সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের হিট অফিসার নিয়োগ নিয়ে নানান ট্রল দেখলাম যার প্রায় বেশীরভাগই নোংরামি ইংগিতপূর্ণ। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা পর্যন্ত এই নোংরা কাদা নিজের শরীরে মাখাতে পিছপা হয় নাই। আমাদের স্বভাব এমন হয়েছে যে, অনলাইন বা নিউজফিডে কোন একটা বিষয় পেলে সবাই সেই বিষয়ে কথা বলতে ঝাপিয়ে পড়ে, আর ট্রল, মিমস এর সুযোগ থাকলে তো কথাই নাই। যাই হোক আমি নিজেও যেহেতু সেই বিষয়ে কথা বলতে এসেছি, আমিও না হয় সেই দলেই গণ্য হলাম।
নগরের সবুজায়নের জন্য আমার কিছু সুপারিশ রেখে গেলাম ব্লগে, যদি মাননীয় মেয়র এবং হিট অফিসার মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর হয় -
(০১) পৃথিবীর অনেক দেশে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য বা সেবার কোম্পানিগুলোর উপর "গ্রীণ ট্যাক্স" ধার্য করা হয়। আমাদের দেশে সেটার আদলে বিপরীত কিছু করা যেতে পারে। যেমন সবচাইতে সবুজায়নে সফল ওয়ার্ডের ভূমিকর, হোল্ডিং ট্যাক্স এর মত কর খাতে বিশেষ ছাড় এর ঘোষণা দেয়া যেতে পারে।
(০২) শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে সবুজায়ন কার্যক্রম চালু করতে হবে আর যেই ওয়ার্ডের সবুজায়ন কার্যক্রম যত ভালো হবে, সিটি করপোরেশন হতে একটা বিশেষ তহবিল সেই এলাকায় বেশী উন্নয়ন কার্যক্রমে বরাদ্দ দেয়া হবে।
(০৩) কর্পোরেট অফিস, ফ্যাক্টরিগুলো সবুজায়ন উদ্যোগের জন্য কর রেয়াত এর প্রনোদনা পেতে পারে সুনির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে।
(০৪) কোন বাড়ির ছাদে নির্দিষ্ট পরিমাপের ছাদ বাগানের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে "বেস্ট গ্রীন ইকো হোল্ডিং" শিরোনামে বিশেষ নম্বর ফলক সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রদান করা যেতে পারে।
(০৫) প্রতিটি মার্কেট এলাকার এক কিলোমিটার এলাকার রোড ডিভাইডার সহ রাস্তা সংলগ্ন জমিতে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের অংশীদার করা যেতে পারে। যেখানে বৃক্ষ রোপণ এর স্পন্সরশীপ বোর্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর নাম থাকবে। ফার্মগেট থেকে বিজয় স্মরণী রোডের ডিভাইডারে "এসিআই" কোম্পানির এরকম বোর্ড দেখেছিলাম, এখনো আছে কি না জানা নাই।
(০৬) এখনকার প্রায় স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির ক্যাম্পাস দালানে, নেই কোন মাঠ আর খোলা জায়গা। এসকল প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাপের ছাদ বাগান বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
(০৭) আর হ্যাঁ, অতি অবশ্যই সারা শহরের রোড ডিভাইডারগুলোতে টেকসই বহুবর্ষজীবী গাছ রোপণ এর উদ্যোগ নিতে হবে সৌন্দর্য বর্ধন এর গাছের মোহ থেকে বের হয়ে এসে।
(০৮) মেট্রোরেল লাইনের নিচে চওড়া সুদীর্ঘ আইল্যান্ড এখনো একদম খালি পড়ে আছে। এখানে চিন্তা ভাবনা করে অনেক বড় ধরনের উদ্যোগ নেয়া যায়। শুধু মৌসুমি ফুলগাছ লাগিয়ে দায়সারা ভাবে চমক দেখালে হবে না। - শেরজা তপন
(০৯) অবৈধভাবে এবং অযৌক্তিক কারণে গাছে কাটা হলে প্রতি ১টি গাছ কাটার বদলে নিজ খরচে ১০০টি গাছ লাগানোর মতো কঠোর শাস্তি বিধান করা যেতে পারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে যেখানে শহর অঞ্চলে অংশীদার থাকবে স্থানীয় সিটি করপোরেশনগুলো। - আহমেদ জী এস
(১০) সরকারকে বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজন মাফিক প্রচারনা চালাতে হবে এবং আইন প্রণয়ন করে তা প্রয়োগে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। মূল শহর থেকে ফ্যাক্টরি, সচিবালয়, কর্পোরেট হেড অফিস সরিয়ে নিতে হবে। এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে ৪০% লোক ছড়িয়ে পড়বে বাইরে। ঢাকা সহনশীল হবে পরিবেশ রক্ষায়। এর বাইরে থাকা বিদ্যমান কর্পোরেট অফিসগুলোকে বাধ্যতামূলক পরিবেশের সুরক্ষা এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে নানান কার্যক্রমে কন্ট্রিবিউট করতে হবে। - সোহানী
বোকা মানুষের বোকা বোকা পরিকল্পনার সাথে আপনার কাছে আরও কিছু করণীয় পরিকল্পনা থাকলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। পোস্টে সংযুক্ত করে আপডেট করে দেয়া হবে
সবুজের কথা যখন এলোই, একটা সবুজের গান শোনা যাক-
একটু খানি সবুজ খুঁজি, একটু সবুজ হাওয়া
এই শহরে একটু সবুজ, অনেক বেশি পাওয়া
একটু খানি সবুজ খুঁজি, হলুদ চোখের কোণে
খুঁজে বেড়াই একটু সবুজ, অবুঝ কারো মনে
খুঁজে বেড়াই সবুজ পাড়া, খুঁজি সবুজ বন
কে আমাকে ফিরিয়ে দেবে, সেই সে সবুজ মন
দিন তো আমার সবুজ ছিল, চুরি হল রাতে
খুন হল আজ জ্যোৎস্না সবুজ, কোন ডাকাতের হাতে
খুন হলো জোনাক জ্বলা, কাজলা দিদির মন
কে আমাকে ফিরিয়ে দেবে, সেই সবুজ মন।
পুড়ছি আমি ভিতর বাহির, অন্য রকম শোকে
কে আমকে সবুজ দেবে, খুলে রাখা চোখে।
সবুজ খরায় শহর টা আজ পুড়ছে সারাক্ষণ
কে আমকে ফিরিয়ে দেবে সেই সে সবুজ মন
কথাঃ জুলফিকার রাসেল।
ব্যান্ডঃ দলছুট।
এলবামঃ জোছনা বিহার।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:০৬