somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) -এর খোজে (প্রথম পর্ব)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পোস্টটা প্রচলিত অর্থে কোন ধর্মীয় পোস্ট না। এইটা একটা ছোট খাট গবেষণা মূলক পোস্ট। এই পোস্টে আমি কোন ধর্মীয় বিধান খুজছি না, বা কোন ধর্মের মহিমা প্রচার করা এই পোস্টের উদ্দেশ্য না। যারা ধর্মের ব্যাপারে প্রচলিত অর্থে গোঁড়া, কট্রর পন্থী তারা এই পোস্ট থেকে দূরে থাকবেন। সাধারন পাঠকদের বলছি, আপনার ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমার এই পোস্ট না। এই পোস্টের অনেক কিছু আপনার প্রচলিত ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

ইহুদী, খৃষ্টান এবং ইসলাম- এই তিনটি ধর্মের উৎপত্তি বিকাশ নিয়ে আমি প্রচুর পড়াশুনা (আমার লেভেল অনুযায়ী) করেছি। ইহুদী এবং খৃস্টান ধর্মের উৎপত্তি এবং বিকাশ সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান পেয়েছি, মুলত তাঁদের স্কলারদের লেখা বিভিন্ন বই থেকে। যেহেতু আমাদের দেশে সাধারণত কেউ ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্ট পড়েনা, সেইখেত্রে ঐ দুইটা ধর্মের ব্যাপারে আমি এখানে কোন কথা বলব না, শুধু এইটুকু দৃরতার সাথে বলতে চাই যে প্রচলিত ইসলাম ধর্মে এই ওল্ড টেস্টামেন্টের অচিন্তনীয় প্রভাব রয়েছে। আমাদের তথাকথিত অনেক স্কলাররা অনেক ক্ষেত্রেই কোরআনে কি বলেছে সেইটা বাদ দিয়ে ওল্ড টেস্টামেন্ট কে অন্ধের মত অনুসরণ করেছেন। যার ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে (যেমন মানব সৃষ্টি, মহাবিশ্ব সৃষ্টি, ধর্মীয় বিধান, নবীদের কার্যকলাপ ইত্যাদি) ইহুদীদের/ইস্রায়েলীদের ওল্ড টেস্টামেন্টের (ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং তওরাত এক জিনিষ না) সাথে আমাদের ট্র্যাডিশনে বর্ণিত ঘটনার প্রচুর মিল রয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে তা হুবুহ এক। এর ফলে আমাদের স্কলাররা কোরআন অনুবাদ করেছেন ঐ সব ঘটনা কে মাথায় রেখে, যার দরুন কোরআনের অনুবাদেও অনেক ভুল ভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়।

যাই হোক আমার লেখার উদ্দেশ্য আমাদের ট্র্যাডিশনের উৎস কোথায় তা বের করা নয় বরং আমাদের ধর্মের উৎপত্তি এবং এর বিকাশ কোথায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করা।

মুলত যেই জিনিষ গুলি নিয়ে আমি আলোচনা করতে চাচ্ছি তা হচ্ছেঃ

১। নবী মুহাম্মদের (সাঃ) জন্ম কত সালে?

২। নবী মুহাম্মদের জন্ম কোথায়, অথবা তিনি কোথায় বাস করতেন?

৩। কোরআন কোথায় এবং কখন অবতীর্ণ হয়েছে (১ এবং ২ নম্বর পয়েন্টের সাথে রিলেটেড)

আমার মনে হয় এমন কোন মুসলমান পাওয়া যাবে না যে এই প্রশ্ন গুলির উত্তর জানেনা।

আমাদের এই জানাটা কতটুকু কোরআন দ্বারা সমর্থিত সেটা বের করাই এই গবেষণার উদ্দেশ্য।

And do not pursue that of which you have no knowledge. Indeed, the hearing, the sight and the heart - about all those will be questioned. (১৭:৩৬)

