somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট" এবং "আব্রাহা ইনস্ক্রিপশন"

২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম কত সালে এইটা নিয়ে স্কলারদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। তবে সাধারণত বলা হয়ে থাকে যে বছর আব্রাহা তার বিশাল হস্তী বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেছিলেন, সেই বছর নবীর জন্ম। আমাদের স্কলাররা এই ঘটনাকে ৫৭০ খৃস্টাব্দে আখ্যায়িত করে থাকেন এবং এটাই আমাদের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস। তার জন্মকাল সম্পর্কে যে জিনিষ গুলি আমরা সাধারণত ফ্যাক্ট বলে জানি তা হচ্ছে, তিনি ৫৭০ খৃস্টাব্দে ১২ ই রবিউল আউয়াল মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন, ঐ বছরটাকে বলা হয় “ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট”। কোরআনের ১০৫ নম্বর সূরা “সূরা ফিল” কে ঘটানার রেফারেন্স ধরা হয়। কিন্তু যে জিনিষটা আমরা অনেকেই জানিনা বা আমাদের জানানো হয় না অথবা ঘটনা বিকৃত করে জানানো হয় তা হচ্ছে ঐ “ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট” বা হস্তী বছরের মুল কাহিনী কি? আব্রাহার কি সত্যিই তার হস্তি বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেছিল? আমি ঘটনাটা বর্ণনা করব আব্রাহার এর আগের ঘটনা থেকে, এর কারন হচ্ছে দুইটা। প্রথমতঃ অনেকেই আব্রাহারের ঘটনার মডিফাইড (সম্মান করে বিকৃত বলছিনা) ভার্সন টা জানেন, কিন্তু তার আগের ঘটনা জানেনা। সেই আগের ঘটনা টা জানানো আমার প্রথম উদ্দেশ্য। দ্বিতীয়তঃ পরে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিয়ে যখন আরও কিছু লিখব তখন এই লেখাটাকে রেফারেন্স হিসাবে ব্যাহার করতে পারব। এক জিনিষ দুইবার লেখার কোন মানে হয়না। কাহিনী গুলি যতটা পারি সংক্ষেপ করার চেষ্টা করব।

হিমাইরেটি রাজ্য (কিংডম অফ হিমায়ের)ঃ
হিমাইরেটি রাজ্য দক্ষিণ আরব, বর্তমান ইয়েমেনর একটি প্রাচীন রাজ্য। এই রাজ্যের শুরু খৃস্টপূর্ব ১১০ সাল। মুলত তারা ইহুদী ধর্মাবলম্বী। এরা সম্রাজ্য স্থাপনের পরে থেকে ধীরে ধীরে সম্রাজ্য বাড়াতে থাকে। পার্শবর্তী রাজ্য সেবাইন (দ্য কিংডম অফ শেবা) দের সাথে তাদের বিভিন্ন সময় রাজ্য দখল নিয়ে যুদ্ধ হয়। খৃস্টপূর্ব ২৫ সালে প্রথমবারের মত পার্শবর্তী সবাইয়েন রাজ্য দখল করে। এর পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে ২৮০ সালের দিকে তারা সম্পূর্ণ ভাবে সেবাইন দের পরাজিত করে একক রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই রাজ্য ৫২০-৫২৫ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।



