somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্ক্রিপচার রিভিউ- হিব্রু বাইবেল

২৪ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হিব্রু বাইবেল বা ওল্ড টেস্টামেন্ট ইহুদী খৃস্টান উভয় ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ। এই বাইবেলে ইহুদী এবং ইস্রায়েলী দের উৎপত্তি, বিকাশ, তাদের সংগ্রাম, নির্যাতন, জাতি হিসাবে আত্নপ্রকাশ, উত্থান পতন এই সব লিপিবদ্ধ আছে। বিভিন্ন সময়ে এই বাইবেল লেখা, পুনঃ লেখা হয়েছে। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে আজ পর্যন্ত যত গ্রন্থ লেখা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী পুস্তক এতে কোন সন্দেহ নাই। ইহুদী, খৃস্টান ধর্মাবলম্বী ছাড়াও, মুসলমানদের মধ্যেও এই বইয়ের প্রভাব ব্যাপকভাবে লক্ষ্যণীয়। এই হিব্রু বাইবেল মুলত ৩৯ টি পৃথক পুস্তকের সমাহার যা কোন এক সময়ে ২৪ টি স্ক্রলে লিপিবদ্ধ ছিল। এর প্রথম পাচটি পুস্তককে (পেন্টাটেক) জেনেসিস, এক্সডাস, লেভিটিকাস, নাম্বার, এবং ডিউট্রনমি- একত্রে তওরাত (হিব্রু অর্থ আইন বা নির্দেশ) বলা হয়, যা প্রথমে বিশ্বাস করা হত মুজেস (ইসলাম ধর্মে নবী মুসা) এর লেখক, যদিও এই ধারনার আমুল পরিবর্তন হয়েছে। ইহুদী এবং খৃস্টান ধর্মাবলম্বী বিশ্বাস করে এই এই তওরাত ঈশ্বর কর্তৃক মুজেস কে দেওয়া গ্রন্থ। মুসলমানরা বিশ্বাস করে তওরাত হচ্ছে আল্লাহ কর্তৃক নবী মুসাকে দেওয়া গ্রন্থ, যদিও মুসলমানদের এই ধরনের বিশ্বাসের পিছনে তাদের মুল গ্রন্থ কোরআনে কিছু বলা হয়নি। ( এই ব্যাপারে আমি কনফিউসড, আমি এই রকম কোন আয়াত খুজে পাইনি যেখানে নবী মুসাকে তওরাত দেওয়া হয়েছে বা নবী মুসার সাথে তওরাতের কোন লিঙ্ক আছে। আমার ভুল হতে পারে, তবে যদি কেউ এই ধরনের কোন আয়াত খুজে পান জানালে খুশি হব)

এই হিব্রু বাইবেল মুলত তিনভাগে বিভক্ত। হিব্রু বাইবেলের প্রথম পাঁচটি পুস্তক- দ্য পেন্টাটেক বা তওরাতের পরে ২১ টি নবীদের (প্রফেট) পুস্তক এর মধ্যে জশুয়া, জাজ, স্যামুয়েল (২ টা পুস্তক), এবং কিংস (২ টা পুস্তক) – এই চারটা ঐতিহাসিক কাজ, এর পর তিনটা মেজর প্রফেট -আইজায়া, জেরেমিয়াহ, এবং এজিকিল এবং ১২ জন মাইনর প্রফেট হুশেয়া, জূয়েল, আমূস, ওবাডীয়াহ, জোণাহ, মীকাহ, ণাহূম, হাবাক্কূক, জেফাণীয়াহ, হাগাঈ, ঝাকারিয়াহ এবং মালাচি। সর্বশেষে ১৩ টা পুস্তক যা ধর্মীয় কাব্য, বিজ্ঞতা- যাকে বলা হয় রাইটিংস (লেখনী)। এই রাইটিংসের মধ্যে আছে শামস, প্রভার্ব, জব, সং অফ সংস, রুথ, লেমেন্টেস্নস, একলিসিয়েস্টস, ইসথার, ড্যানিয়েল, এজরা, নেহিমিয়াহ, এবং ক্রনিক্যালেস (২ টা পুস্তক)

