ক্রিকেটের ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিং নিয়ে বিতর্ক এখন চরমে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে ঝড় বইছে।
ক্রিকেট জগতে এই অপরাধ অনেক পুরনো হলেও বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকেই এ অপরাধের বলি হতে হয় সবচেয়ে বেশি। ইতিহাস ঘাঁটলে এই কথার পক্ষে ভুরি ভুরি প্রমাণ পাওয়া যায়।
এই বক্তব্যের মূল বিতর্ক বাংলাদেশ ক্রিকেটের ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিং ঘিরে।
প্রথমেই বলে রাখি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর চিহ্নিত গুপ্তচর মতিউর রহমানের দৈনিক প্রথম আলো এবং মাহফুজ আনাম’র ডেইলি স্টার কোনো বিষয়ে বিশেষ উৎসাহী হয়ে গেলে সেই বিষয়টিতে আমার সন্দেহ এবং আশঙ্কা জাগে বেশি। এটা শুধু আমার নয়, ভোট নিলে দেখা যাবে এই প্রজন্মের দুই তৃতীংশেরও বেশি তারুণ্য মতি-মাহফুজদের ওপর সন্দেহপ্রবণ। কারণ, এরা সবসময়ই ছদ্ধাবরণ করে দেশের এবং গণতন্ত্রের সর্বনাশ করার চেষ্টা করেছে।
দুয়েকটা উদাহরণ দেওয়া যায় যেমন,
*এক/এগারোর সময় দুই নেত্রীকে মাইনাস করার ভিনদেশি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মতি-মাহফুজদের ভূমিকা।
*অবিসংবাদিত রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারলেও তাকে দুর্নীতির বরপুত্র এবং ভিলেন বানিয়ে দেশ গড়ার রাজনীতি থেকে বিদায় জানানোর অপচেষ্টা।
*চিফ হুইফ ফারুককে পুলিশের বেধড়ক পিটুনির পর ফারুককে পিকেটার বানানোর নির্লজ্জ ব্যর্থ চেষ্টা।
*গণহত্যার খবর এবং ছবি প্রকাশ না করে আড়াইশ’ গাছের জন্য মায়াকান্না।
*সাভারের রানা প্লাজার ঘটনায় যখন সবাই শোকাহত, তখন মেরিল-প্রথম আলোর উদ্যোগে নাচন কুর্দনের আয়োজন করা।
প্রথমেই বলেছি, প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারও এই মতাদর্শে বিশ্বাসী পত্রিকাগুলো এবং এপন্থি সুশীল সাম্বাদিকরা দেশপ্রেমের কথা বললেও মোটা অঙ্কের পেমেন্টের বিনিময়ে দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে অবিরাম কাজ করছে। এই ছদ্মবেশিরা দেশে প্রেমের বড় বড় শ্লোগান আওড়িয়ে মানুষকে বোঝাতে চায়, আমাদের মতো দেশপ্রেমি আর কেউ নেই। কিন্তু তলে তলে ‘র’ আর ‘মোসাদ’র এর টাকা খেয়ে এরা বাংলাদেশ ও এ দেশে ইসলামের বিস্ময়কর উত্থানকে দমিয়ে দিতে কাজ করে।
এবার মূল কথায় আসি, ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ আকসু’র তদন্ত প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত না আসলেও গত শুক্রবারই লাল কালিতে শীর্ষ সংবাদ করে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে প্রথম আলো।
আকসু’র প্রতিবেদন কিংবা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ছাড়াই ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ে ‘শুধু আশরাফুল একা নন’ বলে প্রথম আলো বা ডেইলি স্টার নিশ্চিত হলেও বাংলাদেশের অন্যান্য ক্রিকেটবোদ্ধাদের মতো আমরা সাধারণ ক্রিকেটভক্তরাও চাই তদন্ত ছাড়াই এভাবে কাউকে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত সাব্যস্ত না করা হোক।
তদন্ত কিংবা আকসুর প্রতিবেদনের আগেই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে কারা এমন উঠে-পড়ে লাগতে পারে এটা বাংলাদেশের শিশু ছেলেটিও ভাল করে জানে।
ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উত্থান নিয়ে যারা আতঙ্কিত অথবা উদ্বিগ্ন তারাই এ ষড়যন্ত্র করছে এটা সবার কাছেই পরিষ্কার। আর বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার নিশ্চয়ই কোনো মাথাব্যথা নেই, কারণ এ দেশ দু’টি বছরে দু’বার করে হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে। অথচ প্রতিবেশী হিংসুটে দেশটি স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে নিজেদের দেশে আমন্ত্রণ জানায়নি। যদিও বাংলাদেশে আসে তবু বাংলাদেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদে নিয়ে কটূক্তি করে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর ষড়যন্ত্রে প্রথম আলো-ডেইল স্টার চক্র বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করছে এমন ধারণাই পরিষ্কার হয়ে উঠছে।
আর আমরা এটাও কামনা করি গুপ্তচর মতি-মাহফুজদের এহেন আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণিত হোক। কারণ, আমরা শ্লোগানধারী দেশপ্রেমিক নই, সত্যিকারে দেশকে ভালবাসি। দেশকে ভালবাসতেই হবে, কারণ এদেশ নিয়ে কেউ টানা হেঁচড়া করলে আমাদেরকে তো আর ‘র’ কিংবা ‘মোসাদ’ শেল্টার দিবে না!
শেষ কথায় বলতে চাই, আশরাফুল হোন আর যেই হোন, যদি এই ক্রিকেটিয় চুরিতে দোষী প্রমাণিত হোন তবে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে। অবশ্যই কঠোর শাস্তি। যাতে কেউ ভবিষ্যতে এ ধরনের দুষ্কর্ম করার সাহস পর্যন্ত না করতে পারে। যাতে মতি-মাহফুজদের মতো গুপ্তচররা এমন একটি সুতো ধরে পুরো ক্রিকেটাঙ্গনকেই ষড়যন্ত্রে জ্বালে বুনে ফেলতে না পারে।
সকল যড়যন্ত্র ব্যর্থ হোক।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের জয় হোক।