আরবের শেষ ইহুদী রাজাঃ
এই হিমায়েরিটি গোত্রের শেষ ইহুদী রাজা ইউসুফ বিন যাহ’রা বিন হিমায়েরি আল আসগার তার আরকেটা নাম ছিল যুউ নাওয়াজ (Dhū Nuwās,)। আরব ইতিহাসবিদ ইবনে খালদুন এর মতে তার কোঁকড়ানো চুলের জন্য তাকে এই নামে ডাকা হত। ভন ক্রেমার এর মতে ইয়েমেনরে একটি দুর্গের নাম অনুসারে তাকে এই নাম ডাকা হয়। কোন কোন আরব ইতিহাসবিদ দের মতে তিনি জন্ম সুত্রে ইহুদী ছিলেন না। সিংহাসন আরোহণ করার পর তিনি ইহুদী ধর্ম অবলম্বন করেন। আবার কেউ বলেন তিনি জন্ম সুত্রেই ইহুদী ছিলেন। দ্বিতীয় মতটাই আমার কাছে সঠিক মনে হয় কারন তার গোত্র ই ছিল ইহুদী গোত্র। সুতরাং, তিনি জন্ম সুত্রে ইহুদী হবেন এটাই স্বাভাবিক যাই হোক, তিনি সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে ইহুদী ধর্ম কে রাস্ট্র ধর্ম ঘোষণা করেন এবং রাজ্যের সবাইকে তাঁদের পুরানো একমাত্র ধর্মে ফিরে আসতে আহবান জানান। তার উদ্দেশ্য ছিল মুলত দুইটা। প্রথমতঃ তাঁদের প্রাচীন ধর্ম কে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে পুরানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা , দ্বিতীয়ত তার সম্রাজ্যে খ্রিষ্টানদের দমন করা। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় তার এই সিদ্ধান্তের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। পার্সিয়ান এবং রোমানদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই তার এই উদ্দেশ্যের অন্যতম কারন। এইটা এই জন্য বলছি যে ইহুদীরা সবসময় পার্সিয়ানদের কে সমর্থন করত, তাদের প্রতি ইহুদীদের ঐ সময় একটা কৃতজ্ঞতা বোধ ছিল ( খৃস্টপুর্ব ৫৮৬ ব্যাবিলন এক্সাইল দ্রষ্টব্য), অন্যদিকে খৃস্টানরা রোমানদের সমর্থন করত, এইটা খুব সহজ এবং স্বাভাবিক বিষয়।



কথিত আছে যুউ নাওয়াজ তার এই উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য নিপীড়ন মূলক ব্যাবস্থা বেছে নিয়েছিলেন। যারা ইহুদী ধর্মে কনভার্ট হতে অস্বীকার করেছিলেন তাদের অনেক কেই তিনি হত্যা করেছেন, পুড়িয়ে মেরেছেন।

ঐ সময়ে ইয়েমেনে “নাজরান” শহরে প্রচুর খৃস্টান বাস করত। তারা সেখানে বিশাল প্রসাদ এবং চার্চ নির্মাণ করেছিল। তিনি নাজরান আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। এই কারনে ষষ্ট শতাব্দীর প্রথম দিকে সানা –যা যুউ নয়াজের রাজধানী ছিল তার সাথে খৃষ্টান অধ্যুষিত নাজরান শহরের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন দেখা দেয় যা পরবর্তীতে যুদ্ধের রুপ নেয়। কথিত আছে, তখকার সময়ে কবি আল আ’শা- এই পরিকল্পনার কথা তৎকালীন নাজরান (বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থিত) শহরে গিয়ে তাঁদের গ্রান্ড কার্ডিনাল কে এই ব্যাপারে অবিহিত করেন, যথাযথ প্রতিরক্ষার ব্যাবস্থা নিতে পরামর্শ দেন।

নাজরান আক্রমণঃ
এই হিমায়েরিটিরা পরবর্তী কালে নাজরান আক্রমণ করেন। তারা যে নিষ্ঠুরতা সেখানে চালিয়েছিল তা আজও অচিন্তনীয়। হিটলারের হত্যাকান্ড মনে হয়না আর হিমায়েরিটির হত্যাকাণ্ডের চেয়ে বেশী নির্মম ছিল। ইহুদীদের এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে যুউ নাওয়াজ নাজরানবাসীদের দুইটা অপশন দেনঃ হয় ইহুদী ধর্ম গ্রহণ কর, অথবা মৃত্যু। তারা খৃস্টানদের সমস্ত চার্চ পুরিয়ে দিয়েছিল, চার্চের ভিতরে বিশপদের পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন বইয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা পাওয়া যায়। বলা হয়ে থাকে, হিমায়েরিটি ইহুদিরা যেটা করেছিল তারা একটা পরিখা বা ট্রেঞ্চ তৈরী করেছিল। তারপর এতে ফুয়েল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এই আগুনের মধ্যে এরা কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ হাজার খৃস্টানকে পুড়িয়ে মেরেছিল। এই ইতিহাস ইথিওপিয়া, এবং রোমান চার্চে এবং ইয়মেনের ইতিহাসে লেখা আছে। মজার বিষয় হচ্ছে ধারনা করা হয়, কোরানেও এই ঘটনার কথা উল্লেখ আছে। কোরআনের ৮৫:৪-৭ আয়াতে বলা হয়েছেঃ


( নাজারান ট্রেঞ্চ- বর্তমান সৌদি আরব)