একসময় ইতিহাস নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেছি, এবং তার পর বুঝতে পারলাম ইতিহাস হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে ইতিহাসবিদদের ব্যাক্তিগত সাব্জেক্টিভ মতামত। এর পর আমি আমার আগ্রহ আর্কিওলজিতে পরিবর্তন করেছি।

নবী মুহাম্মদের (সাঃ) জন্ম কত সালে?
প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে, ৫৭০ খৃস্টাব্দে ১২ ই রবিউল আউয়াল (সম্ভবতঃ ২০ ই এপ্রিল)। এই জন্মতারিখের ভিত্তি কি? ট্র্যাডিশন বলে, যে বছর আব্রাহা তার হাতি বাহিনী নিয়ে কাবা ধ্বংস করতে এসেছিল, এবং আল্লাহ্‌ আবাবিল পাখি দিয়ে আব্রাহার হাতি বাহিনী কে সম্পূর্ণ রুপে ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেই বছরটাকে “হস্তি বছর” বা “ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট” বলা হয়ে থাকে যা ৫৭০ সালে সঙ্ঘটিত হয়েছিল।
এই আব্রাহা নিয়ে যতটুকু পড়ালেখা করেছি, তার ভিত্তিতে এইটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি

১। আব্রাহা কোনদিন মক্কা আক্রমণ করতে যায় নি।

২। আব্রাহা ইনস্ক্রিপশন এবং মা’রিব ইনস্ক্রিপশনে কোথাও মক্কা বলে কোন শহরের নাম নেই।

৩। ৫৫২-৫৫৩ সালে আব্রাহা অবসর নেন, এবং খুব সম্ভবত ৫৭০ সালের আগেই মারা যান।

এই নিয়ে বিস্তারিত একটা ব্লগ লিখেছি। আরও জানতে চাইলে, দয়া করে পড়ে আসুন।
"ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট" এবং "আব্রাহা ইনস্ক্রিপশন"
যেহেতু আব্রাহার মক্কা আক্রমণ সংক্রান্ত কোন ঘটনা ঘটেনি, সেহেতু মক্কায় “ইয়ার অফ এলিফ্যান্ট” বলে কিছু নেই। এইটা সম্পূর্ণ বানানো ঘটনা। সেই ক্ষেত্রে নবীর জন্ম সাল ৫৭০ এইটা সত্য নয়। কেউ যদি বলেন যে আব্রাহা মক্কা আক্রমণ করুক বা নাই করুক, নবীর জন্ম ৫৭০ সালেই, সেইখেত্রে তাকে এর স্বপক্ষে প্রমান দেখাতে হবে। এবং স্বীকার করতে হবে যে নবীর জন্ম সাল সংক্রান্ত যা লেখা হয়েছে তা মিথ্যা। এখন, যদি নবীর জন্ম সাল ৫৭০ সালে না হয়, তবে এর অর্থ দাঁড়ায় নিম্ন রুপঃ

১। ইবনে ইসহাক/ ইবনে হিসাম রচিত “সিরাত” সম্পূর্ণ মিথ্যা। (এইটা আরও বিভিন্ন ভাবে প্রমান করা যায়)

২। হাদিস কালেকশন করা হয়েছে মুলত চেইন অফ নেরেশন কে প্রাধান্য দিয়ে। যদি আব্রাহার মক্কা আক্রমণ প্রমানিত না হয়, সেইখেত্রে নবীর জন্ম ৫৭০ এ এইটা ধোপে টিকে না, কারন এই ৫৭০ সাল নেওয়া হয়েছে আব্রহার মক্কা আক্রমণ কে কেন্দ্র করে। এর ফলে হয় তাঁদের কে এই চেইন অফ নেরেশন নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে, অথবা তাঁদের হাদিস কর্পাস বাদ দিতে হবে। যারা হাদিসের সনদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তারা ঠিকই বুঝবেন আমি ঠিক কি বলতে চেয়েছি। (দয়া করে আমাকে কেউ গালাগালি করবেন না)

আমার মনে হয় এইটুকু প্রমানই যথেষ্ট। হিজরী সাল নিয়ে কোন কথা বললাম না। বলার কোন দরকারও নেই। আমার দরকার কনক্রিট প্রুফ। আমি এইটা নিয়েই থাকব।

