার বাবা-মা পৃথিবীতে আসছে কিভাবে?
-সে আবার বলবে তাদের বাবা মায়ের কারণে।
-তাদের বাবা-মা পৃথিবীতে এসেছেন কিভাবে?
-সে আবারো তেনা পেঁচাবে তাদের বাবা মায়ের কারণে।
-ওকে ফাইন! ধরেন "বাবা-মা পর বাবা-মা" এভাবে আসতে আসতে পৃথিবীর একদম প্রথম মানুষ "আদম (আঃ)" কথায় আসি। বলেন তো তিনি পৃথিবীতে আসছেন কিভাবে?
-তিনি ও তাঁর বাবা-মা থেকে আসছেন।
-উঁহু, এটা হবার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ পবিত্র "আল-কোরআন" কিন্তু তাই বলে। এবং সাইন্স "আল- কোরআন" কে মিত্থা প্রমাণ করতে পারে নি। তাঁর মানে বিজ্ঞান ও মেনে নিচ্ছে পৃথিবীর একদম প্রথম মানুষ "আদম (আঃ)"। এখন বলেন, তাঁর যেহেতু কোন বাবা-মা নেই, তাহলে তিনি এসেছেন কোথা থেকে?
-নাস্তিক টি তখন হয়তো আর কিছুই বলার জন্য খুজে পাবে না। কারণ সে সাইন্স এর উপর যাওয়ার ক্ষমতা রাখে না।

এবার আমি বলি শুনুন, যেহেতু মানুষ মুরগীর মত ডিম ফেটে বের হয় নি। সেহেতু কোন না কোন ঐশ্বরিক ভাবেই মানুষের জন্ম হয়েছে। এবং সে একই ভাবেই পৃথিবীর জন্ম হয়েছে। তাঁর মানে পৃথিবীতে স্রষ্টা বলে কেউ একজন অবশ্যই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

কোন এক মনিষী বলেছেন, "ধর্মের প্রতি অজ্ঞতাই মানুষ কে নাস্তিক বানায়।"
আর মনে রাখবেন, সত্য কখনও প্রমাণ করতে হয় না কিন্তু মিত্থার ক্ষেত্রে সবসময় প্রমাণের প্রয়োজন হয়। তার মানে এটা আর নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই যে ঈশ্বর বলে পৃথিবীতে একজন আছেন। এটা চিরন্তন সত্য !!!

সবশেষে কেউ যদি আমাকে ঈশ্বর কে বিশ্বাস না করার পেছনে ৫ টি পিউর লজিক দেখাতে পারে তাহলে আমি ব্যাপার টি ভেবে দেখবো। আগেই বলে নিচ্ছি কেউ চোখে দেখেন নাই তাই বিশ্বাস করবেন না এই "এবসার্ড লজিক" দেখাবেন না প্লিজ!

আপনি মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান যে ই হয়ে থাকেন না কেন, দিনের শেষে এটাই প্রমাণ করে স্রষ্টা বলে একজন পৃথিবীতে আছে, অবশ্যই আছে। নাস্তিক কে আস্তিক বানানোর দায়িত্ব আমার না, কিন্তু আস্তিকের ভাণ্ডার ভারী করার দায়িত্ব আমার। তাই এ লেখা টি লেখা। লেখা টি ভালো লাগলে লাইক না দিয়ে শেয়ার করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন অনুমতির প্রয়োজন নেই। কারণ আপনার শেয়ার করা পোস্ট দেখে যদি কেউ ভুল বুঝতে পেরে সঠিক পথে আসে, তাতেই আমার লেখার সার্থকতা !!!

জয় হক সৃষ্টির, জয় হক স্রষ্টার !!!

---গোলাম রাব্বানী
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×