হিব্রু বাইবেলের লিখিত সময়কাল নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। এই হিব্রু বাইবেলের সাথে হিব্রু ভাষা এবং তৎকালীন ইস্রায়েলীদের বিভিন্ন ঘঠনা উতপ্রোত ভাবে জড়িত। প্রথম পাচটি পুস্তক খৃস্টপূর্ব ৭০০ সাল থেকে ৫০০ সালের মধ্যে লিখিত হয়েছে বলে ধারনা করা হয়, আরও সঠিক ভাবে বলতে গেলে এই হিব্রু বাইবেল পুনঃ লিখিত হয়েছে এবং এই পুনঃ লেখার উৎস হচ্ছে বিভিন্ন মৌখিক ট্র্যাডিশন এবং তার আগের কিছু পুস্তক থেকে। কিছু পুস্তকের পুনঃ লেখনীর সময়কাল খৃস্টপূর্ব ৪০০ সাল বলেও ধারনা করা হয়। শুধুমাত্র আরামিক ভাষায় লিখিত অল্প কিছু অংশ (ড্যানিয়েল ২ঃ৪বি-৭ঃ ২৮ এবং এজরা ৪:৮ -৬:১৮) বাদ দিলে বাইবেলের অরিজিনাল টেক্সট আমাদের কাছে হিব্রু ভাষায় এসেছে। এই জন্য, এটা নিঃস্নদেহে বলা যায় আজকে যে হিব্রু ভাষার বাইবেল দেখা যায়, তার অস্তিত্ব কমপক্ষে খৃস্টপূর্ব ৫০০ সালেও ছিল।

হিব্রু বাইবেলে বিভিন্ন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় ঐ ঘটনা গুলি আসলে ভিন্ন ভিন্ন ট্র্যাডিশনের সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ হিব্রু বাইবেলেরে লেখকরা আগের বিভিন্ন পুস্তক এবং প্রচলিত বিভিন্ন ট্র্যাডিশন/ লিজেন্ড থেকে নেওয়া বিভিন্ন কাহিনী এক সাথে করে একটা একক কাহিনী লেখার চেষ্টা করেছেন (খুব সম্ভবত তাদের মধ্যে বিভিন্ন গোত্রের লোকদের একটা কমন প্লাটফর্মে আনার জন্য) । সাধারণ পাঠকদের জন্য এই একক কাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন ট্র্যাডিশন/ লিজেন্ড খুজে পাওয়া যদিও কষ্ট সাধ্য, একটা ভাল ভাবে পর্যালোচনা করলেই এর সত্যতা দেখা যায়। এই রকম উদাহরণ প্রচুর। এই ট্র্যাডিশনের মধ্যে আছে বিভিন্ন গোত্রীয় কাহিনী, বিভিন্ন দেব দেবীর কাহিনী, ঈশ্বরের চতুরতার কাহিনী। উদাহরণ স্বরূপ বাইবেলের প্রথম পুস্তক জেনেসিস এ বর্ণিত “আদম এবং ইভ” এর কাহিনীতে আমরা কমপক্ষে ভিন্ন ভিন্ন তিনটা কাহিনীর সমন্বয় দেখতে পাই। এই কথা নোয়াহ, আব্রাহাম এর কাহিনীর ক্ষেত্রেও সত্য। হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত আব্রাহামের কাহিনী কমপক্ষে পাচটি পৃথক কাহিনীর সমন্বয়ে একটি একক কাহিনী গঠন করা হয়েছে, অর্থাৎ পাচ জন ভিন্ন ভিন্ন আব্রাহাম (মানুষ এবং দেবতা উভয় রুপেই) এর কাহিনী একসাথে করে একটি একক আব্রাহামের কাহিনী লেখা হয়েছে।
বিভিন্ন কাহিনীর সমন্বয় করতে গিয়ে তৎকালীন বিভিন্ন গোত্রীয় দেব দেবীকে (জিহোভা, এল সালুম, এল সাদ্দাই, এল সাবুত, এল এলিয়ন, এলহিম) একসাথে ধীরে ধীরে মার্জ করা হয়েছে অথবা বলা যায় কিভাবে একজন দেবতা অন্য দেবতাদের কে বিভিন্ন কৌশলে পরাজিত করে ধীরে ধীরে আরও ক্ষমতাবান হয়েছে এবং শেষে একক দেবতা (জিহোভা) হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সুতরাং সুক্ষ ভাবে হিব্রু বাইবেলের টেক্সট পর্যালোচনা করলে বিভিন্ন দেবতাদের মজার কাহিনীও পাওয়া যায়, যা ঐ সময়ে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে প্রচলিত ছিল।