সুতরাং যেহেতু আব্রাহা হাতি নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেননি, সেহুতু নবীর জন্ম ৫৭০ সালে সেটা আমরা বলতে পারছি না। কেউ যদি নবীর জন্ম ৫৭০ সাল এইটা বলতে চান তবে তাকে এর স্বপক্ষে প্রমান নিয়ে আসতে হবে।

নবী মুহাম্মদের জন্ম কোথায়, অথবা তিনি কোথায় বাস করতেন?
ট্র্যাডিশনের বর্ণনা অনুযায়ী নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নামক শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ৪০ বছর পরে নবুয়াত লাভ করেন। এর পর ক্রমাগত ১৩ বছর তিনি মক্কায় ধর্ম প্রচার করেন। কিন্ত মক্কায় তিনি সফল হতে পারেন নি এবং বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতার মুখে অবশেষে মদীনায় গমন (হিজরত) করেন। মদীনায় তিনি একটি ইসলামিক স্টেট গড়ে তুলতে সমর্থ হন। উনার জীবনের শেষের দিকে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন, এবং অতঃপর মদীনাতে ফিরে যান। সেখানেই ৬৩২ খৃস্টাব্দে তিনি ইন্তিকাল করেন।

সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি, ট্র্যাডিশন অনুযায়ী, উনার জীবনকালের ১০ বছর বাদ দিলে উনি মক্কাতেই বসবাস করতেন এবং উনি মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।

এইখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ
১। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কি মক্কায় বসবাস করতেন?

২। যদি মক্কায় বসবাস না করতেন, তবে উনার প্রকৃত জন্মস্থান এবং আবাসস্থল কোথায় ছিল?

এই লেখায়, আমি শুধুমাত্র প্রথম প্রশ্নটার সমাধান করার চেষ্টা করব এবং এই ক্ষেত্রে কোরআন কে ক্রাইটেরিয়া ধরে সামনে এগোব। যেহেতু আমি বিশ্বাস করি কোরআন আল্লাহর বানী, কোরআনের বর্ণনা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই এবং আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্য কেউ বলতে পারে না, সেইখেত্রে আশা করি কোরআনের রেফারেন্সে কারোও কোন আপত্তি থাকার কথা না।

মক্কা বনাম বক্কাঃ
إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ
The first House appointed for men was that at Bakka: Full of blessing and of guidance for all kinds of beings: (৩ঃ৯৬)

এই খানে খুবই ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় আছে। অনেক অনুবাদক এই আয়াতের অনুবাদ করতে গিয়ে “বক্কা” শব্দের অনুবাদ করেছেন “মক্কা”। এইটা নিঃসন্দেহে পিউর ম্যানিপুলেশন। ট্র্যাডিশন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই অনুবাদ করার ফলে অনুবাদকগন এই ইচ্ছকৃত ভুল অনুবাদ করেছেন। যারা কোরআন সম্পর্কে কিছু জ্ঞান রাখেন তারা জেনে থাকবেন কোরআন শব্দ চয়নের ব্যাপারে খুবই সিলেক্টিভ। কোরআনে কোন বানান ভুল নেই, বা গ্রামারেও ভুল নেই। কোরআনে ৪৮:২৪ আয়াতে মক্কা শব্দটা এসেছে। সুতরাং আল্লাহ্‌ কেন একই স্থানের জন্য পৃথক দুইটি নাম ব্যাবহার করবেন? কোরআনে এই রকম কোন উদাহরণ নেই। আল্লাহ্‌ মক্কা শব্দ দিয়ে মক্কাই বুঝিয়েছেন এবং বক্কা শব্দ দিয়ে বক্কাকেই বুঝিয়েছেন।

এই জিনিষ কে গোঁজামিল দিতে যেটা সাধারণত বলা হয় (আমি তিনটা থিওরি পেয়েছি)

