ব্লগার তর্পনের ব্লগটি পড়ে অনুপ্রানিত হয়ে মুলতঃ এটি লেখা। এটি প্রথম আলোতে ছাপানো ৬ টি একাত্তরের চিঠির ২ নং চিঠি। একাত্তরের চিঠি বইটিতে ২৬ নম্বর পৃষ্টায় স্থান পেয়েছে এই চিঠিটি।
চিঠি ২:
জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলির বদৌলতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সাফি ইমাম রুমি এখন আর আমাদের কাছে অপরিচিত কেউ নয়া। কোনোদিন না দেখা এই মানুষটিকেই এখন মনে হয় আমাদের পরিবারের কোন সদস্য। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাহমিদ সাঈদকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন রুমী। সম্পর্কে তিনি রুমীর মামা। মূল চিঠিটি ইংরেজীতে লেখা, এখানে দেওয়া হলো তার বাংলা অনুবাদ।
আগরতলা
১৬ জুন, '৭১
প্রিয় পাশা মামা,
অবাক হয়ো না! এটা লেখা হয়েছে আর তোমার কাছে পৌছেছে। আর পড়ার পর চিঠিটা নষ্ট করে ফেলো। এ নিয়ে আম্মাকেও কিছু লিখোনা। তাহলে তাদের বিপদে পড়তে হবে। তারাহুড়া করে লিখলাম। আমার হাতে সময় খুব কম। বেস ক্যাম্পের উদ্দেশে কাল এখান থেকে চলে যেতে হবে।
আমরা একটা ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ লড়ছি। আমরা জয়ী হব। আমাদের সবার জন্য দোয়া কোরো। কী লিখব বুঝতে পাড়ছি না--কত কী নিয়ে যে লেখার আছে! নৃশংসতার যত কাহিনী তুমি শুনছ, ভয়াবহ ধ্বংসের যত ছবি তুমি দেখছ, জানবে তার সবই সত্য। ওরা আমাদের নৃশংসতার সঙ্গে ক্ষতবিক্ষত করেছে, মানব ইতিহাসে যার তুলনা নেই। আর নিউটন আসলেই যথার্থ বলেছেন, একইধরনের হিংস্রতা নিয়ে আমরাও তাদের উপর আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে দেব।
জানি না আবার কখন লিখতে পারব। আমাকে লিখ না। সোনার বাংলার জন্য যা পারো কর।
এখনকার মত বিদায়।
ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাসহ
রুমী