"শপথ গ্রহ-নক্ষত্র শোভিত আকাশের, এবং প্রতিশ্রুত দিবসের, এবং সেই দিবসের, যে উপস্থিত হয় ও যাতে উপস্থিত হয় অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ, অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা; যখন তারা তার কিনারায় বসেছিল। এবং তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল। তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল (৮৫ঃ১-৮)"

(By the sky containing great stars. And [by] the promised Day. And [by] the witness and what is witnessed, Cursed were the companions of the trench. [Containing] the fire full of fuel, when they were sitting near it. And they, to what they were doing against the believers, were witnesses. And they resented them not except because they believed in Allah , the Exalted in Might, the Praiseworthy, To whom belongs the dominion of the heavens and the earth. And Allah , over all things, is Witness. (৮৫ঃ ১-৯))

যদিও কোরআন থেকে আমরা ১০০% শিউর না যে কোরআনে বর্ণিত এই ঘটনা আসলেও হিমারিয়েটিদের সে নৃশংস হত্যাকাণ্ড কি না, অর্থাৎ দুইটা একই ঘটনা কিনা, কিন্তু এই ক্ষেত্রে ক্লাসিক্যাল ইসলামিক স্কলাররা একমত যে কোরআনের ৮৫ঃ১-৯ এ যে ঘটনার কথা বর্ণনা করা হয়েছে তা সত্যিকআর অর্থেই হিমারিয়েটিদের সে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

প্রতিশোধঃ
কথিত আছে, হিয়াম্যেরিটিরা নাজরান শহরে খৃস্টানদের নির্মম ভাবে হত্যা যজ্ঞ চালানোর সময় কিছু সংখ্যক খৃস্টান (একজনের নাম পাওয়া যায়) পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়, এবং তারা এই বিষয়টি রোমানদের নজরে আনেন। রোম সম্রাট জাস্টিন ১ এই ব্যাপারে ইথিওপিয়ার খৃস্টান সম্রাট নাজাসী কে চিঠি লিখে ইয়েমেন আক্রমন করতে অনুরুধ করেন। এর ফলশ্রুতিতে, নাজাসী ইয়েমেনে সৈন্য প্রেরন করেন। ইথিওপিয়ান বাহিনী লোহিত সাগর পার হয়ে ইয়েমেন আক্রমন করে। মুসলিম এনসাইক্লোপিডিয়া অনুযায়ী নাজাসীর সেনাবাহিনীর দুইটি দল ইয়েমেন আক্রমণ করেন। এর একটি দলের কমান্ডার ছিলেন আরায়াত এবং অপরটির কমান্ডার ছিলেন আব্রাহা। ইমাম তাবারীর মতে, প্রথম সেনাদলের কমান্ডার ছিলেন আরায়াত এবং তিনি পরাজিত হন। দ্বিতীয় সেনাদলের কমান্ডার আব্রাহার হিমায়েরিটিদের পরাজিত করেন। কিন্তু মুসলিম এনসাইক্লোপিডিয়া অনুযায়ী দুইটি সেনাদল একসাথেই ইয়েমেনে পাঠানো হয়। যুউ নাওয়াজ যুদ্ধে পরাজিত হন, তার সম্পদ, তার রানী খৃস্টানদের দখলে আসে। কথিত আছে, যুউ নাওয়াজ- শেষ ইহুদী রাজা খৃস্টান শত্রুপক্ষের কাছে আত্ন সমর্পণ না করে ঘোড়ায় চড়ে লোহিত সাগরে গিয়ে ঘোড়া সহ সরাসরি লোহিত সাগরে ডুবে স্বেচ্ছায় প্রান বিসর্জন দেন। এই যুদ্ধের সময়কাল ৫২০-৫২৫ সাল।ঐ সময়ের আরবের লিজেন্ডারি কবি উমরুল কায়েসের কবিতায়

"Art thou not saddened how fate has become an ugly beast, / the betrayer of its generation, he that swalloweth up people? It has removed Dhū Nuwās from the fortresses / who once ruled in the strongholds and over men / [An armored knight, who hurriedly broke the ends of the earth / and led his hordes of horse unto her uttermost parts And has shut up a dam in the place of the sunrise / for Gog and Magog that are (as tall as) mountains!

