somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে দেশকে কোনদিন স্বীকার করেনি, সেই দেশেই গো আযমের কবর হল!

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপাতত ঘটনার পরিসমাপ্তি এখানেই। স্বাধীনতার ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত নামটি যার বার বার উচ্চারিত হয়েছে, সেই গো আযমের দাফন-কাফন সব হয়ে গেল। এবং একেবারে নির্বিঘ্নেই!

আমি সত্যি হতাশ, মর্মাহত, বিরক্ত! জীবিত থাকতে সেই লোকটি বাংলাদেশকে স্বীকার তো করেইনি, বরং মৃত্যুর আগ পর্যিন্ত ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছে। আমরা তার কিছু করতে পারলাম না। উলটো উন্নত হাসপাতালের বিলাশ-বহুল কক্ষে সুখে-শান্তিতে দিন পার করতে দেখলাম। অবাক হয়ে দেখলাম মুক্তিযুদ্ধ চেতনার ধ্বজা-ধারী দলটি ক্ষমতায় থাকার পরও যুদ্ধের সবচেয়ে ঘৃণীত ব্যক্তিটির জানাজা, দাফন সব এই দেশের মাটিতেই হল। শুনেছি গো আযমের নাকি দেশের নাগরিকত্বও নেই। তবু নির্বিঘ্নে একটা দেশের একটা রাজনৈতিক দল চালিয়ে গেল, দেশের টাকায় তার বিলাসী জীবন-ধারণ চলল।

আমি অবাক হয়ে দেখালাম এই ঘটনায় আমরা প্রায় প্রতিক্রিয়াহীন। যেন কারোই কোন কিছু যায় আসে না! আমরা সব ষড়যন্ত্র ভুলে গেছি। শাহবাগ, পল্টনে বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিবাদ হতে দেখেছি। অথচ সেখানে লোক সমাগম নেই। গণজাগরণ তো এখন দিন দিন ব্যানার-সর্বস্ব হয়ে যাচ্ছে, সেটা না হয় বাদ গেল। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষের মুখে কোন প্রতিবাদ ছিল না।

আরো বিস্মিত হলাম তাদের বিচ্ছিন্নতা দেখে। একদিকে শাহবাগ, আরেকদিকে সিপি, আরেক দিকে অন্যান্য সংগঠনগুলো। এই বিশেষ একটা ইস্যুতেও কি সবাই এক জায়গায় হতে পারত না?

আর এদিকে পুলিশ পাহারায় সব সম্পন্ন করার মানে কি? প্রতিবাদকারীদের রাস্তায় দাড়াতে দেয়া হয় না। আমাদের একজন চিরশত্রুকে এত নিরাপত্তা, এত প্রটোকল দেয়া কেন? আর লাশ বয়ে নিয়ে গেল নির্বিঘ্নভাবে তার পরিবার, কেউ কোন বাধার সম্মুখীন হল না। পুলিশের ভয়েই কিনা কে জানে, শুধু দূরে দাঁড়িয়ে আস্ফালনই করে গেল সবাই, অদ্ভূত সব কর্মসূচীর আয়োজন করল। কাজের কাজ কিছুই হল।

এর ভিতর খবর শোনা গেল কে নাকি গো আযমের কফিনে জুতা ছুড়ে মেরেছে। যাক, তাও একটা স্বস্তি মেলে আর কি, কেউ না কেউ একেবারে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কিছু করার সাহস দেখিয়েছে। কিন্তু সেটাও যেন শুরু হয়েই শেষ। কারো কোন কিছু আসলো গেল না। হয়তো আশি-নব্বই এর দশক হলে এটা খুব বড় ধরণের খবর হত, এখন সব গা সওয়া হয়ে গেছে। একজন তো অনলাইনে বলেই দিয়েছে, - কত মন্ত্রী-মিনিস্টারই তো জুতার বাড়ি খাইল, তাতে কি হইছে?

অনলাইনে (এবং অফলাইনেও) আজকের তরুন-যুবকদের অবস্থা দেখে আমি বড় হতাশ হতে হয়। এত এত প্রমাণ হাজির করার পরও তারা একজন প্রতিষ্ঠিত রাজাকারকে নির্দোষ প্রমাণে ব্যস্ত। যার জানাজায় এত এত লোক হয় সে নাকি "খ্রাপ" হতে পারে না! কেউ বা বঙ্গবন্ধুকে গণহত্যাকারী বানিয়ে দেয়, আর গো আযম তার তুলনায় নিস্পাপ বলে প্রচার করে। এসব দেখে অনেক মৃত রাজাকারের জন্য বড় করুণা হয়। আর কয়েক বছর বেঁচে থাকলেই তো তারা একেজন নিস্পাপ এমনকি "মুক্তিযোদ্ধা" হয়েও বসে থাকত!!
২৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×