আজ ৪ ডিসেম্বর পলো গ্রাউন্ডে আওয়ামিলীগ সমাবেশ আছে। ১০ দিন ধরে পুরা শহর মাইকিং , পোস্টারিং, ব্যানারিং, ক্যাম্পিং করে গাটা চট্টগ্রাম বিভাগে প্রচারনা চালানো হয়েছে। উল্লেখ্য প্রায় ১১ বছর পর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম আসছেন। সরকারের ৩ টার্ম চলে যাচ্ছে। ঠিক কি কারণে প্রায় এক যুগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বানিজ্যিক রাজধানী নামে খ্যাত চট্টগ্রামে আসেন নি আমার ঠিক জানা নেই। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে দলটির আয়োজনের শেষ নেই। সড়কের সৌন্দর্য বর্ধন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ফুটপাথ একেবারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও রং করা, রঙিন বাতি দিয়ে ফ্লাইওভার সাজানো এবং বিভিন্ন এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত করেছে। গতকাল নগরীর আগ্রাবাদ যারা গিয়েছেন তারা চিরপরিচিত এক আগ্রাবাদ দেখেছে। দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে সবাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছে। মানুষ ধরেই নিয়েছে আজ চট্টগ্রামের অঘোষিত ছুটির দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসবেন তাই একদিন সব ব্যাবসায়ীরা ধরেই নিয়েছে রবিবার কোন ব্যবসা হবেনা। দোকান পাট অফিস বন্ধ রাখতে হবে। অথচ আজ রবিবার সপ্তাহের প্রথম কর্ম দিবস। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের প্রধান রাস্তাগুলো। অধিকাংশ পোস্টার ও ব্যানার আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে বিভিন্ন পদ প্রত্যাশী নেতাদের পক্ষ হতে সাঁটানো হয়েছে। বুঝা যাচ্ছে জনগনের ক্ষতি করে সব গুলা নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য মরিয়া। যদিও শহরের রাস্তা গুলো ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর দেখতে বেশ লাগছে।
বৃহঃপতি দুপুর ২ টা থেকে শনিবার পর্যন্ত অলমোস্ট সবকিছু এমনিই বন্ধ । তাই রবিবার বেশ গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রামের বানিজ্যে। দেশের এই ক্লান্তি লগে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে পুরা শহর থমকে থাওবে। অথচ বৃহঃপ্রতিবার /শুক্রবার/শনিবার চাইলেই সমাবেশের আয়োজন করা যেতো। চট্টগ্রামের মানুষ ব্যাবসাকে সবচেয়ে বেশীও গুরুত্ব দেয়। আমার মনে হয়না কে সরকারে আছে কে নেই কে থাকবে এগুলো ভাবার সময় আছে। শুধু শান্তিতে ব্যবসা করতে পারলেই খুশী। সপ্তাহের রবিবারে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপল্লজ চট্টগ্রাম শহর স্তম্ভিত। এতে দেশের ক্ষতি হবে অন্তত কয়েকশত কোটি টাকা।
যাই হোক কপাল পোড়া জনম দুঃখী বাংলাদেশীরা। আমাকে যদি প্রধানমন্ত্রীর হয়ে আজ বক্তব্য দিতে বলা হতো আমি বলতামঃ
১) রাজনৈতিক পরিচয়ে যে সব ছেছড়া নেতা কেতা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করে বিশেষ করে চাঁদাবাজি করে তাদের দল থেকে কানে ধরে বের করে দেয়া হবে।
২) যে সব মসজিদ গুলো কমিটির নামে ধান্দাবাজি করে মসজিদ গুলোকে অপবিত্র করছে তাদের তালিকা করা নির্দেশ দিতাম।
৩) ১১ আওলিয়ার পূন্যভুমী চট্টগ্রাম।অলিদের কবর/মাজার গুলো গাঁজার আস্তানা বানিয়েছে ক্ষতি মোল্লারা। প্রশাষণ কে নির্দেশ দিতাম তাদের দেখা মাত্র গুলি করার কারন তারা দেশের ৯০ % মানুষের হৃদয়ে ধারণ করা ধর্মকে কলংকিত করছে।
৪) এস আলমের ৩০ হাজার কোটি টাকা কেলেংকারীর লজিকাল ব্যাখ্যা দিতাম। ব্যাখ্যা দিতে না পারলে জাতীর কাছে ক্ষমা চাইতাম।
৫) ছোট্ট আয়াতের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারার জন্য লজ্জিত হতাম।
৬) সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সক্রিয় চক্রগুলোকে বিশেষ করে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় যারা দুর্নীতি করেছে তাদের কঠিন হাতে দমন করার জন্য প্রশাষনকে নির্দেশ দিতাম।
আমি বলতাম " বিরোধীপক্ষ হিসাব-নিকাশ করে দেখাচ্ছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পঙ্গু করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ যদিও এসব কথা স্বীকার করছে না-তবু জনমনে একটি প্রশ্ন নানা কারণেই উঁকি দিচ্ছে-মুজিব আদর্শের সৈনিকদের গায়ে কেন দুর্নীতির কলঙ্ক থাকবে? বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সততার সঙ্গেই আমৃত্যু রাজনীতি করেছেন। পৃথিবীর কেউই তার বিরুদ্ধে কখনো দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নির্মম মৃত্যুর পরে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ব্যাংক হিসাব তলব করে দেখতে পেয়েছিলেন সোনালি ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে তার নামে মাত্র তিন হাজার টাকা ছিল। এটি আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হওয়ার কথা ছিল, অথচ আমরা দেখছি বঙ্গবন্ধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে চিরকাল সোচ্চার থাকলেও বর্তমান রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা দুর্নীতিই যেন বেশি করে চর্চা করছেন।"
আমি আরও বলতাম চট্টগ্রামের প্রায় নেতাই রাজনীতিকে টাকা কামানোর ব্যবসাতে রূপান্তর করেছে। বলতাম দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতি করার জন্যই দলের ভেতর অনুপ্রবেশ করেছে, ওদের কানে ধরে বের করে দেয়া হবে।
আসলে আমার সব কথা বলতে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে । কোনটা রেখে কোনটা বলব চিন্তা করতে করতে নিএই বিরক্ত হয়ে মাইক ছেড়ে দিতাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৮