ক। মক্কার পূর্ব নাম বক্কা, অথবা

খ। বক্কা হচ্ছে মক্কার বিশেষ জনাকীর্ণ একটা জায়গা।

গ। আরবীতে “ম” এবং “ব” পরস্পর পরিবর্তনশীল

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই ধরণের কথার স্বপক্ষে এই পর্যন্ত কেউ কোন প্রমান দিতে পারেনি। কোন প্রাক-ইসলামিক কবিতা, আর্কিওলজিকাল রেকর্ড, ডকুমেন্ট- যে কোন কিছু। কোন প্রমান নেই, শুধু মুখের কথা ছাড়া। কেউ কেউ আবার বলেন আরবীতে “ম” এবং “ব” পরস্পর পরিবর্তনশীল। মনে রাখতে হবে আমরা আল্লাহর কোরআন নিয়ে কথা বলছি। কোরআনের ভাষা ট্র্যাডিশনাল ক্লাসিক্যাল আরবী ভাষা থেকেও উন্নত। (কোরআন এবং ট্র্যাডিশনের মধ্যে বিভিন্ন শব্দের প্রয়োগ দেখলেই বুঝতে পারবেন)।

মোট কথা হচ্ছে, প্রথম ঘর নিয়োগ করা হয়েছিল বক্কা তে, মক্কা তে নয়। যদিও আমার লেখার মুল উদ্দেশ্যের সাথে এটা সম্পূর্ণ ভাবে প্রাসঙ্গিক নয়, তারপরেও কোরআনের আয়াত কিভাবে ম্যানিপুলেশন করা হয় তা দেখানোর জন্য এই রকম একটা উদাহরণ টেনেছি। পাঠক চাইলে “সহিহ ইন্টারন্যশনাল” এবং বাংলা অনুবাদ দেখতে পারেন নিচের লিঙ্ক থেকেঃ
মক্কা/বক্কা

যেহেতু আমি বিশ্বাস করি কোরআন আল্লাহর বানী, এবং আল্লাহ্‌র চেয়ে আধিক সত্য কেউ বলতে পারেনা, সেহেতু আমরা দেখার চেষ্টা করব নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কায় বাস করত এই কথাটা কোরআন দ্বারা সমর্থিত কি না?

বিভিন্ন ফলঃ
কোরআনে যে ফল গুলির কথা এসেছে তা হচ্ছেঃ
১। খেজুর (Dates)

২। জলপাই (Olive)

৩। ডুমুর (Fig)

৪। ডালিম (Pomegranate)

৫। আঙুর (Grapes)

প্রথমটি অর্থাৎ, খেজুর ছাড়া বাকী চারটি ফল মক্কাতে জন্মায় না। এইটা খুবই ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার।

And We brought forth for you thereby gardens of palm trees and grapevines in which for you are abundant fruits and from which you eat. (২৩:১৯)

He causes to grow for you thereby the crops, olives, palm trees, grapevines, and from all the fruits. Indeed in that is a sign for a people who give thought. (১৬:১১)

কোথায় পাম গাছের বাগান? কোথায় আঙুর? কোথায় প্রচুর ফল ফলাদি? মক্কায় এই গুলি কখনোই জন্মায়নি। কোথায় শস্য? মক্কায় কি চাষবাস হয়?

And it is He who sends down rain from the sky, and We produce thereby the growth of all things. We produce from it greenery from which We produce grains arranged in layers. And from the palm trees - of its emerging fruit are clusters hanging low. And [We produce] gardens of grapevines and olives and pomegranates, similar yet varied. Look at (UNZURO) its fruit when it yields and its ripening. Indeed in that are signs for a people who believe (৬:৯৯)

অর্থাৎ, নবী যেখানে বাস করতেন সেইখানে এইসব ফল প্রাকৃতিক ভাবেই জন্মায়, সেইখানেই পরিপক্ক হয়। আল্লাহ্‌ নবীকে এইখানে বলেছেন “উনযুর” অর্থাৎ লক্ষ্য কর ফল ধরা থেকে পাকা পর্যন্ত। মক্কায় এইটা কোনভাবেই সম্ভব না।

