ব্লগের পোষ্টগুলো দেখিছলাম। হঠাৎ একটি পোস্ট চোখে পড়লো। একজন ব্লগার বলছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়া নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের যোগ্য সম্মান দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়ার অনেক সফলতা থাকতে পারে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন এই কথা বললে সেটি হবে চরম কৌতুক। সেই কৌতুকে না হেসে কেবলই কাঁদবে আমার মতো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের স্বজন আর সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা।
৭ নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন জিয়া। এর আগের কয়েকদিনের চরম সংকটের সময়ে কর্ণেল তাহরের কাছে বারবার তিনি অনুরোধ করে, তাকে মেরে ফেলা হবে। তাহের যেন তাঁর জীবনটা বাঁচান। তাহের তাঁর অনুরোধ ফেলেননি। কিন্তু জীবন বাঁচানোর এই উপকারের বিনিময়ে জিয়া ফাঁসিতে ঝূলিয়েছিলেন এ দেশের সেরা একজন মুক্তিযোদ্ধা দেশপ্রেমী তাহেরকে। তাহরেকে ফাঁসিতে ঝুলানো কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখানো?
তাহেরর পর জেলখানায় আরো অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তিনি কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখিয়েছিলেন? সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ পদ থেকে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের সরিয়ে অমুক্তিযোদ্বাদের বসিয়ে তিনি কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করেছিলেন। বিমান বাহিনীর অফিসারদের লাশগুলোও তিনি পরিবারকে দেননি। এসব কি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের ইতিহাস।
জিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সর্বনাশটি করেছিলেন রাজাকারদের দেশে এনে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে। এরপরেই গোলাম আযম, নিজামীরা দেশে ফিরে আসে। এসব করে তিনি আসলেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন!
জিয়া ভক্তদের এসব কথা শুনলে আমরা লজ্জা পাই। আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে বড় সর্বনাশটি কে করেছিলেন? উত্তর জিয়াউর রহমান। এই লোকটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে না জড়ালে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।
৭ নভেম্বর ক্ষমতা দখলের পর তিনি কোরান ছুয়ে শপথ করেছিলেন কখনো রাজনীতি করবেন না। তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে সরে যাবেন। আপনারা যারা ধর্মের কথা বলেন তারা কি বলবেন, কোরান ছুয়ে এভাবে শপথ ভঙ্গ করা কতো বড় অপরাধ?
আমার মনে হয়, যে ব্লগার এটি পোষ্ট করেছেন তিনি মুক্তিযোদ্ধা, বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেউ নন। তাই অনুরোধ, দয়া করে আর লজ্জা দেবেন না। মুক্তিযুদ্ধকে যারা স্বীকার করেন না, তারাই এ দেশে বারবার জিয়া মুজিব বিতর্ক তুলেছে। বেঁচে থাকতে জিয়া কোনদিন যে সাহস করেননি নিজামী-গোলামরা সেটা করছে। এখনো তারা করে যাচ্ছে তাদের নিজস্ব পত্রিকা, টিভি এমনকি তাদের ব্লগাররাও। জাতি আপনাদের কাছ থেকে মুক্তি চায়। আমাদের রেহাই দিন প্লিজ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৭