যদিও গল্প এখানেই শেষ না। পরবর্তীতে এই ঘটনার কারনেই এবং ইহুদীদের প্ররোচনায় পার্সিয়ানরা ইয়েমেন আক্রমণ করে এবং দক্ষিণ আরব তথা ইয়েমেন দখল করে।

আব্রাহাঃ
মুসলিম এনসাইক্লোপিডিয়া অনুযায়ী ইথিওপিয়ান দুই কমান্ডার আরায়াত এবং আব্রাহা ইয়েমেনই বসবাস করেন। পরে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠে এবং এই দুইজন দ্বন্দ্ব যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং আব্রাহা জয়ী হন। এর ফলে আব্রাহা ইয়মেনের শাসনকর্তা হিসাবে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হন। (ইথিওপিয়া প্রথমে আব্রাহাকে ইয়েমেনর শাসনকর্তা হিসাবে মেনে নিতে না চাইলেও, পরে মেনে নেন)

আব্রাহা ইনস্ক্রিপশনঃ
আব্রাহার শাসক কাল সম্পর্কে ধারনা পয়ায়া যায় মুলত লিজেন্ডারি মা’রিব বাধ (Ma'arib Dam) এর ইনস্ক্রিপশন এবং সেবাইন ইনস্ক্রিপশনের মাধ্যমে। (এই মা’রিব বাধের কথাও কোরআনে উল্লেখ আছে (কোরআন ৩৪:১৫-১৬)) আব্রাহা এই বাধ রিপেয়ার করেছিলেন এবং তখনকার ঘটনা ঐখানে ইন্সক্রাইবড করা হয়েছিল।



মা’রিব ইনস্ক্রিপশনে টোটাল ১৩৬ টা লাইন আছে এবং তা মুলত ইয়েমেনের কিছু এলাকায় যুদ্ধ, বিদ্রোহ দমন, বাধ রিপেয়ার এবং উৎসবের কথা লেখা আছে। এটা মুলত ৫৪৭ থেকে ৫৪৮ (প্রায় দুই বছরের) ঘটনা। এই ১৩৬ লাইন এইখানে কপি পেস্ট করে দেওয়া সম্ভব না বলে আমি লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি, যদি কারো আগ্রহ থাকে, লিঙ্ক থেকে পড়ে নিতে পারবেন।

http://dasi.humnet.unipi.it/index.php?id=79&prjId=1&corId=7&colId=0&recId=2382

এই সাইটে গিয়ে, TRANSLATIONS হেডিং এর নিচে CSAI বাটনে ক্লিক করলে ইংলিশ ট্রান্সলেশন দেখাবে।

৫৪৮ সালের পর থেকে ৫৫৩ সাল পর্যন্ত আব্রাহার কার্যপ্রণালীর বর্ণনা পাওয়া যায় "the inscription of Abraha” (inscription at Murayghän) তে। এইটাতে ১০টা লাইন আছে।



Line 1:
With the power (help) of god, and the Jesus (=Christian) King Abraha Zeebman (King's title), the King of Saba'a, Zuridan and Hadrmaut.

Line 2:
and Yemen and the tribes (on) the mountains and the coast wrote these lines on his battle

Line 3:
against the tribe of Ma'ad ( in ) the battle of al-Rabiya in the month of "Dhu al Thabithan" (April) and fight (against) all the (tribes) of Bani A'amir.

Line 4:
and appointed the King (the leader) "Abi Jabar" with (tribe) Kinda and (Qahtani tribe) Al (and the leader) "Bishar bin Hasan" with

Line 5:
(Tribe) Sa'ad ( and the tribe) Murad and ( the tribe) Hadarmaut (stand) in front of the army against Bani Amir of Kinda. and (the tribe) Al in wadi "zu markh" and Murad and Sa'ad in wadi

Line 6:
Manha on the way to Turban and killed and captured and took the booty in large quantities and the
King and fought at Halban and reached

Line 7:
Ma'ad and took booty and prisoners, and after that, conquered
(from the tribe of Ma'ad) Omro bin al-Munzir …

Line 8:
(and according to the agreement between Abrha and the tribe of Ma'ad)
(Abrhas) appointed the son (of Omro) as the ruler and returned (Abraha) from Hal.