যেহেতু হিব্রু বাইবেল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখকদের মাধ্যমে লেখা হয়েছে, তাই হিব্রু বাইবেলে বিভিন্ন সময়ের লেখকদের লেখনীর পার্থক্য স্পষ্ট। স্কলাররা বিভিন্ন সময়ে লিখিত বিভিন্ন লেখকদের লেখনীকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন যেমনঃ

J /“জে” ট্র্যাডিশনঃ
এই ট্র্যাডিশন খুব সহজেই তওরাতে আলাদা ভাবে বুঝা যায়। এই ট্র্যাডিশন বুঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে যেখানে “গড” কে জিহোভা /Yahweh (Hebrew yhwh) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই “জে” ট্র্যাডিশন হচ্ছে খুবই দক্ষ গল্পকার।

E/ “ই” ট্র্যাডিশনঃ
ইলোহিস্ট বা “ই” ট্র্যাডিশনে গড কে “ইলোহিম” বলা হয়েছে। এই ইলোহিস্ট ট্র্যাডিশন বর্ণনা মূলক। যেখানে “জে” ট্র্যাডিশনের গড জিহোভার ব্যাবহার মানুষের মত, “ই” ট্র্যাডিশনের গড ইলোহিম অনেকটাই অতীন্দ্রিয়। এই “জে” এবং “ই” ট্র্যাডিশন জেনেসিস, এক্সডাস, এবং নাম্বারস – এই তিন পুস্তকে পাওয়া যায়, কিন্তু লেভিটিকাস এবং ডিউট্রনমিতে পাওয়া যায় না।

P /“পি” ট্র্যাডিশনঃ
প্রিস্টলি ট্র্যাডিশন বা “পি” ট্র্যাডিশন মুলত বাইবেলে বর্ণিত বিভিন্ন গোত্র, চরিত্রের বংশগত উৎপত্তি, তাদের পূর্ব পুরুষ, এবং বংশধর, বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান এই সব নিয়ে লেখা। ধারনা করা হয় এই “পি” ট্র্যাডিশনের লেখক/লেখকগন “পি” ট্র্যাডিশন লেখার পাশাপাশি “জে” এবং “ই” ট্র্যাডিশনকে প্রথমবারের মত একসাথে করেছিল খৃস্টপূর্ব ৭০০ সালের দিকে। এর পর এই লেখার পুনঃ লেখা হয়েছে যাকে “আর” ট্র্যাডিশন বলে। “ই” ট্র্যাডিশনের মতই “পি” ট্র্যাডিশনে গড কে “ইলোহিম” বলা হয়েছে। হিব্রু বাইবেলের তৃতীয় পুস্তক “লেভিটিকাস” এই “পি” ট্র্যাডিশনের উদাহরণ।

“ডি” ট্র্যাডিশনঃ
হিব্রু পেন্টাটেকের শেষ পুস্তক “ডিওট্রনমি” স্বতন্ত্র বৈশিস্টপূর্ণ একটি পুস্তক। এই পুস্তকে মুলত বিভিন্ন ধরনের নিয়ম কানুন, আইন, নির্দেশ এই সব দৃশ্যমান। এই ডিউট্রনমি কে মুজেশের দ্বিতীয় আইন (দ্বিতীয় তওরাত) ও বলা হয়ে থাকে। এর বিষয় বস্তু মুলত ইস্রায়েলীদের সাথে গড জিহোভার সম্পর্ক এবং ইস্রায়েলীদেরকে গড জিহোভার পছন্দনীয় মানুষ হিসাবে