সুতরাং আল্লাহ্‌ নবীর বাসস্থানের যে বর্ণনা দিয়েছেন যেখানে বিভিন্ন ফল ফলাদির জন্ম, যা নবী আহার করতেন এবং যার মধ্যে নিদর্শন আছে, সেটা মক্কার সাথে কোনভাবেই মিলে না। সুতরাং নবীর আবাসস্থল কখনোই মক্কায় ছিল না।

কোরআনে এই রকম প্রচুর আয়াত আছে। এইসব আয়াত দ্বারা আল্লাহ্‌ বুঝিয়েছেন, এই সব ফল ফলাদি, শস্য নবী যে এলাকায় থাকতেন সেখানে জন্মায়, নবী সেগুলি আহার করতেন এবং এর মধ্যে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন আছে। আপনি যতই গোড়া হন না কেন আপনি কখনোই এই বর্ণনা মক্কার সাথে মিলাতে পারবেন না। এই রকম আরও আয়াতদেখার জন্য দেখুনঃ ১৭:৯০-৯১, ৩৬:৩৩-৩৪, ৬:৯৯, ৩৯:২১,

শস্য এবং কৃষিঃ

এইটাও একই রকম ইন্টারেস্টিং। মুলত আল্লাহ্‌ নবীর আবাস স্থলের কৃষির বর্ণনা দিয়েছেন এবং ফসল সংগ্রহের সাথে সাথেই এর পাওনা পরিশোধ করে দিতে বলেছেন।

Do you not see that Allah sends down rain from the sky and makes it flow as springs [and rivers] in the earth; then He produces thereby crops of varying colors; then they dry and you see them turned yellow; then He makes them [scattered] debris. Indeed in that is a reminder for those of understanding. (৩৯:২১)
এখানে আল্লাহ্‌ নবীকে শস্য আবর্তনের কথা বলেছেন এবং বার বার বলছেন শস্যের বেড়ে উঠা থেকে পরিবর্তিত হয়ে হলুদ রং হওয়া পরিবর্তন লক্ষ্য করতে। প্রশ্ন হচ্ছে মক্কায় কি কোন শস্য জন্মে? যদি না জন্মে তবে কিভাবে নবী লক্ষ্য করবে শস্যের রং কিভাবে পরিবর্তন হয়।

And He it is who causes gardens to grow, [both] trellised and untrellised, and palm trees and crops of different [kinds of] food and olives and pomegranates, similar and dissimilar. Eat of its fruit when it yields and give its due on the day of its harvest. And be not excessive. Indeed, He does not like those who commit excess. (৬:১৪১)

এই আয়াতে বর্ণিত কোন ফল বা শস্যই মক্কায় জন্মে না। থালে শস্য পাকার পর কিভাবে খাওয়ার প্রশ্ন আসে আর যেহেতু ফসলই জন্মে না সেহেতু তা সংগ্রহের কোন প্রশ্ন আসে না এবং এর ফলে ফসল সংগ্রহের সময় এর পাওনা পরিশোধ করার কথা এইখানে মক্কার সাথে সমঞ্জস্য পূর্ণ নয়। ব্যাপারটা এরকম দাড়ায় যে, কাবুলে শস্য জন্মালে তার পাওনা আল্লাহ্‌ ঢাকার মানুষকে পরিশোধ করতে বলেছেন। ব্যাপারটা খুবই অযৌক্তিক।

সুতরাং, কোরআনে যে বিভিন্ন ফলের বা শস্যের কথা বলা হয়েছে, যা নবী যেখানে বাস করতেন সেখানে জন্মে, যা সম্পর্কে নবী অবগত ছিলেন, এবং আল্লাহ্‌ ঐসব ফলের উদাহরণ দিয়ে নবীকে চিন্তা করতে বলেছেন, সেইসব ফল বা শস্য মক্কায় জন্মে না। এর ফলে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কায় বাস করতেন এর কোন প্রমান কোরআন থেকে পাওয়া যায় না, বরং এর বিপরীত কথায় আমরা কোরআনে দেখি।

(To be continued…..)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৬
২৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×