somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাটির নিচে শেলগুলো -- একটা সম্পূর্ণ গাজাখুরী গল্প

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

**এটা আসলে একটা গল্পের খসরা মত। গল্পটার একটা রূপকধর্মী অর্থ আছে। দেখি কেউ ধরতে পারেন কি না।**


হঠাৎ বিকটশব্দে বিস্ফোরণ হতেই রহমান সাহেবের চারতলা বাড়িটা ভেঙ্গে পরে গেল, সাথে সাথে পথচারী আর রিক্সাওয়ালা সেই ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পরে গেল, ইলেক্ট্রিক তারের খাম্বা উড়ে গেল, পানির লাইন ফেটে গেল, মজনু ভাইয়ের হোটেলের পুরী আর পিয়াজু রাস্তায় ছড়িয়ে গেল, প্রতিবেশির বাড়িটাও অক্ষত রইল না, শুধু পুরু দেয়াল আর টাইল্‌সের কারণে মসজিদটা রক্ষা পেল, আরমানিয়া স্কুলটাও বিশাল মাঠের বরাতে বেচে গেল তবে প্রশাসনিক ভবনটা গুড়িয়ে গেছে, ধোয়ায় প্রায় আধমাইল এলাকা ছেয়ে গেল; এই অবসরে পুলিশ, ফায়ার বিগ্রড, বোম্ব স্কোয়াড আসার আগেই সাংবাদিকরা লাইভ টেলিকাস্টের প্রস্তুতি নিতে শুরু করল।

এতসব বিশৃংখলার মধ্যে জমির চাচা'র গুড়ো গুড়ো হয়ে পরা টংটার কথা কারো মনে থাকল না, শুধু কিছু পোলাপান ধ্বংসস্তুপের ভিতর থেকে চাচাকে বের করার চেষ্টা কএর যাচ্ছে। জমির চাচার টং-এ প্রতিদিন আড্ডা জমে, বিশেষ করে বিকালের দিকে। চা-সিগারেটের সাথে সাথে চলে সমাজ, রাজনীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা-বার্তা, আর সুযোগ পেলেই চাচা তার যুদ্ধের সময়কার গল্প বলত।

কোন এক বর্ষণমুখর দিনে এই এলাকায় মিলিটারী এসে আরমানিয়া স্কুলের কুড়েঘরটা দখল কএর নেয়। হ্যা, সেই সময় কুড়েই ছিল বটে। আর আসেপাশে এত গিঞ্জি বস্তি ছিল নাকি? প্রায় বুজে যাওয়া নর্দমাটা এত নোংরা ছিল? আর বড় ব্যাংকটার ওখানে ছিল ধানখেত।

এমনি দিনে এক রাতে কিছু চ্যাংরা ছেলেপিলে চাচার বাড়িতে এসে ডুকে। চাচা ওদের পেয়ে খুশিই হয় আর ঘরের ভিতর গাদাগাদি করে লুকিয়ে রাখে। ঠিক তার পরের রাতেই চ্যাংরাগুলো অস্ত্র নিয়ে স্কুলে হামলা চালায়, শেষ মিলিটারীটাও মারা পরে সেদিন। গল্প এই পর্যন্তই।

কিন্তু জমির চাচাও যেটার হদিছ জানে না, তা হল স্কুলের কাছেই ছোট বাংকারের ভিতর ছিল লুকিয়ে রাখা কয়েকটি শেল, মিলিটারীদের রসদ। এবং সেদিনের হামলায় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে শেষ মিলিটারীটা মারা যাওয়ার সাথে সাথে সেই বাংকারের অস্তিত্বের শেষ সাক্ষীটাও শেষ হয়ে যায়। ক্রমে ভারী বর্ষণে বাংকারের গর্ত বুজে যায় আর শেলগুলোর উপর মাটির চাপ পরে।

এরপর একদিন ব্যবসায়ী রহমান সাহেব ঠিক সেইখানেই তার দোতলা বাড়িটা বানায়। এতে শেলের উপর চাপ আরো বাড়তে থাকে। রহমান সাহেবের ছেলেটাও দিন দিন বড় হতে থাকে, এবং বিয়েও করে ফেলে। তখন বাড়িটাকে তেতলা করা হয়। পরে অধিক লাভের আশায় কিছু ভাড়াটিয়া বাগানোর জন্য বাড়িটা চারতলা হয়। ফলে চাপ দ্বিগুণ হয়। নতুন ভাড়াটিয়ায় বাড়িটায় লোকসমাগম বাড়ে। এদিকে রহমান সাহেবের নাতিটাও দিন দিন বড় আর ভারী হয়। তারপরই একদিন ঘটনাটা ঘটে, কারণ মাটির নিচে সিক্ততার কারণে খোলসে জং ধরলেও শেলগুলোর বিস্ফোরক প্রায় অক্ষতই ছিল।

তো সেদিন রহমান সাহেব টিভি দেখতে দেখতে পুত্রবধুকে বলছিল, - "দেখছো বউমা, রাজনীতি দেশটারে এক্কেবারে খাইয়া ফালাইলো!"

আর এ সময়ে নাতিটা ছুটে এসে জানায়, - "দাদু, আব্বা ফ্রিজ আনছে।"

রহমান সাহেবের ছেলে তখন আরো লোক নিয়ে ধরাধরি করে ভারী ফ্রিজটা ঘরে ডোকায়। তখনই, ঠিক তখনই মাটির তলে শেলগুলো বিকটশব্দে বিস্ফোরিত হয়, আর ধোয়ায় প্রায় আধ-কিলোমিটার এলাকা ছেয়ে যায়....
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×