আজকে ব্লগে এসেই জিন-ভুত নিয়ে অনেকগুলো পোষ্ট দেখে নিজের কিছু অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করার ইচ্ছা হল। বিষয়গুলো খুব একটা ভৌতিক কিনা জানিনা, তবে আমি কিন্তু ভয় পেয়েছিলাম। যাই হোক, আমার অভিজ্ঞতার গল্পে এখন আপনাদের নিয়ে যাব।
ঘোস্ট হান্টিং ট্যুর (ডেসটিনেশন- সোনারচর, হাতিয়া নোয়াখালী)
আমাদের নিয়মিত আড্ডার বিষয়বস্তু একদিন হঠাৎ করেই ভুত-আড্ডায় পরিনত হল। অমুকের তমুক অমুক জায়গায় এই দেখেছে তার গল্প শেষ না হতেই আরেকজনের বাবা নিজেই পরীর সাথে ভেগে গিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তাল গাছের মাথা থেকে তাকে নামিয়ে আনা হয়, এইসব আলোচনা চলছিলই। তো এরই মধ্যে আমাদের এক বন্ধু তার নিজের গ্রামের বাড়ির কাছে এক পতি গোরস্থানে অশরীরের আনাগোনার কথা জানান দিল। আমরা সবাই চিন্তা করলাম এইবারের কোরবানির ঈদের বন্ধে সেখানে যাব। যেই ভাবা সেই কাজ, সবাই রউনা হয়ে গেলাম- ভুতের গুষ্ঠি উদ্ধার করতে।
বন্ধুর নানা বাড়ি সোনারচরে। তাদের বাড়ির অদূরেই একটা গোরস্থান, আর সেই গোরস্তানের কাছেই ছোট পরিসরে একটা পতি গোরস্থান। যাদের জানাজা হয় না, আত্মহত্যা করেছে, নিশিকন্যা কিম্বা যারা সমাজে গ্রহণযোগ্য নয় সেই সব হতভাগা লাশের গন্তব্য হচ্ছে এই পতি গোরস্থান। যারা পৃথিবীতে বেচে থাকতে অতৃপ্ত ছিল, মৃত্যুর পরেও যে অতৃপ্তি থাকবেনা তা তো বলা যায় না।
রাত ১০টার দিকে তাদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলাম, পরিকল্পনা হল রাত ১ টার দিকে আমরা সবাই পতি গোরস্থানে যাব। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা দশ জন মিলে ভুতের অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু করলাম, যে যার মতন বিভিন্ন অপার্থিব বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করলো। এমনিতেই আমাবস্যা তার উপরে এই সব আলোচনা, কেমন যেন ভয় ভয় করতে লাগলো।
রাত ১টা, সবাই যে যার মত প্রস্তুত। টর্চ লাইট নেয়া হল বেশ কয়েকটা। রউনা দিলাম, এমনিতেই প্রত্যন্ত গ্রাম, আসার পর থেকেই শেয়াল কুকুরের থেমে থেমে ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম। রউনা দেবার পরে সেই ডাক যেন আর বেড়ে গেলো, যীযী পোকার ডাক বাতাসের শব্দ, গাছের পাতার শন শন এই নানান রকম সাউন্ড ইফেক্টের কারণে ভয়টা যেকে বসছিল।
প্রায় ১০ মিনিট হাটার পরে আর পারিপার্শ্বিকের অবস্থা দেখে মন বিদ্রহ করে উঠলো, আর না যাই। এই অবস্থা সবার মাযে আস্তে আস্তে সংক্রমিত হওয়া শুরু করেছে। আকা বাকা মেঠ পথ তার মধ্যে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। তো এভাবে হাঁটতে হাঁটতে প্রায় ১৫ মিনিট পরে আমরা পতি গোরস্থানের কাছে এসে পৌঁছলাম। চারদিক জান্তব আওয়াজ যেন আর বেরে গেছে। আমরা সবাই খুব ধিরে হাটা শুরু করলাম। গোরস্থানের এক পাশে ঢাল, আর ঢালের পাশেই একটা বিরাট দীঘি। আমরা সবাই গিয়ে সেই ঢালের উপর দাঁড়ালাম। একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটলো। শেয়াল, কুকুর,যীযী পোকার ডাক, বাতাসের শব্দ সব বন্ধ। এক আশ্চর্য নীরবতা। সবাই যে যার মতন দোয়া দুরুদ পড়া শুরু করে দিলাম। একজন আরেকজনের গায়ে গায়ে দাড়িয়ে আছি, আর সবাই পতি গোরস্থানের সবটা জুড়ে চোখ বুলাচ্ছি, নাহ কিছু দেখলাম না। কিন্তু প্রত্যেকেই অনুভব করলাম কিছু একটা।
হঠাৎ করেই একটা জোড় বাতাস বইলো। প্রত্যেকেই কেপে কেপে উঠলাম। প্রায় পাঁচ কি সাত মিনিট ধরে দাড়িয়ে আছি, কিন্ত মনে হচ্ছে অনন্তকাল ধরে আছি। আর সহ্য হলনা সবাই মিলে ফিরতি পথে রওনা হলাম আর আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করলাম শেয়াল, কুকুর,যীযী পোকার ডাক, বাতাসের শব্দ আবার শুরু হয়ে গেছে। কিছুই দেখিনি এটা সত্য কিন্তু অনুভব করেছি। এই অনুভুতির নাম কি দেয়া যায় জানিনা, কিম্বা শেয়াল, কুকুরের ডাক বন্ধ হবার কি রহস্য তাও জানিনা।
---------------------------------------------------
গল্পটা বড় হয়ে গেছে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