হিব্রু বাইবেলের সাথে হিব্রু ভাষার ইতিহাস এবং ঐ ভাষাভাষীদের ভৌগলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপুর্ন। কারন বর্তমান হিব্রু ভাষা হচ্ছে পুরাতন হিব্রু ভাষার নতুন সংস্করণ যার বয়স খুব বেশি নয়। প্রাচীন হিব্রু ভাষা মুলত কেনানিটি ভাষার একটা ভেরিয়েশন যা সেমেটিক ভাষার অন্তর্ভুক্ত। এই সেমেটিক ভাষা (কেনানিটি, আরামিক, সিরিয়াক, আরাবিক ইত্যাদি) মুলত আফ্র-এশিয়ান ভাষার শাখা থেকে এসেছে। আক্কাদিয়ান ভাষা ( লেখার হরফ সিম্বলিক, কোন বর্ণমালা নাই) ব্যাতিত বাকি সেমেটিক ভাষা গুলির কমন বৈশিস্ট হচ্ছে এর লিখিত রুপে কোন স্বরবর্ণ ব্যাবহার হয় না। দুই থেকে চারটা (মুলত তিনটাই বেশী) ব্যঞ্জনবর্ণের সমন্বয়ে শব্দের মুল গঠিত হয় এবং তা লিখিত আকারে থাকে এবং এই শব্দের সাথে বিভিন্ন উপসর্গ অনুসর্গ যোগ করে এবং যথাযথ স্বরবর্ণের প্রয়োগ গঠিয়ে ভাষা কে শাব্দিক রুপ দান করা হত। এই ভাষার কোন টেক্সট পড়তে গেলে পাঠককে আগে থেকেই ঐ ভাষার স্বরবর্ণের ব্যাবহার মনে রাখতে হত। (এই ধরনের বর্তমান উদাহরণ হচ্ছে আরবী ভাষার লিখিত এবং কথিত রুপ) । সাধারণত ধারনা করা হয় আখামেনিদ যুগে আরামিক ভাষার প্রচার ধীরে ধীরে বারতে থাকে এবং এই আরামিক ভাষা অফিসিয়াল ভাষা হিসাবে ব্যাবহ্রত হতে থাকে এবং একি সাথে কেনানিটি/ হিব্রু ভাষার প্রচলন ক্রমেই লোপ পেতে থাকে। স্কলারদের হিসাব অনুযায়ী ঐ সময়েই হিব্রু বাইবেল আরামিক ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এর পরে হিব্রু ভাষা কথিত ভাষা হিসাবে একসময় সম্পূর্ণ রুপে বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে হিব্রু ভাষা হিব্রু বাইবেলের টেক্সটের মধ্যেই সীমাব্দ্ব হয়ে পরে। লিখিত ভাষাকে শাব্দিক রুপদানের জন্য যে স্বরবর্ণের ব্যবহার দরকার ছিল তা ভুলে যাওয়ার কারনে হিব্রু বাইবেল একটি অপরিচিত ভাষার একটি পুস্তক হিসাবে টিকে থাকল, এবং মুল হিব্রু ভাষার চিরতরে মৃত্যু হল যা প্রায় এক হাজার বছর পর নতুন রুপে আবির্ভূত হয়। এই এক হাজার বছর এই ভাষা ছিল মৃত।

খৃস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে আলেকজান্ডার বিভিন্ন রাজ্য জয়ের ফলে গ্রীক ভাষা অনেক জায়গায় অফিসিয়াল ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ কারে। এর জের ধরে ইজিপ্টের তৎকালীন শাসক টলেমী ফিলাডেলফিস (টলেমী -২) সময় গ্রীক ম্যান্ডেট নিয়ে আলেকজান্দ্রিয়া তে এই আরামিক ভাষার বাইবেল কে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করা হয়, কারন ঐ সময়ে গ্রীক ছিল ভুল ব্যাবহ্রত অফিসিয়াল ভাষা। এই গ্রীক ভাষায় অনূদিত বাইবেল কে সেপ্টুজেয়ান্ট বাইবেল বলা হয়। কথিত আছে ৭০ জন লেখক এই অনুবাদের কাজ করেন, তাই একে সেপ্টুজেয়ান্ট বাইবেল বলা হয়। ঐ সময়েও হিব্রু বাইবেল ছিল নীরব ভাষা অর্থাৎ অনুচ্চারিত ভাষা।