Line 9:
Ban (halban) with the power of the god in the month of Zu A'allan in the year sixty-two

Line 10:
and six hundred

এইখানে আবরাহার প্রত্যাবর্তনের কথা বলা হয়েছে ৬৬২ সাল। এটা সেবাইন ক্যলেন্ডার অনুযায়ী। যেহেতু হিমায়রেটি সম্রাজ্য শুরু হয়েছে খৃস্টপুর্ব ১১০ থেকে, সেহেতু ৬৬২ সেবাইন বছর ৫৫২ খৃস্টাব্দের সমান (৬৬২-১১০=৫৫২) কোন ওয়েব সাইটে সেবাইন ক্যলেন্ডার থেকে গ্রেগ্রিয়ান ক্যালান্ডারের রূপান্তরের কোন রকম সুত্র পাইনি। সবখানে আব্রাহার জীবনকাল দেওয়া আছে কমপক্ষে ৫৫৩ খৃস্টাব্দ। পরে বুঝতে পারলাম, এইভাবেই তারা এই সময়কাল বের করেছে।

সুতরাং ৫৫২/৫৫৩ খৃস্টাব্দের পর আব্রাহা তার প্রসাদে ফিরে যান। এর পর তার যুদ্ধ সংক্রান্ত আর কোন তথ্য পাওয়া যায় না।

এতক্ষন যারা কষ্ট করে পড়েছেন, তারা বলতে পারেন এই ঘটনার সাথে আমাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সম্পর্ক কি?

মুসলিম ট্র্যাডিশন অনুযায়ী,কথিত আছে এই আব্রাহা নাজরানে একটি কাবাঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু মক্কায় অবস্থিত কাবার জন্য তার নির্মিত কাবা তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। সেই জন্য আব্রাহা তার হস্থি বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করতে যান। আল্লাহ্‌ কাবা কে রক্ষা করতে আকাশ থেকে আবাবিল নামক পাখি পাঠান যা ঠোটের মধ্য করে পাথর নিয়ে এসে ঐ হস্তী বাহিনীর উপর নিক্ষেপ করেন। এর ফলে আব্রাহার হস্তী বাহিনী পরাজিত হয় এবং আব্রাহা নিহত হন।

এই গল্প আমরা যুগ যুগ ধরে শুনে আসছি। আমাদের ইসলামিক স্কলাররাও তদের ইতিহাসের বইয়ে, কোরআনের তফসীরে (সূরা ফিল, সুরান নং ১০৫) এ এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন। যদিও সূরা ফিলের কোথাও আব্রাহা নাম উল্লেখ করা নাই, ঘটনা বিশ্লেষণে আমাদের স্কলাররা সূরা ফিল কে এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত করেছেন।

কিন্তু যে প্রশ্নটা গুলি আসছে, সেটা হচ্ছেঃ

১। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আব্রাহার মক্কা আক্রমন সংক্রান্ত কিছু পাওয়া যায় না।

২। আব্রাহা ইনস্ক্রিপশনে “মক্কা” নামক কোন শহরের কথা নেই।

৩। মুসলিম ট্র্যাডিশন অনুযায়ী আব্রাহা মক্কা আক্রমণের সময় মৃত্যু বরন করেন। কিন্তু যদিও ইনস্ক্রিপশনে তার মৃত্যুর কথা লেখা নেই, তথাপি তিনি মক্কায় গিয়ে নিহত হয়েছেন এই রকম কোন প্রমান নেই।

৪। সানা থেকে মক্কা প্রায় ১০০০ কিমি। আব্রহা কিভাবে হাতিবাহিনী নিয়ে মরুভূমি্র এতটা পথ পাড়ি দিয়েছিলেন সেটা বোধগম্য নয়। এই ক্ষেত্রে হাতির খাবার এবং বেচে থাকার পরিবেশ লক্ষ্যনীয়। একটা দুইটা হাতি হলে সম্ভব হতে পারে, কিন্তু ১৫/২০ অথবা ১০০ হাতি নিয়ে সম্ভব না।

৫। ৫৭০ সাল পর্যন্ত আব্রাহা বেচে ছিল কিনা সেটা একটা বড় প্রশ্ন। মুল কথা হচ্ছে তিনি কখনো মক্কায় এসেছিলেন কি না এর কোন প্রমান কোথাও নেই।

৬। সূরা ফিলে যে বর্ণনা এসেছে আবাবিল পাখি দিয়ে পাথর নিক্ষেপের কথা, এইটার কোন ভিত্তি নেই।এইগুলি পার্সিয়ানদের বানানো ফ্যান্টাসি ছাড়া কিছু না। এইখানে সম্ভবত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কথা বলা হয়েছে।

সুতরাং নবী মুহাম্মদের জন্মের সময় এক্সাটলি ৫৭০ সালে, এইটা এই কাহিনী দ্বারা প্রমানিত না। উনার জন্ম ৫২৫-৫৭০ যে কোন সময়ে হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×