যারা ইয়াহু মেইল ব্যবহার করেন তারা একটু নড়ে চড়ে বসেন। যে খবরটা দিতে চলেছি পারলে আশেপাশে খুটি থাকলে তা ধরে বসে পড়েন। সকালে টুইটার ঘাটছিলাম একটা ছোট খবরের দিকে চোখ আটকে যায়। যা পড়লাম তাতে মাথা নষ্ট হবার যোগাড়। গত ২০১৪ সাল থেকেই নাকি কয়েকটা হ্যাকার গোষ্ঠি ইয়াহু ইনকরপোরেশনের তথ্য হ্যাক করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। ঘটনাটা ২০১৫ অবধি ইয়াহু ধরতেই পারে নি। যখন "পিস" নামধারী এক হ্যাকার ইয়াহুর ২০০ মিলিয়ন অ্যাকাউন্টের তথ্য মাত্র ১৯০০ ডলারে বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দেয় তখনই ব্যাপারটা নজরে আসে ইয়াহুর। এবার যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা আরো মারাত্বক।
"৫০০ মিলিয়ন ইয়াহু মেইল অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি হয়ে গেছে"। এবারের হ্যাক্যার গ্রুপের নামটা মজার। "স্টেট স্পনসর"। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যে বা যারা তথ্য চুরি করেছে তারা একেবারেই আনট্রেসেবল অবস্থায়ই আছে। তাদের এই তথ্য চুরির ব্যাপারে কোন এভিডেন্সই পাওয়া যাচ্ছে না।
চুরি হয়ে যাওয়া তথ্য গুলার ভিতরে আপনার মেইল অ্যাকাউন্টটাও থেকে যেতে পারে। তখন হ্যাকার গোষ্ঠি আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, টেলিফোন, মোবাইল নাম্বার, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সেভ করা পাসওয়ার্ড সহ মেইলে রাখা সকল তথ্য পেয়ে যাবে। এই সব তথ্য ব্যবহার করে তখন তারা আপনার সোস্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টে ঢুকে অপব্যবহার করতে পারে বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য নিয়ে আপনার জমানো টাকা তুলে নিতে পারে। আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে নানা ধরনের মেইল স্পর্শকাতর জায়গায় পাঠাতে পারে যাতে করে আপনার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
ইয়াহু ইনকরপোরেশনের এই তথ্য চুরির ঘটনা জানা গেছে খুবই সাম্প্রতিক সময়ে। যদিও ইয়াহুর ইনফরমেশন সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট বব লর্ড জানাচ্ছে যে, ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক ইনফরমেশন আলাদা করে স্টোর করে রাখার জন্য তা চুরি হয় নি। তবে ব্যাপারটা এখনো ঘোলা। আমার এই ব্যাপারটা কেমন জানি খটকা লাগছে।
যে "পিস" হ্যাকারের কথা বললাম তারা ২০১২ সালে মাইস্পেস ও লিংকড ইন থেকেও প্রচুর তথ্য হাতিয়ে নিয়ে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিয়েছিল। ইয়াহুর এই ৫০০ মিলিয়ন অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা যে সেই দিকে গড়াবে না তার নিশ্চয়তা কি? হ্যাকার গুলা কেন যে এমন দুষ্টু হয়?
আমার আপনার অ্যাকাউন্ট যদি থেকে থাকে তাইলে তখন কি হবে? আমার নিজের ইয়াহুতে অ্যাকাউন্ট আছে। তবে তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না। তবে আমি আজই পাসওয়ার্ড চেইঞ্জ করে ফেলেছি। সকল সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডও চেইঞ্জ করে ফেলেছি। যাদের ইয়াহুতে অ্যাকাউন্ট আছে তারাও দেখেন মেইলে ঢোকা যায় কি না? যদি ঢোকা যায় তাইলে দ্রুত পাসওয়ার্ড সহ বেসিক সেটিংসের চেইঞ্জ করে ফেলেন। ইয়াহু দিয়ে খোলা সোস্যাল মিডিয়ার পাসওয়ার্ডও চেইঞ্জ করতে ভুলবেন না। হ্যাকাররা আমার আপনার ক্ষতি যে করবে না তার নিশ্চয়তা কি?
বি সেইফ, কিপ সেফ।
(অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিলে হয়ত তার অ্যাকাউন্টটাও হ্যাকারদের হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে।)
সংবাদ লিংকঃ
সি এন এন- Click This Link
সি নেট- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২২