ষষ্ট থেকে দশম শতাব্দী- এই সময় কালে বিভিন্ন যাজক শ্রেনী হিব্রু বাইবেলর নীরব ভাষাকে সরব করার কাজ শুরু করেন, অর্থাৎ আরামিক এবং আরাবিক ভাষার সাহায্যে (যেহেতু এই দুইটি ভাষা সেমেটিক এবং হিব্রু ভাষার সাথে মিল রয়েছে) হিব্রু ভাষায় লিখিত বাইবেলের ব্যাঞ্জন বর্ণের সাথে স্বরবর্ণের প্রয়োগ ঘঠিয়ে এক উচ্চারিত ভাষার রুপদান করার চেষ্টা করেন। হিব্রু বাইবেলের এই টেক্সটকেই মেসেরটিক অনুবাদ বলা হয়। এটা করতে গিয়ে তৎকালীন যাজক শ্রেনী নতুন হিব্রু ভাষার উদ্ভাবন করেন যা প্রাচীন কালে কখনোই উচ্চারিত হয়নি। তবে, একটা ব্যাপার এইখানে লক্ষ্যনীয় যে, প্রায় এক হাজার বছরের অধিক সময়কালের পরে যদিও মেসেরটিকরা নতুন এক হিব্রু ভাষার উদ্ভাবন করেছেন, যার শব্দমালা মুলত হিব্রু বাইবেলের টেক্সটের মধ্যেই সীমাবদ্ব, মুল হিব্রু টেক্সট কিন্তু অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। যার ফলে মুল হিব্রু বাইবেলের ভাষার উচ্চারন এবং এর অর্থ পরিবর্তন হলেও এর টেক্সট মুলত একই আছে।

এইখানে একটা ব্যাপার উল্লেখ না করলেই নয় আর তা হচ্ছে ইস্রায়েলী এবং ইহুদীদের ভৌগলিক অবস্থান যা হিব্রু বাইবেলের সাথে উতপ্রোত ভাবে জড়িত। যদিও বেশিরভাগ স্কলার বলে থাকেন যে তাদের আদি নিবাস হচ্ছে বর্তমান জেরুজালেম এং প্যালেস্টাইন, উনিশ শতকের দিকে বেশ কিছু স্কলার আর্কিওলজি, টপগ্রাফি, জিওগ্রাফি, স্থান সমূহের নাম, ইত্যাদির মাধ্যমে প্রমান করার চেস্টা করেন জেরুজালেম এং প্যালেস্টাইন ইস্রায়েলী এবং ইহুদীদের আদি নিবাস নয়, বরং তাদের আদি নিবাস হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকা (সৌদি আরবের কিছ অংশ এবং বর্তমান ইয়েমেন)। মুলত দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকা থেকে তারা ভিন্ন সময়ে ভিন্ন কারনে বর্তমান জেরুজালেম বা প্যালেস্টাইনে বিভিন্ন সময়ে মাইগ্রেশন করেন। যার ফলে ভৌগলিক ভাবে দুই জায়গায় (দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকা এবং বর্তমান জেরুজালেম এং প্যালেস্টাইন) তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যদিও আদি নিবাস হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকা । ভৌগলিক দুরত্বের কারনে এই দুই জায়গায় দুইটা পৃথক কমিউনিটি গড়ে উঠে- যাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল খুব কম (হয়ত দুরত্বের কারনে, রাজনৈতিকও হতে পারে)। এর ফলে হিব্রু বাইবেলর বিভিন্ন ঘঠনার মুল মঞ্চ মুলত দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকা। তাই বাইবেলে বর্ণিত ডেভিডের স্ম্রাজ্য, সলোমনের টেম্পল এবং যত কাহিনী আছে তা মুলত হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম আরব এলাকাকে নির্দেশ করে। এর স্বপক্ষে প্রচুর প্রমান বিদ্যমান যা কোন ভাবেই অস্বীকার করা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২২
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×